Adolf Hitler

উড়ত যুদ্ধবিমান, ছিল রেল স্টেশন, গোপন এই ‘নেকড়ের ডেরা’ থেকে যুদ্ধ পরিচালনা করতেন হিটলার!

তাঁর দাপটে এক সময় সারা বিশ্ব কাঁপত থর থর করে। জার্মানিতে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কথা বললেই জুটত কঠোর শাস্তি। তাঁর গুপ্তচররা প্রতিবেশী দেশ ও শত্রুপক্ষের সমস্ত গোপন খবর আনতে ছিল ওস্তাদ। অনেকেই তাঁকে দায়ী করেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জন্য। বুঝতে পেরেছেন নিশ্চয়ই কার কথা বলা হচ্ছে!

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৯ ১৪:১২
Share:
০১ ১৪

তাঁর দাপটে এক সময় সারা বিশ্ব কাঁপত থর থর করে। জার্মানিতে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কথা বললেই জুটত কঠোর শাস্তি। তাঁর গুপ্তচররা প্রতিবেশী দেশ ও শত্রুপক্ষের সমস্ত গোপন খবর আনতে ছিল ওস্তাদ। অনেকেই তাঁকে দায়ী করেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জন্য। বুঝতে পেরেছেন নিশ্চয়ই কার কথা বলা হচ্ছে!

০২ ১৪

অ্যাডল্ফ হিটলার বিখ্যাত ছিলেন তাঁর কঠোর শাসন ব্যবস্থা ও ক্রুর ব্যবহারের জন্য। ১৯৪১ সালে ‘অপারেশন বারবোসা’ নামে সোভিয়েত ইউনিয়ন দখলের জন্য আক্রমণ চালান তিনি। সেই সময় তিনি একটি গোপন ঘাঁটি তৈরি করেন পোলান্ডে। লোকচক্ষুর আড়ালে গিয়ে শ্রোকো-র গভীর জঙ্গলে একটি হৃদের ধারে তৈরি করেন আস্তানা।

Advertisement
০৩ ১৪

উলভ’স লেয়ার বা নেকড়ের ডেরা নামে পরিচিত এই ঘাঁটিতে সাধারণ মানুষ ঘুরতে যান প্রতি বছরই। দর্শকদের আগ্রহ দেখে এ বার এই বিশাল অঞ্চলকে একটি থিম পার্কে পরিণত করার পরিকল্পনা করছে পোলিশ সরকার। পার্কের থিম হবে ‘নাজি সময়কাল ও হিটলার’।

০৪ ১৪

বিশ্বযুদ্ধের সময় এখানেই তিনি ছিলেন ৮৫০ দিন। গোপন ঘাঁটিতে হামলার যাবতীয় পরিকল্পনা হত এখান থেকেই। ৬১৮ একরের জমির উপর অবস্থিত এই গোপন ঘাঁটিতে ছিল শ’দুয়েক বাড়ি, দু’টি সামরিক বিমানঘাঁটি এবং একটি রেলওয়ে স্টেশন। ঘাঁটি সুরক্ষিত রাখার জন্য ওই অঞ্চলের চারপাশে পোঁতা ছিল ল্যান্ডমাইন, যুদ্ধবিমান গুলি করে নামানোর জন্যও প্রস্তুত থাকত বাহিনী।

০৫ ১৪

এই সদর দফতরে বসেই হিটলার তাঁর শীর্ষ অনুচরদের সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেন সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণ ও ইউরোপ থেকে ইহুদিদের নির্মূল করার। তাঁর সঙ্গে এখানে দেখা করত আসতেন বেনিতো মুসোলিনির মতো ব্যক্তিরাও। ১৯৯৪ সালে তাঁরই এক সহচর হিটলারকে হত্যার চেষ্টা করেন এখানেই।

০৬ ১৪

ক্লস ভন নামের এক সেনা ব্রিফকেসে লুকিয়ে বোমা আনেন হিটলারকে মারার জন্য। বিশাল বড় ওক টেবিলের পিছনে লুকিয়ে পড়ায় সে যাত্রায় প্রাণে বেঁচে যান হিটলার। মারা যান চার জন, যার মধ্যে তিন জনই ছিলেন নাজি বাহিনীর অফিসার। বোমায় আহত হন কুড়ি জন।

