বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর পুরো গাজ়া দখলের প্রস্তাবে সম্মতি দিল ইজ়রায়েলের মন্ত্রিসভা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
গোটা গাজ়া দখল করা প্রস্তাব দিয়েছিলেন ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। সেই প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে ইজ়রায়েলের মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিটিতে! টানা ১০ ঘণ্টা বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে বলে শুক্রবার ভোরে জানিয়েছে নেতানিয়াহুর কার্যালয়।
নেতানিয়াহুর গাজ়া দখলের ইচ্ছা অনেক দিনের। অতীতে বার বার প্রকাশ্যেই তিনি তাঁর ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার ইজ়রায়েলের মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিটি বৈঠকে বসেছিল। তবে তার আগে নেতানিয়াহু জানান, ইজ়রায়েল গাজ়ার পুরো ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। গাজ়া দখল করে তা হামাস বিরোধী আরব বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান নেতানিয়াহু।
প্যালেস্টাইনিদের বাসভূমি গাজ়া ভূখণ্ডের ৮৫ শতাংশ জমি ২২ মাসের সামরিক অভিযানে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে ইহুদি রাষ্ট্র ইজ়রায়েল। গত মাসে এমনই জানিয়েছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ। কিন্তু বাকি অংশ দখল করতে চান নেতানিয়াহু। যদিও ইজ়রায়েল সেনার (আইডিএফ) চিফ অফ স্টাফ জানান, যে অংশ এখনও দখলে নেই, সেখানেই পণবন্দিদের লুকিয়ে রাখতে পারে প্যালেস্টাইনপন্থী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। তাই হঠকারিতায় বিপদ ডেকে আনতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করে ইজ়রায়েলি সেনা। তবে নেতানিয়াহু কড়া সুরে সেই দাবির বিরোধিতা করেন। তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, গোটা গাজ়া দখল নিতেই হবে।
উল্লেখ্য, পণবন্দি মুক্তি নিয়ে আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পরে মার্চের গোড়ায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইজ়রায়েলি ফৌজ গাজ়ায় হামাস বিরোধী অভিযান শুরু করেছিল। পরে হামাস ইজ়রায়েলি পণবন্দিদের ফেরাতে রাজি হলেও ইজ়রায়েলের আক্রমণ থামেনি। মার্চ মাস থেকে গাজ়া অবরোধ করে রেখেছে ইজ়রায়েলি সেনা। ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না ত্রাণ বা বাণিজ্যিক পণ্য সরবরাহকারী ট্রাক। তার জেরে তীব্র খাদ্যসঙ্কটের মুখোমুখি গাজ়াবাসী। হাজার হাজার শিশু অপুষ্টির কারণে হাসপাতালে ভর্তি। অনাহারে মৃতের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। গাজ়া অবরোধের সিদ্ধান্তে নিন্দার মুখে পড়তে হয় ইজ়রায়েলি প্রশাসনকে। সমালোচনার মুখে পড়ে গাজ়ায় ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু অভিযোগ, গাজ়ায় যে পরিমাণ ত্রাণ ঢুকছে তা যথেষ্ট নয়।
খাবার ও প্রয়োজনীয় ত্রাণের জন্য গাজ়াবাসীর ভরসা ত্রাণশিবির। গাজ়ায় পরিচালিত ইজ়রায়েল-সমর্থিত ত্রাণ বিতরণকারী সংগঠন গাজ়া হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) নিয়েও প্রশ্নের অন্ত নেই। তাদের ত্রাণশিবিরে খাবার আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন, এমন মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। তবে তার পরেও সামান্য খাবারের জন্য প্রাণ হাতে নিয়ে ত্রাণশিবিরে ভিড় করছেন প্যালেস্টাইনিরা।