সাদা চামড়ার মানুষ দেখলেই মনে একটা আলাদা কৌতূহল হয়। তাঁদের বক্তৃতায় মনে ভরসা জন্মায়। তাঁদের দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলিতে বিশ্বাস করতে ইচ্ছা করে। জানেন কি এই ভাবনা শুধু বহু ভারতীয়ের মধ্যেই নয়, চিনাদের মধ্যেও রয়েছে? এবং তা রয়েছে মারাত্মক ভাবে!
সে কারণেই চিনে সাদা চামড়ার মানুষদের জন্য আলাদা উপার্জনের ব্যবস্থাও গড়ে উঠেছে।
‘হোয়াইট মাঙ্কি জব’। কাজটিকে এমন অদ্ভুত নামে ডাকা হয় মূলত ব্যঙ্গ করেই। সাদা চামড়ার বিদেশিদের সেখানে হোয়াইট মাঙ্কি অর্থাৎ সাদা বাঁদরের সঙ্গে তুলনা করা হয়। পোষ মানা বাঁদরেরা যেমন প্রভুর কথা মতো কাজ করে থাকে এ ক্ষেত্রেও তাই হয়।
কী করতে হয়? কাজ বলতে কখনও কোনও পার্টিতে যাওয়া, কখনও কোনও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ফিতে কাটা, তো কখনও চিনের খাবার খেয়ে প্রশংসা করা কিংবা চিনা ভাষা না বোঝা সত্ত্বেও চিনের কোনও ব্যবসায়ীর সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানানো।
চিনে এই ধরনের কাজ নাকি আকছার দেখা যায়। এর জন্য মোটা টাকাও দেওয়া হয়। সঙ্গে থাকে প্রচুর লোভনীয় উপহার।
বিদেশিরা চিনা দ্রব্যে ভরসা করছেন, চিনের কোনও প্রকল্পের শিলান্যাস করছেন এমন বার্তা গেলে সেই জিনিস বা সেই প্রকল্পের প্রতি শুধু চিনাদেরই নয়, সারা বিশ্বের লোকেদের ভরসা জন্মায়।
চিনের শেয়ার বাজারের রেখাচিত্র উঠতে থাকে। ব্যবসার তুলনামূলক অনেক বেশি লাভ হয় চিনাদের। সে কারণেই নাকি মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে এমন কাজ করা হয় সে দেশে।
এই কাজ পেতে হলে বিশেষ কোনও ডিগ্রির প্রয়োজন নেই। কোনও বিষয় নিয়ে জ্ঞানেরও প্রয়োজন নেই। শুধু সাদা চামড়ার বিদেশি হলেই চলবে।
তবে এটা যে হেতু স্বীকৃত কোনও চাকরি নয় তাই প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা খুবই বেশি থাকে। এ ক্ষেত্রে কাজে যোগদানের কোনও প্রমাণপত্রও দেওয়া হয় না।
এই কাজে কোনও নির্দিষ্ট উপার্জনও নেই। যাঁকে ভাড়া করা হচ্ছে তাঁর এবং মালিকের মধ্যে টাকাপয়সা নিয়ে মৌখিক যা চুক্তি হয়। সে অনুযায়ীই পারিশ্রমিক পান তিনি। এই কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিদের মতে, ন্যূনতম উপার্জন ১০০ ডলার যা ভারতীয় মুদ্রায় ৭ হাজার ২৮৫ টাকা। এ বার ওই ব্যক্তি মালিকের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছেন তার উপর ওঠানামা করে উপার্জন।
মূলত চিনে বসবাস করা সাদা চামড়ার বেকার যুবক-যুবতীদেরই এই কাজে নিয়োগ করা হয়।