জরুরি অবস্থা ঘোষণা ট্রাম্পের

খবর এনেছিলেন, ‘‘জরুরি অবস্থা জারি করতে পারেন ট্রাম্প।’’ 

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:৫৩
Share:

বার্তা: হোয়াইট হাউসের রোজ় গার্ডেনে সাংবাদিক বৈঠকে ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার। ছবি: রয়টার্স।

সেনেট থামিয়ে প্রায় নাটকীয় ভাবে গত কাল ‘মঞ্চে’ প্রবেশ করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘দূত’, কংগ্রেসের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা মিচ ম্যাকনেল। খবর এনেছিলেন, ‘‘জরুরি অবস্থা জারি করতে পারেন ট্রাম্প।’’

Advertisement

রাত কাটতেই শুক্রবার সকালে হোয়াইট হাউসের রোজ় গার্ডেনে সাংবাদিকদের সামনে হাজির প্রেসিডেন্ট। ঘোষণা করলেন, মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর তৈরি বাবদ প্রয়োজনীয় অর্থ আদায় করতে জরুরি অবস্থা জারি করছেন তিনি। এর ফলে কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়াই, দেওয়ালের জন্য রফা হওয়া অর্থের পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট তাঁর নিজস্ব ক্ষমতাবলে প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ ৩৬০ কোটি ডলার দেওয়াল তৈরিতে ব্যবহার করতে পারবেন। অন্য খাতের অর্থও নিতে পারেন।

৫৭০ কোটি ডলার চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দর কষাকষি করে শেষমেশ ১৪০ কোটি ডলারে রফা হয়েছিল কংগ্রেসে। প্রেসিডেন্ট তাতে রাজি হয়ে যাওয়ায় সকলে ভেবেছিলেন, দ্বিতীয় দফার শাটডাউন বুঝি এড়ানো গেল। অনুপ্রবেশ রুখতে এই প্রাচীর তোলা নিয়েই ট্রাম্পের সঙ্গে ডেমোক্র্যাটদের মতানৈক্য এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে গত বছরের শেষে টানা ৩৫ দিন ধরে সরকারি শাটডাউন চলে। নতুন করে সেই অচলাবস্থা তৈরি হতে বসেছিল। রফার সময়ে বলা হয়েছিল, ৮৮ কিলোমিটার জুড়ে এখনকার নকশামতো ধাতব পাতের বেড়া তৈরিতে সায় রয়েছে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট চেয়েছিলেন ৩৪৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় কংক্রিটের দেওয়াল। এতে যে ট্রাম্প ঠিক খুশি হননি, সে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। টেক্সাসের এক সভায় বলেছিলেন, ‘‘যে করে হোক, দেওয়ালটা বানাবোই।’’

Advertisement

ঠিক ছিল ওই রফায় মার্কিন কংগ্রেসের সম্মতি মিললে চুক্তিতে সই করবেন প্রেসিডেন্ট। সেই মতো বৃহস্পতিবার ভোট হয়। কংগ্রেসের দু’কক্ষেই বিরাট ব্যবধানে (৮৩-১৬) সীমান্ত নিরাপত্তা বিলটি পাশ হয়। কিন্তু এর মিনিট খানেকের মধ্যে সেনেটে হন্তদন্ত হয়ে ঢোকেন সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা মিচ ম্যাকনেল। জানান, বিলটিকে সমর্থন করেছেন প্রেসিডেন্ট। যদিও প্রাচীর তৈরি বাবদ ওঁর দাবি মতো বাকি অর্থ আদায় করতে জরুরি অবস্থা জারি করতে পারেন তিনি।

আজ সাংবাদিক বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, ‘‘জরুরি অবস্থার ঘোষণাপত্রে সই করতে যাচ্ছি। এর আগেও এমন হয়েছে। ১৯৭৭ সালের পর থেকে অন্য প্রেসিডেন্টরাও এমন সই করেছেন। কোনও সমস্যা হয়নি। কেউ মাথাও ঘামায়নি। মনে হয়, সে বারের ঘটনাগুলো তেমন উত্তেজক ছিল না!’’

ট্রাম্পের পদক্ষেপ ‘ক্ষমতার চূড়ান্ত অপব্যবহার’ ও ‘বেআইনি কার্যক্রম’ বলে আক্রমণ করেন ডেমোক্র্যাটরা। হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি এবং ডেমোক্র্যাট নেতা চার্লস শুমার যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘‘নিজের প্রতিশ্রুতি ভাঙার মরিয়া চেষ্টায় ট্রাম্প। দেওয়াল তৈরির অর্থ মেক্সিকোর কাছ থেকে আদায় করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু ওদের রাজি করাতে পারেননি। এখন করদাতাদের অর্থে এই সব করবেন।’’ পেলোসি বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট হতাশায় ভুগছেন। আইনের পথে যা পারেননি, এখন সেটাই গায়ের জোরে করছেন।’’ কিন্তু ট্রাম্প তাঁর বক্তব্যে অনড়, ‘‘ডেমোক্র্যাটরা মিথ্যে বলছেন। ওরা বলছে, প্রাচীর কাজের নয়। প্রাচীর ১০০ শতাংশ কাজের। ওতে অনুপ্রবেশ, চোরাচালান রোখা যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন