Bangladesh Supreme Court Verdict

হাই কোর্টের রায় খারিজ বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টে, সংস্কার হবে সংরক্ষণ ব্যবস্থায়

সংরক্ষণ ব্যবস্থা নিয়ে হাই কোর্টের রায় খারিজ করে দেওয়া হল বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টে। সংরক্ষণ সংস্কার করা হবে। রায় দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২৪ ১৩:৪৫
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

সংরক্ষণ ব্যবস্থা নিয়ে হাই কোর্টের রায় খারিজ করে দেওয়া হল বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টে। দেশের সংরক্ষণ ব্যবস্থার সংস্কার করা হবে। রায় দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

Advertisement

২০১৮ সালে সংরক্ষণ নিয়ে শেখ হাসিনার সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা গত ৫ জুন অবৈধ ঘোষণা করেছিল হাই কোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল সরকার। সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, রবিবার বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দিয়েছে হাই কোর্টের নির্দেশ। অর্থাৎ, এ ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের রায় কিছুটা গিয়েছে হাসিনা সরকারের পক্ষেই।

তবে ২০১৮ সালে হাসিনা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, হুবহু তা বহাল রাখেনি আদালত। হাই কোর্টের রায় বাতিল করা হয়েছে, তবে সংরক্ষণ ব্যবস্থা পুরোপুরি বাতিল করা হয়নি। দেশের সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে মোট সাত শতাংশ সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে পাঁচ শতাংশ সংরক্ষণ থাকবে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য। বাকি দুই শতাংশ থাকবে অন্য শ্রেণির জন্য সংরক্ষিত। ৯৩ শতাংশ নিয়োগই হবে মেধার ভিত্তিতে। আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরতে বলেছে আদালত।

Advertisement

গত কয়েক দিন ধরে সংরক্ষণ সংস্কারের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। ঢাকার রাস্তায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারী ছাত্রদের সংঘর্ষে প্রাণ গিয়েছে বহু মানুষের। সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ১৫১। বাংলাদেশে শুক্রবার রাত থেকে কার্ফু জারি করেছে সরকার। যা এখনও চলছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয়েছে সেনা।

শুনানির পর বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দীন এএফপিকে বলেছেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, হাই কোর্টের রায় বেআইনি ছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য সরকারি চাকরিতে পাঁচ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে। অন্যান্য শ্রেণির জন্য থাকবে আরও দুই শতাংশ সংরক্ষণ।’’

বাংলাদেশে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে মোট ৫৬ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল এবং ৪৪ শতাংশ আসন সাধারণের জন্য নির্ধারিত ছিল। ১৯৭২ সাল থেকে এই নিয়ম চলে আসছিল। ৫৬ শতাংশের মধ্যে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজনদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ, বিভিন্ন জেলার জন্য ১০ শতাংশ, জনজাতিদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ সংরক্ষিত পদ ছিল। ২০১৮ সালে সংরক্ষণ সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ায় প্রধানমন্ত্রী হাসিনা নির্দেশ জারি করে মুক্তিযোদ্ধার স্বজনদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ এবং জেলা খাতে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ বাতিল করে দেন। রাখা হয় শুধু জনজাতিদের ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের ১ শতাংশ সংরক্ষণ। পরে সাত জন মুক্তিযোদ্ধার স্বজন ২০১৮-র সংরক্ষণ বাতিলের নির্দেশনামার বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে ২০২১-এ হাই কোর্টে যান। গত ৫ জুন হাই কোর্ট রায় দেয়, হাসিনা সরকারের নির্দেশ অবৈধ। নির্দেশনামা বাতিলের অর্থ ফের আগের মতো সংরক্ষণ ফিরে আসা। তার প্রতিবাদেই ফের আন্দোলনে নামেন ছাত্ররা। সেই আন্দোলনে গত কয়েক দিন রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল বাংলাদেশ। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর বাংলাদেশে অশান্তি কিছুটা কমবে বলে মনে করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement