People’s Liberation Army

তিব্বতে সামরিক তৎপরতা বাড়াচ্ছে চিন, অত্যাধুনিক রণসাজে সজ্জিত হচ্ছে ভারতও

সেনা গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, সামরিক এবং অসামরিক প্রকল্প মিশিয়ে এক নতুন ধারার পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরু করেছে চিন। ভারত-চিন সীমান্ত থেকে ৭৫০ কিলোমিটার দূরে শিনিং-এ একটি বিশাল বিমানবন্দর তৈরি করছে চিন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৯:১৫
Share:

অসমের তেজপুরে মহড়ায় সুখোই বিমান। ফাইল চিত্র।

ভারত-চিন সীমান্তের ওপারে তিব্বত স্বশাসিত অঞ্চলে নজিরবিহীন সামরিক তৎপরতা শুরু করেছে চিন। রাস্তা, ক্ষেপণাস্ত্র, বিমান বন্দর, সমস্ত ক্ষেত্রেই অত্যন্ত দ্রুত গতিতে চলছে পরিকাঠামো বানানোর কাজ। চিনের এই সামরিক তৎপরতা নজরে আসার পর পাল্টা প্রতিরোধী ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে ভারতও। ঢেলে সাজানো হচ্ছে সীমান্তে ভারতের প্রতিরক্ষা পরিকাঠামো। এমনটাই জানা যাচ্ছে সংবাদ মাধ্যম সূত্রে।

Advertisement

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বায়ু সেনা আধিকারিক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘‘ভূটানের ডোকলামে ভারত ও চিনের মধ্যে সীমান্ত সমস্যাশুরু হওয়ার পর থেকেই চিনের তরফে বাড়ানো হয়েছে সামরিক তৎপরতা। যার প্রেক্ষিতেএই এলাকায় পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা (আকাশ) বসানোর পথে ভারত। এত দিন এই এলাকায় ‘ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা’ ছিল না ভারতের।’’

সেনা গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, সামরিক এবং অসামরিক প্রকল্প মিশিয়ে এক নতুন ধারার পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরু করেছে চিন। ভারত-চিন সীমান্ত থেকে ৭৫০ কিলোমিটার দূরে শিনিং-এ একটি বিশাল বিমানবন্দর তৈরি করছে চিন। পাশাপাশি তিব্বতের লুনৎসে, টিংরি এবং পুরাং-এ বানানো হচ্ছে তিনটি ছোট বিমানবন্দর। এই তিনটি বিমানবন্দরই ভারত সীমান্তের খুব কাছে। একই সঙ্গে গোঙ্গার বিমানবন্দরের পরিকাঠামোর খোলনলচেও বদলে ফেলছে চিন, যা সম্পূর্ণ হয়ে যাবে ২০২০ সালের মধ্যেই। এই কাজ শেষ হলে বছরে ৯০ লক্ষ পর্যটক বিমানে ওঠা নামা করতে পারবেন এই অঞ্চলে। পাশাপাশি ৮০,০০০ টন পণ্য পরিবহণ করা সম্ভব এই বিমান বন্দরে। এটি অসামরিক প্রকল্প হলেও প্রয়োজনে এই বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারবে পিপলস লিবারেশন আর্মি বা চিন সেনা। এ ছাড়া গত সেপ্টেম্বরেই তিব্বতে খুলে গিয়েছে রিকাজে-শিগাজে-জিনান বিমান চলাচলের রুট। সব মিলিয়ে গত কয়েক বছরে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে পরিকাঠামো বদলাচ্ছে বেজিং।

Advertisement

তিব্বতে রেলপথ বানাচ্ছে চিন। ফাইল চিত্র।

আরও পড়ুন: চিন-পাকিস্তান গোপন আঁতাঁত! রাস্তা বানানোর আড়ালে লুকিয়ে যুদ্ধবিমানের কারখানা?

পরিস্থিতি বুঝে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে নয়াদিল্লিও। উত্তর-পূর্ব ভারতে আরও ছ’টি ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা বসানোর কথা ভাবছে ভারত। এ ছাড়া ২০২০ সালের মধ্যে নিয়ে যাওয়া হবে চিনুক এবং অ্যাপাচে হেলিকপ্টারের একটি করে স্কোয়াড্রন। সাধারণত, একটি স্কোয়াড্রনে ১২ থেকে ২৪টি বিমান বা হেলিকপ্টার থাকে । রাশিয়ার কাছ থেকে অত্যাধুনিক এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা কেনা হলে তারও সদ্ব্যবহার করা হবে উত্তর-পূর্ব ভারতের কথা মাথায় রেখেই। সেই কাজ শেষ করা হবে ২০২১ সালের মধ্যে। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে এমনটাই।

আরও পড়ুন: ট্রাম্পের সঙ্গে ঝামেলা, পদত্যাগ করলেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব জেমস ম্যাটিস

এ ছাড়া ফ্রান্সের কাছ থেকে কেনা রাফাল যুদ্ধবিমানের একটি স্কোয়াড্রনও মোতায়েন করা হবে উত্তর-পূর্ব ভারতেই। অর্থাৎ, চিনের তৎপরতার কথা ভেবে সীমান্ত সুরক্ষিত রাখতে এখন সক্রিয়তা বাড়াচ্ছে ভারত। বিভিন্ন সূত্রে থেকে জানা যাচ্ছে, এ সবের পাশাপাশি অত্যাধুনিক সুখোই বিমানের একটি স্কোয়াড্রনও বসানোর কথা ভাবছে ভারতীয় বায়ুসেনা।

(আমেরিকা থেকে চিন, ব্রিকস থেকে সার্ক- সব গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের আন্তর্জাতিক বিভাগে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন