Donald Trump-Vladimir Putin Meet

আমেরিকার ৩, রাশিয়ার ৩, আলাস্কা বৈঠকে ‘থ্রি-অন-থ্রি ফরম্যাট’ নিলেন ট্রাম্প-পুতিন! কী কী হল, জানাল ক্রেমলিন

‘জয়েন্ট বেস এলমেনডর্ফ-রিচার্ডসন’-এর অধিবেশনকক্ষে নয়, ট্রাম্প-পুতিনের আলোচনা রানওয়েতে দাঁড়ানো মার্কিন প্রেসিডেন্টের ক্যাডিলাক লিম্যুজ়িনে সওয়ার হওয়ার পরেই শুরু হয়েছিল বলে মস্কোর দাবি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০২৫ ১৫:৩২
Share:

(বাঁদিকে) ভ্লাদিমির পুতিন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডানদিকে)। ছবি: রয়টার্স।

আলাস্কার অ্যাঙ্কোরেজ় শহরের অদূরে মার্কিন সেনাঘাঁটি ‘জয়েন্ট বেস এলমেনডর্ফ-রিচার্ডসন’-এ শুক্রবার গভীর রাতে (ভারতীয় সময়) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকে বসেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দুই রাষ্ট্রনেতার তিন ঘণ্টার বৈঠকে (মধ্যাহ্নভোজের সময়টুকু ধরলে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা) ইউক্রেন যুদ্ধের পাশাপাশি এসেছে সমসাময়িক আরও কয়েকটি প্রসঙ্গ। শনিবার রাশিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা ‘তাস’ সেই তালিকা প্রকাশ করেছে।

Advertisement

‘এলমেনডর্ফ-রিচার্ডসন’-এর অধিবেশনকক্ষে নয়, ট্রাম্প-পুতিনের আলোচনা রানওয়েতে দাঁড়ানো মার্কিন প্রেসিডেন্টের ক্যাডিলাক লিম্যুজ়িনে (সরকারি পরিভাষায় যার নাম ‘দ্য বিস্ট) সওয়ার হওয়ার পরেই শুরু হয়েছিল বলে মস্কোর দাবি। গাড়িতে পাশাপাশি বসেছিলেন তাঁরা দু’জন। সেখানে একান্ত আলাপচারিতাতেই শীর্ষ বৈঠকের রূপরেখার প্রস্তুতি সারা হয়ে গিয়েছিল। ‘থ্রি-অন-থ্রি ফরম্যাট’ অনুসরণ করে মূল আলোচনার পথ মসৃণ হয়েছে বলেই ‘তাস’-কে জানিয়েছে ক্রেমলিন প্রেস সার্ভিস।

মার্কিন সেনাঘাঁটিতে ট্রাম্প-পুতিনের বৈঠকে দুই রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে আরও দু’জন করে শীর্ষ সরকারি আধিকারিক হাজির ছিলেন। কূটনীতির পরিভাষায় একেই ‘থ্রি-অন-থ্রি ফরম্যাট’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। ট্রাম্পের সঙ্গে ছিলেন মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়ো এবং প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। অন্য দিকে, পুতিনের সফরসঙ্গী রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এবং ক্রেমলিনে প্রেসিডেন্টের সহকারী ইউরি উশাকভ। বৈঠকশেষে দুই রাষ্ট্রনেতা যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে যে ঘোষণা করেন, তার রূপরেখা তৈরির বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল চার সহযোগীর।

Advertisement

জল্পনা ছিল, যুদ্ধবিরতির ‘শর্ত’ হিসাবে ‘ভূমি বিনিময়’-এর (ল্যান্ড সোয়াপিং) প্রস্তাব দেওয়া হবে পুতিনের তরফে। কারণ, কয়েক মাস আগেই ক্রেমলিন জানিয়ে দিয়েছিল, ইউক্রেনের মানচিত্র বদলের মাধ্যমেই খুলতে পারে শান্তির পথ। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে ট্রাম্প শীঘ্রই যুদ্ধবিরতি চুক্তি হবে বলে আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘‘যুদ্ধবন্দি বিনিময়ের বিষয়টিও এর অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।’’ অনুল্লিখিত থেকেছে ‘ভূমি বিনিময়’-এর প্রসঙ্গ। অন্য দিকে, ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ শনিবার ট্রাম্প-পুতিন বৈঠককে ‘অত্যন্ত ইতিবাচক’ বলে বর্ণনা করে বলেছেন, ‘‘শান্তি প্রতিষ্ঠার পথ খুঁজে পেতে এই আলোচনা দু’দেশকে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে যেতে সহায়তা করবে।’’

আর পুতিন? মার্কিন প্রেসিডেন্টের ইতিবাচক মনোভাবের প্রশংসা করে তিনি জানিয়েছেন, ২০২২-এর ফেব্রুয়ারিতে যদি হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প থাকতেন, তা হলে যুদ্ধ শুরুর প্রয়োজনই পড়ত না। মাত্র দু’সপ্তাহ আগেই রুশ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভের বিরুদ্ধে ‘পরমাণু হামলার হুমকি’ দেওয়ার অভিযোগ তুলে রাশিয়ার উপকূলের কাছে মার্কিন পরমাণু অস্ত্রবাহী ডুবোজাহাজ মোতায়েনের কথা জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। এই আবহে আলাস্কা বৈঠকের নির্যাস ওয়াশিংটন-মস্কো সম্পর্কের বরফ গলাতে সহায়ক হবে বলেই দাবি করেছে রুশ সরকারি সংবাদ সংস্থা। বস্তুত, পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পরে ট্রাম্প আর্থিক নিষেধাজ্ঞা এবং শুল্ক শিথিলেরও বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আজকের আলোচনার পর আমার মনে হয় না এখনই এই নিয়ে (অতিরিক্ত শুল্ক) ভাবার দরকার আছে। দুই থেকে তিন সপ্তাহের পর এই নিয়ে অবশ্যই চিন্তা করব।’’

শুক্রবারের বৈঠকে যুদ্ধবিরতি বৈঠক নিয়ে চূড়ান্ত সমাধান না হলেও ‘বিপুল অগ্রগতি’ হয়েছে বলে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজ়কে জানিয়েছেন ট্রাম্প। একই দাবি শোনা গিয়েছে ক্রেমলিন থেকেও। সেই সঙ্গে জানানো হয়েছে, পুতিনের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে যুদ্ধবিরতি নিয়ে দ্বিতীয় বৈঠকে যোগ দিতে মস্কোয় আসতে পারেন ট্রাম্প। সেখানে যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি আলোচনায় আসতে পারে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এবং মার্কিন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মতো প্রসঙ্গও। এর আগে ২০২১ সালের ১৬ আগস্ট, জেনিভায় বাইডেনের সঙ্গে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা বৈঠক করেছিলেন পুতিন। সেই ঘটনার চতুর্থ বর্ষপূর্তির ঠিক পরেই হল আলাস্কার বৈঠক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement