—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে জাতীয় সংসদের নির্বাচন এবং জুলাই সনদ নিয়ে গণভোট একই সঙ্গে হবে। আনুষ্ঠানিক ভাবে এ কথা জানিয়ে দিল সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকার। গণভোট আয়োজনে পৃথক একটি অধ্যাদেশ জারিও করা হয়েছে সরকারের তরফে।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে চারটি বিষয়ের ওপর একটি প্রশ্নের ভিত্তিতে হবে ওই গণভোট। গণভোটের ব্যালট জাতীয় নির্বাচনের ব্যালট থেকে আলাদা এবং ভিন্ন রঙের হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্ত হল, গণভোটের ব্যালট পেপার হবে রঙিন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো গণভোটেও প্রবাসী-সহ চার শ্রেণির নাগরিকদের জন্য পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস গত ১৩ নভেম্বর জাতির উদ্দেশে ভাষণে জানিয়েছিলেন, আগামী বছর জাতীয় সংসদের নির্বাচন এবং জুলাই সনদ কার্যকরের উদ্দেশে গণভোট একই সঙ্গে হবে। ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি’ (‘জামাত’ নামেই যা পরিচিত)-র নেতারা দাবি তুলেছিলেন, জাতীয় সংসদের নির্বাচনের আগে গণভোটের আয়োজন করতে হবে বাংলাদেশে! অন্য দিকে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দল বিএনপি-র দাবি ছিল, কোনও অবস্থাতেই জাতীয় সংসদের নির্বাচনের আগে সংস্কার প্রস্তাব সংক্রান্ত গণভোট করানো চলবে না। এই আবহে জাতির উদ্দেশে ভাষণে ইউনূস জানান, রাজনৈতিক দলগুলির মতামত নেওয়ার পরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গণভোটের নির্ঘণ্ট স্থির করার ভার অন্তর্বর্তী সরকারকে দিয়েছিল। তার পরেই এক সঙ্গে দুই ভোটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
মঙ্গলবার বিকেলে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক হয় ঢাকায়। সেখানেই ‘ভিন্ন ব্যালটে’র মাধ্যমে জোড়া নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার পরে জারি হয় অধ্যাদেশ। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৫ অগস্ট ক্ষমতার পালাবদলের বর্ষপূর্তিতে ‘৩৬ জুলাই উদ্যাপন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করেছিলেন। ২৮ দফার ওই ঘোষণাপত্র হল ২০২৪ সালের জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের একটি দলিল, যার মাধ্যমে জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক ভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। মুজিবুর রহমান এবং হাসিনার আমলে ‘আওয়ামী লীগের স্বৈরাচারের’ পাশাপাশি ওই সনদে সমালোচনা করা হয়েছে দুই সেনাশাসক, জিয়াউর রহমান (বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা) এবং হুসেন মহম্মদ এরশাদের (জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা) জমানারও। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের ‘জাতীয় বীর’ হিসেবে ঘোষণার কথাও বলা হয়েছে ওই সনদে।