০৭ ১৪

১৯৪৫ সালে সোভিয়েতের ‘রেড আর্মি’ এই ঘাঁটির দিকে অগ্রসর হলে হিটলার বাহিনী নিজেরাই একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এই ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। হিটলারের এই ভয়ঙ্কর ঘাঁটিই এখনও হাজার হাজার দর্শককে টেনে আনে এই জায়গায়। আজও ভাঙাচোরা বাড়িগুলি দেখার জন্য ভিড় জমান দর্শকরা।

০৮ ১৪

আজও হিটলারের তৈরি ঘাঁটিতে বেশ কিছু বাড়ি প্রায় অক্ষতই রয়ে গিয়েছে। ৮ মিটার পুরু দেওয়াল বহু বোমার আঘাত সহ্য করে আজও দাঁড়িয়ে আছে। যে বাড়িতে হিটলারের উপর আক্রমণ হয়েছিল, সেই বাড়িটির কেবল মেঝেই রয়েছে। অধিকাংশ জায়গাই জঙ্গল গ্রাস করে নিয়েছে। চলার পথের মাঝে কোথাও কোথাও লোহার রডও বেরিয়ে থাকতে দেখা যায়।

০৯ ১৪

প্রতি বছর প্রায় তিন লক্ষ মানুষ আসেন এই ভয়ঙ্কর ঘাঁটিটি নিজের চোখে একবার দেখার জন্য। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই পোলিশ এবং জার্মান। হিটলারের একনায়কত্ব নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। ঘাঁটি দেখতে আসা দর্শকদের কেউ তাঁর শাসনব্যবস্থাকে ‘আদর্শ’ মনে করেন। পর্যটকদের থেকে যথেষ্ট লাভ হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

১০ ১৪

জঙ্গলের মাঝে অবস্থিত এই গোপন ঘাঁটিতে ঢোকার জন্য দিতে হয় ৪ ডলার প্রবেশ মূল্য। দর্শকদের সুবিধার্থে নতুন করে তৈরির পর এই পার্কে থাকবে অনুসন্ধান কেন্দ্র, গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা ও নতুন প্রবেশপথ। হোটেল ও রেস্টুরেন্ট গড়ার পরিকল্পনাও রয়েছে।

১১ ১৪

৬১৮ একর জমির উপর অবস্থিত এই বিশালাকার অঞ্চলের নানা জায়গায় ছড়িয়ে আছে বিভিন্ন বাড়ি, প্রতিটি বাড়ির রয়েছে আলাদা গুরুত্ব। তাই সমস্ত দর্শনীয় স্থানগুলি যাতে দর্শকরা ঘুরে দেখতে পারেন, তার জন্য একটি ফ্রি অ্যাপ গাইড তৈরি করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

১২ ১৪

নাজি হেডকোয়ার্টারের ইতিহাস সম্পর্কে দর্শকদের অবগত করার জন্য একটি সিনেমা দেখানোর ব্যবস্থাও করা হবে। দর্শকদের দেখার জন্য রাখা থাকবে সেই সময়কালে ব্যবহৃত সেনা পোশাক এবং অস্ত্র-শস্ত্র। বিভিন্ন অভিনেতাদের নাজি পোশাক পরিয়ে ছবি তুলিয়ে এই পার্কের প্রচার চালানোর পরিকল্পনা করে ফেলেছেন অধিকর্তারা।

১৩ ১৪

এই থিম পার্ক নিয়ে অনেকের উৎসাহ থাকলেও অনেকের মতে এটি খুব খারাপ একটি পরিকল্পনা। কারণ হিটলার এখানে বসেই বিভিন্ন মানুষকে নিষ্ঠুর ভাবে মারার পরিকল্পনা করতেন। সেই স্থানটিকে যদি আরও বেশি করে সবার সামনে তুলে ধরা হয়, তা হলে হিটলারের হাতে নিহতদের পরিবারকে অসম্মান করা হবে।

১৪ ১৪

এক পোলিশ ইতিহাসবিদ বলেন, “যুদ্ধের ক্ষত ও দাগ একটি চরম শিক্ষা হিসাবেই সাধারণ মানুষের মনে রাখা উচিত। প্রদর্শনী ইতিহাস বর্ণনা ও প্রাসঙ্গিকতার জন্য ব্যবহার গেলেও তা যেন ইতিহাসকেই ঢাকা না দিয়ে দেয়। এই পার্কের পরিকল্পনা ইতিহাস তুলে ধরার বদলে বাণিজ্যকেই মূল বিষয় বানিয়ে নিয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement