Afghanistan-Pakistan Clash

কন্দহরে পাকিস্তানি বিমানহানার পরেই সুর নরম আফগান তালিবানের, ৪৮ ঘণ্টার জন্য স‌ংঘর্ষবিরতিতে সম্মত দু’পক্ষ

সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, বুধবার দুপুরে আফগানিস্তানের কন্দহরে হামলা চালায় পাক যুদ্ধবিমান। প্রকাশিত কয়েকটি খবরে দাবি, তালিবান সেনার ঠিকানা নিশানা করেই হামলা হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৫ ১৯:০৯
Share:

কন্দহরে পাক বিমানহানা। ছবি: রয়টার্স।

সীমান্ত সংঘর্ষের মধ্যেই আবার আফগানিস্তানে বিমানহানা চালাল পাকিস্তানি বায়ুসেনা। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, বুধবার দুপুরে আফগানিস্তানের কন্দহরে হামলা চালায় পাক যুদ্ধবিমান। প্রকাশিত কয়েকটি খবরে দাবি, তালিবান সেনার ঠিকানা নিশানা করেই হামলা হয়েছে। ঘটনাচক্রে, তার পরেই বুধবার সন্ধ্যায় কাবুল এবং ইসলামাবাদ দু’তরফই ৪৮ ঘণ্টার সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করেছে।

Advertisement

আফগানিস্তানের তালিবান সরকার জানিয়েছে, সে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর কন্দহরের অসামরিক জনবসতি এলাকায় বুধবার আকাশপথে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। এর ফলে অন্তত ৫০ জন সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছেন তালিবানের একটি সূত্রের দাবি। এর আগে গত ৯ অক্টোবর আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান’ বা টিটিপি (পাক সরকার এবং সেনা যাদের ‘ফিতনা আল খোয়ারিজ়’ বলে চিহ্নিত করে)-র ডেরায় বিমানহানা চালিয়েছিল পাকিস্তান বায়ুসেনা। ১০ অক্টোবর সীমান্ত লাগোয়া পকতিকা প্রদেশের মারঘি এলাকায় একটি বাজারে বিমানহানার কথা জানিয়েছিলেন পাক ফৌজের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ দফতরের (আইএসপিআর) প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধরি। ঘটনাচক্রে, আফগান সরকারের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির ভারত সফর শুরুর দিনেই হামলা হয়েছিল কাবুলে। তার পর থেকে দফায় দফায় সীমান্ত সংঘর্ষ চলছে।

বুধবার সকালে তালিবান সরকার দাবি করে, কান্দাহারের স্পিন বলডাক জেলায় হামলা শুরু করেছে পাকিস্তানি বাহিনী। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানাচ্ছে, ওই হামলায় বেশ কয়েক জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করে আফগানিস্তান। জখম হন শতাধিক মানুষ। পাকিস্তানের ওই হামলার পরেই তালিবান বাহিনী ‘পাল্টা অভিযান’ চালিয়েছে বলে জানায় আফগানিস্তান। তার পরেই বিমানহানার খবর এল। এরই মধ্যে আফগান তালিবানের অন্তর্বিরোধের ‘খবর’ও প্রকাশিত হয়েছে কয়েকটি পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমে। তাতে দাবি, আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজুদ্দিন হক্কানি প্রকাশ্যে প্রধানমন্ত্রী হাসান আখুন্দ, উপপ্রধানমন্ত্রী আব্দুল গণি বরাদর এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা মহম্মদ ইয়াকুবের নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। ‘হক্কানি নেটওয়ার্ক’-এর নেতা সিরাজুদ্দিন পাক সামরিক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর ঘনিষ্ঠ। অন্য দিকে, ‘ইসলামাবাদ বিরোধী!’ টিটিপির সঙ্গে সখ্য রয়েছে তালিবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা মহম্মদ ওমরের পুত্র ইয়াকুবের।

Advertisement

২০২১-এর ১৫ অগস্ট তালিবান আনুষ্ঠানিক ভাবে কাবুল পুনর্দখল করেছিল। আফগানিস্তানে দ্বিতীয় বার তালিবানি শাসন কায়েম হওয়ার পরেই সে দেশে পাততাড়ি গোটাতে শুরু করে আমেরিকা। প্রাথমিক ভাবে ইসলামাবাদের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল থাকলেও আফগান তালিবান ঔপনিবেশিক জমানার ডুরান্ড লাইনকে ভিত্তি করে সীমানা নির্ধারণের বিরোধিতা করার পরেই সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করেছিল। অন্য দিকে, ক্রমশ নয়াদিল্লির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে শুরু করে আফগানিস্তানের নতুন শাসকদের। এই পরিস্থিতিতে পাক সামরিক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এখন আফগানিস্তানে সক্রিয় সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ইসলামিক স্টেট-খোরাসান (আইএসকে) এবং লশকর-এ-ত্যায়বার মধ্যে সমঝোতা গড়ে তুলে বালোচ বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং টিটিপির মোকাবিলায় সক্রিয় হয়েছে বলে সম্প্রতি প্রকাশিত কয়েকটি গোয়েন্দা রিপোর্টে দাবি। ২০২৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর পকতিকা প্রদেশে প্রথম বিমানহামলা চালিয়েছিল পাকিস্তান বায়ুসেনা। ওই ঘটনায় ৪৬ জন সাধারণ গ্রামবাসী নিহত হয়েছিলেন বলে আফগান সরকারের অভিযোগ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement