Xi Jinping Retirement Speculation

শি জিনপিং কি ক্ষমতার মুঠো আলগা করছেন? করলে কেন? চিনা প্রেসিডেন্টের ৩ সিদ্ধান্তে ‘সরে যাওয়ার’ জল্পনাও শুরু

২০১২ সালে দলের এবং ২০১৩ সালে রাষ্ট্রের সর্বময় ক্ষমতা হাতে পাওয়ার পর থেকেই নিজের কর্তৃত্ব নিরঙ্কুশ করতে সক্রিয় থেকেছেন জিনপিং। মাও জে দংয়ের পর তিনিই চিনের সর্বময় কর্তৃত্বসম্পন্ন শাসক হয়ে উঠেছেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৫ ১৭:৪৪
Share:

চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। —ফাইল চিত্র।

তিনি আমৃত্যু প্রেসিডেন্ট থাকতে পারেন। সেই পথ আগেই প্রশস্ত হয়েছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে কি ক্ষমতার মুঠো আলগা করছেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং? তাঁর সাম্প্রতিক কিছু সিদ্ধান্তে সেই জল্পনা জোরালো হয়েছে। আলোচনা শুরু হয়েছে যে, চিনা প্রেসিডেন্ট কি ক্ষমতা থেকে এ বার সরে দাঁড়াতে চাইছেন?

Advertisement

২০১২ সালে দলের এবং ২০১৩ সালে রাষ্ট্রের সর্বময় ক্ষমতা হাতে পাওয়ার পর থেকেই নিজের কর্তৃত্ব নিরঙ্কুশ করতে সক্রিয় থেকেছেন জিনপিং। মাও জে দংয়ের পর তিনিই চিনের সর্বময় কর্তৃত্বসম্পন্ন শাসক হয়ে উঠেছেন। কিন্তু ক্ষমতাবণ্টনের পথে হাঁটতে শুরু করেছেন জিনপিং। এত জল্পনার সূত্রপাত মূলত প্রেসিডেন্টের এই সিদ্ধান্ত।

সম্প্রতি চিনের সরকারি সংস্থা এবং দলীয় প্রতিষ্ঠানগুলিকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া শুরু করেছেন জিনপিং। কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত নিতেও বলা হয়েছে। যে প্রেসিডেন্ট দল, সরকার এবং সেনার ক্ষমতা নিজের হাতে কুক্ষিগত করে রেখেছেন, তাঁর এই ক্ষমতাবণ্টনের সিদ্ধান্তকে ‘নজিরবিহীন’ বলে দাবি করেছেন চিনের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।

Advertisement

শুধু দলীয় প্রতিষ্ঠানগুলিকে সিদ্ধান্ত নিতে বলাই নয়, তাদের জন্য কিছু নতুন নিয়মও জারি হয়েছে। বলা হয়েছে, ওই প্রতিষ্ঠানগুলিতে কিছু অভ্যন্তরীণ সংস্কার হবে। গোটাটাই নতুন করে গড়ে তোলা হবে। পরবর্তী কালে তারা কী ভাবে কাজ করবে, তা-ও বলে দেওয়া হয়েছে দলের তরফে।

এই দুই সিদ্ধান্ত নিয়ে তো জল্পনা চলছিলই। তার মাঝে ব্রাজ়িলে ব্রিক্‌স সম্মেলনে জিনপিংয়ের না-যাওয়ার সিদ্ধান্তও বাড়তি কৌতূহল তৈরি করেছে বিভিন্ন মহলে। জিনপিংয়ের পরিবর্তে ওই সম্মেলনে গিয়েছেন চিনা প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে প্রতি বার ব্রিক্‌স সম্মেলনে গিয়েছেন জিনপিং। এই প্রথম বার এমনটা হল। অনেকের মত, দলের অন্দরে নিশ্চয়ই এমন কিছু ঘটছে, যা সামলাতে হচ্ছে জিনপিংকে। কেউ কেউ আবার জিনপিংয়ের গুরুত্ব হ্রাসের কথাও বলছেন।

বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত, এই ধরনের সিদ্ধান্ত সাধারণত ক্ষমতাবদলেরই আভাস দেয়। ক্ষমতাবদলের সময় যাতে নতুন করে দলের অন্দরে বিবাদ তৈরি না হয়, তা নিশ্চিত করতেই আগে থেকে দায়িত্ব বণ্টন করা হয়ে থাকতে পারে। ২০২৭ সালে জিনপিংয়ের প্রেসিডেন্ট পদে তৃতীয় দফার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। সেই সময়েই পার্টি কংগ্রেস ডাকা হবে। তার আগে জিনপিংয়ের এই তিন সিদ্ধান্তে তাঁর সরে দাঁড়ানো নিয়ে জল্পনা হওয়াই স্বাভাবিক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের ওই অংশ।

আবার পাল্টা অভিমতও রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, নানা অভ্যন্তরীণ সমস্যায় চাপে রয়েছে জিনপিংয়ের সরকার। আমেরিকার সঙ্গে শুল্কযুদ্ধেরও প্রভাব পড়েছে দেশে। অর্থনীতির গতি শ্লথ হয়েছে। চিনা অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ আবাসন ক্ষেত্রও সম্প্রতি ধসে গিয়েছে। তা ছাড়া অতিমারি কালের কড়াকড়ির ফলে এখনও বহু ব্যবসায়িক সংগঠন ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। যার প্রভাব পড়েছে দেশের অর্থনীতিতে। এই পরিস্থিতিতে জিনপিংয়ের পক্ষে সব দিক একার হাতে সামলানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই ক্ষমতাবণ্টনের পথে হাঁটছেন তিনি।

আর একটি অংশ আবার সমস্ত জল্পনাই উড়িয়ে দিয়েছে। তাঁদের মত, ক্ষমতাবদলও নয়, ক্ষমতার মুঠো আলগা করাও নয়, কিছু ‘বড় বিষয়’ নিয়ে ব্যস্ত জিনপিং। আপাতত সে দিকেই গুরুত্ব দিতে চাইছেন তিনি। সেই কারণে প্রতি দিনের কিছু কাজের দায়িত্ব তিনি ছেড়ে দিতে চাইছেন। এ ছাড়া আর অন্য কোনও কারণ নেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement