মনোমালিন্য হলে বা বনিবনা না হলে এক সঙ্গে না থাকার সিদ্ধান্ত নেন অনেক দম্পতিই। অনেক ক্ষেত্রে দিতে হয় মোটা খোরপোশও। কোনও দম্পতির ক্ষেত্রে খোরপোশের পরিমাণ এতটাই বেশি যা চমকে দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার টুইট করে ২৫ বছরের সঙ্গী ম্যাকেঞ্জির সঙ্গে বিচ্ছেদের কথা জানান পৃথিবীর ধনীতম ব্যক্তি এবং আমাজনের মালিক জেফ বেজোস। নিজের সদ্য প্রাক্তন স্ত্রীকে আনুমানিক ৬০-৭০ বিলিয়ন ডলার অর্থাত্ ৪.২ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি দিতে হবে জেফকে। খোরপোশ হিসেবে এই পরিমাণ টাকা দেওয়ার নজির নেই পৃথিবীর ইতিহাসে।
নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া না হলে তখনই সমান ভাগে ভাগ করা হয় সম্পত্তি, এমনটাই আইন মার্কিন মুলুকে, কাজেই হিসাব বদলাতেও পারে। তবে বেজোসের আগে রাশিয়ার ধনকুবের ব্যবসায়ী দিমিত্রি রাইবোলোভলেভ ও তাঁর স্ত্রীর বিবাহবিচ্ছেদই ছিল সবচেয়ে মূল্যবান। ২০১৪ সালে বিচ্ছেদের পর তিনি স্ত্রীকে প্রায় ৩.২ লক্ষ কোটি টাকা খোরপোশ দিয়েছিলেন।
আমেরিকার ধনকুবের অ্যালেক ওয়াইল্ডেনস্টেইন জন্মসূত্রে ফরাসি। ১৯৯৯ সালে জোকেলিন ওয়াইল্ডেনস্টেইনের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তিনি প্রায় ৩.৮ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ২.৬৮ লক্ষ কোটি টাকা খোরপোশ দিয়েছিলেন।
রুপার্ট মারডক।আমেরিকার এই মিডিয়া ব্যারন জন্মসূত্রে অস্ট্রেলীয়। স্ত্রী অ্যানা মারডক ম্যানেরসঙ্গে ১৯৯৯ সালে বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাঁর। ৩১ বছরের বিবাহিত সম্পর্কের পর খোরপোশ দিতে হয়েছিল ২.৬ বিলিয়ন ডলার, ১.৮৩ লক্ষ কোটি টাকা।
ব্রিটেনের ব্যবসায়ী বার্নি একলেস্টোনের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী স্লাভিকার বিচ্ছেদ হয়েছিল ২০০৯ সালে। বার্নি স্লাভিকাকে খোরপোশ দিয়েছিলেন প্রায় ১.২ বিলিয়ন ডলার, ৮৮৪৮ কোটি টাকা।
আমেরিকার ধনকুবের ব্যবসায়ী স্টিভ উইনের সঙ্গে স্ত্রী এলাইন উইনের বিচ্ছেদের খোরপোশও ছিল চমকে দেওয়ার মতো। টাকার পরিমাণ প্রকাশ্যে না এলেও মোটামুটি নাকি ৭০৪০ কোটি টাকা খোরপোশ দিতে হয়েছিল স্টিভকে। যৌন হেনস্থার অভিযোগ ছিল স্টিভের বিরুদ্ধে।
ধনকুবের তৈল ব্যবসায়ী হ্যারল্ড হ্যামের সঙ্গে অ্যান আর্নালের বিচ্ছেদ হয়েছিল ২০১২ সাল নাগাদ। অ্যানকে হ্যারল্ড খোরপোশ দিয়েছিলেন প্রায় ৯৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যা ৬৮৮০ কোটি টাকা।
মার্কিন ব্যবসায়ী-শিল্পপতি ক্রেগ ম্যাককাওয়ের সঙ্গে ২০১০ সালে বিচ্ছেদ হয় স্ত্রীর ওয়েন্ডি ম্যাককাওয়ের। ওয়েন্ডি খোরপোশ পেয়েছিলেন প্রায় ৪৬০ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় যা ৩২৪৪ কোটি টাকা।
হ্যারিসন ফোর্ড ও মেলিসা ম্যাথিসনের বিবাহবিচ্ছেদও কম ‘দামি’ ছিল না। অভিনেতা হ্যারিসন তাঁর চিত্রনাট্যকার ও সমাজকর্মী স্ত্রী মেলিসাকে ২০০৪ সালে ১১৮ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ৮৩৩ কোটি টাকা খোরপোশ দিয়েছিলেন। ২০১৫ সালে মেলিসা প্রয়াত হয়েছেন।
হলিউড পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী, অভিনেত্রী অ্যামি ইর্ভিংয়ের বিচ্ছেদ ঘটেছিল ১৯৮৯ সালে। সেই সময় জুরাসিক পার্ক পরিচালক স্পিলবার্গ খোরপোশ দিয়েছিলেন প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ৭০৪ কোটি টাকা।