Russia-Ukraine Conflict

তিন শর্তে ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তিচুক্তিতে রাজি রাশিয়া, কী কী? আলাস্কার বৈঠকে ট্রাম্পকে জানিয়ে এসেছেন পুতিন!

তিন শর্তে যুদ্ধ থামাতে রাজি পুতিন। সেগুলির কথা গত শুক্রবার আলাস্কা-বৈঠকে ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও নাকি জানিয়ে এসেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ক্রেমলিনের খবরাখবর রাখা তিন সূত্রকে উদ্ধৃত করে এমনটাই জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২৫ ২১:৫৭
Share:

(বাঁ দিকে) ডোনাল্ড ট্রাম্প, ভলোদিমির জ়েলেনস্কি এবং ভ্লাদিমির পুতিন। —ফাইল চিত্র।

তিন শর্তে ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তিচুক্তিতে রাজি রাশিয়া। এই তিন শর্তের কথা গত শুক্রবার আলাস্কা-বৈঠকে ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও নাকি জানিয়ে এসেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ক্রেমলিনের খবরাখবর রাখা তিন সূত্রকে উদ্ধৃত করে এমনটাই জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, পুতিন চান ইউক্রেনের পূর্ব দিকে থাকা ডনবাস এলাকা রাশিয়াকে ছেড়ে দিন ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নেটো-য় ইউক্রেন প্রবেশাধিকার পাক, এমনটাও চান না রুশ প্রেসিডেন্ট। তাঁর তিন নম্বর শর্তটি হল, ইউক্রেনে যেন পশ্চিমের কোন দেশ (ইউরোপ বা আমেরিকার)-এর সেনা না-ঢোকে।

Advertisement

সাড়ে তিন বছর ধরে চলা রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে গত শুক্রবার আলাস্কায় বৈঠকে বসেছিলেন পুতিন এবং ট্রাম্প। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার বৈঠক শেষে ট্রাম্পকে পাশে নিয়ে পুতিন জানিয়েছিলেন, ওই বৈঠক হয়তো ইউক্রেনে শান্তিপ্রতিষ্ঠার পথ খুলে দেবে। তবে কী নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে, তা খোলসা করেননি ট্রাম্প বা পুতিন কেউই। কোন শর্তে যুদ্ধ থামবে, তা-ও আনুষ্ঠানিক ভাবে জানানো হয়নি। এই আবহেই সূত্র উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানাল, তিনটি শর্ত পূরণ হলে ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করবে রাশিয়া। শুধু তা-ই নয়, কিছু ‘উপহারও’ দেবে ইউক্রেনকে।

আমেরিকার হিসাব অনুযায়ী, রাশিয়া ডনবাস অঞ্চলের ৮৮ শতাংশ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে। পুতিন চান, ওই অঞ্চল থেকে সেনা সরিয়ে নিক ইউক্রেন। নেটো-য় ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্তিতে বরাবরই নিজেদের নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি হিসাবে দেখে এসেছে রাশিয়া। তা-ই কোনও ভাবেই ওই সামরিক গোষ্ঠীতে জ়েলেনস্কির দেশকে দেখতে চান না পুতিন। শান্তিরক্ষা বাহিনী হিসাবে ইউরোপ কিংবা আমেরিকার সেনা ইউক্রেনে যাক, সেটাও না-পসন্দ মস্কোর। এই তিন শর্ত মানলে ইউক্রেনের দক্ষিণে জ়াপোরিজিয়া এবং খেরসন অঞ্চল ইউক্রেনকে ছেড়ে দেবে রাশিয়া। সূত্র উদ্ধৃত করে এমনটাই জানিয়েছে রয়টার্স। বিভিন্ন তথ্যসূত্র জানাচ্ছে, জ়াপোরিজিয়া এবং খেরসনের ৭৩ শতাংশ এলাকা আপাতত রুশ সেনার অধীনে।

Advertisement

এর আগে একাধিক সূত্র মারফত জানা গিয়েছিল, ট্রাম্পও চান ইউক্রেন ডনবাস অঞ্চল রাশিয়ার হাতে তুলে দিক। তবে গত সোমবার হোয়াইট হাউসে জ়েলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে এই বিষয়টি ট্রাম্প উত্থাপন করেছিলেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। উত্থাপন করলেও তা প্রকাশ্যে আসেনি। দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর চেষ্টা করছেন ট্রাম্প। তবে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর ট্রাম্পের মুখে সংঘর্ষবিরতির পরিবর্তে বার বার শোনা যাচ্ছে শান্তিচুক্তির কথা। বৃহস্পতিবার রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ জানিয়েছেন, জ়েলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে বসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন পুতিন। যদিও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কির বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে মস্কো। প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট হিসাবে জ়েলেনস্কির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও যুদ্ধের কারণে সে দেশে কোনও নির্বাচন হয়নি। তাই ‘অনির্বাচিত’ জ়েলেনস্কির সঙ্গে চুক্তি করলে ইউক্রেনের পরবর্তী রাষ্ট্রপ্রধান তা মানবেন কি না, সেই প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করেছে রাশিয়া। যদিও এ ক্ষেত্রে যুদ্ধ থামাতে পুতিন আদৌ সচেষ্ট কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছে ইউক্রেন এবং ইউরোপের দেশগুলি।

এর আগে একাধিক বার ইউক্রেন জানিয়েছে কোনও এলাকা রাশিয়াকে ছেড়ে দেওয়া হবে না। রয়টার্স-এর এই প্রতিবেদন নিয়ে এখনও অবশ্য প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি জ়েলেনস্কিরা। তবে তাঁরা এর আগে দাবি করেছিলেন, শান্তিচুক্তির জন্য পুতিনের শর্ত আরোপ আসলে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার কৌশল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement