চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনাল এবং মংলা বন্দরের কন্টেনার টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘিরে আন্দোলন শুরু হল বাংলাদেশে। মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে অবিলম্বে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাম দলগুলির যৌথমঞ্চ।
সোমবার ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জমায়েত করে আন্দোলনকারীরা মিছিল করে সচিবালয়ের দিকে যেচে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। ফলে উত্তেজনা তৈরি হয়। পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি হয় আন্দোলনকারীদের। বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী বাম মোর্চার বক্তরা অভিযোগ করেন, ডিপি ওয়ার্ল্ড নামে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির যে কোম্পানিকে বন্দর পরিচালনার বরাত দেওয়া হয়েছে, আফ্রিকার দেশ জিবুতিতে তাদের বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশের মাটিতে ডিপি ওয়ার্ল্ড ‘পা রাখার’ সুযোগ পেলে সার্বভৌমত্ব বিঘ্নিত হবে বলেও অভিযোগ করেন বক্তারা। ইউনূস সরকার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না-করলে আগামী ৮ নভেম্বর চট্টগ্রামে প্রতিবাদ সমাবেশ বলা জানানো হয় আন্দোলনকারী মঞ্চের তরফে।
বাংলাদেশের নৌপরিবহণ মন্ত্রকের সচিব মহম্মদ ইউসুফ সম্প্রতি চট্টগ্রাম বন্দরের বেহাল দশার কথা স্বীকার করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘ওই বন্দরে মোট ১৩টি গেট আছে। কিন্তু প্রতি গেটে স্ক্যানিংয়ের যন্ত্র পর্যাপ্ত নেই। মাত্র ছ’টি যন্ত্র আছে। তার মধ্যেও তিন থেকে চারটি স্ক্যানিং যন্ত্র খারাপ হয়ে পড়ে থাকে। নৌসচিবের কথায়, ‘‘এ ভাবে তো বন্দর চলতে পারে না। আমরা বিদেশি অপারেটরদের এই কাজে নিয়োগ করব। ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০ লক্ষের বেশি কন্টেনার ওঠানো-নামানোর চ্যালেঞ্জ আমাদের সামাল দিতে হবে। তাই বিদেশি অপারেটর ছাড়া আর উপায় নেই।’’ বিদেশিদের হাতে বন্দরের দায়িত্ব ছেড়ে দিলে আগামী দিনে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে বলেও দাবি করেন তিনি। প্রসঙ্গত, বন্দর ও লজিস্টিকস কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ড ৭০টির বেশি দেশে পোর্ট, কন্টেনার টার্মিনাল, রেল, ওয়্যারহাউস ও কাস্টমস ব্যবস্থাপনার কাজ করে। বিশ্বের প্রথম সারির বন্দর পরিচালন সংস্থাগুলির তালিকায় তাদের নাম রয়েছে।