স্বজন হারানোর কান্না। বাগদাদে। ছবি: এ এফ পি।
ইরাকের শিয়া সম্প্রদায়ের উপর ফের হামলা চালাল আইএস। আজ সকালের আলো ফোটার পর পরই ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে রাজধানী বাগদাদের কাছে সাডর শহরের ভিড়ে ঠাসা জামিলা বাজার। ট্রাক বোমা বিস্ফোরণের জেরে সেখানে নিহত হয়েছেন ৬৭ জন। আহতের সংখ্যা দেড়শোরও বেশি।
ইসলামিক স্টেট (আইএস) আজকের এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। নিজেদের টুইটার অ্যাকাউন্টে এই জঙ্গি গোষ্ঠী হুমকি দিয়ে লিখেছে, শিয়া মুসলিমদের উপর আরও বড় আক্রমণ আসতে চলেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, আজ সকালে বাজার খোলার কিছু ক্ষণের মধ্যেই ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। সাম্প্রতিক অতীতে এত বড়সড় বিস্ফোরণ হয়নি বাগদাদে। এত সকালেও বাজারে বেশ ভালই ভিড় ছিল। এমনিতেই প্রতি বৃহস্পতিবার জামিলা বাজারে বড় হাট বসে। বাগদাদ শহর তো বটেই, সপ্তাহান্তের খাবার-দাবার মজুত রাখার জন্য শহরের বাইরে থেকেও প্রচুর লোক এসে ভিড় করেন এই বাজারে। আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
আইএস-ও তাদের বার্তায় জানিয়েছে, ওই বাজারে আজকের দিনে শিয়া মুসলিমদের ভিড় থাকে বলেই হামলার জন্য বিশেষ করে এই দিনটিই তারা বেছেছিল।
বিস্ফোরণে পরে পুলিশ আর অ্যাম্বুল্যান্স আসার আগে স্থানীয় বাসিন্দারাই আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। কেউ কম্বল, কেউ আবার ময়লা তোলার ব্যাগে করেই আহতদের নিয়ে হাসপাতালে ছোটেন। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৬৭। আহত কমপক্ষে ১৫২। তবে নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন।
পুলিশ জানিয়েছে, বিস্ফোরক বোঝাই একটি ট্রাকের মাধ্যমে আজ হামলা চালিয়েছে আইএস। ব্যস্ত সময় জিনিসপত্র আনা নেওয়ার জন্য প্রচুর ট্রাক ওই বাজারে এমনিতেই আসে। ফলে সেই ভিড়ে আলাদা করে বিস্ফোরক ভর্তি ট্রাককে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
হাসান হামিদ নামে এক মিনিবাস চালক সেই সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন। আপাতত জখম হামিদের চিকিৎসা চলছে বাগদাদের এক হাসপাতালে। সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে জেরে প্রায় ১০ মিটার দূরে গিয়ে ছিটকে পড়ে তাঁর গাড়ি। ‘‘চোখের সামনে গাড়িগুলোকে উড়ে যেতে দেখলাম। উড়ে গিয়েছে দোকানগুলোর ছাদও। আমার জীবনে এত বড় বিস্ফোরণ কখনও দেখিনি,’’ বললেন তিন সন্তানের জনক, বছর সাইঁত্রিশের হামিদ।