Imran Khan

ভারতকে গুগলি দিয়েছেন ইমরান, করতারপুর করিডর নিয়ে নয়াদিল্লিকে কটাক্ষ পাক বিদেশমন্ত্রীর

ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের বয়স নিয়েও করলেন অমর্যাদাকর মন্তব্য। বললেন, ‘‘আমি জানি না সুষমাজির কী হয়েছে, বয়স বাড়ার সঙ্গে উনি আরও লাজুক হয়ে পড়ছেন।’’

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৮ ১৪:২০
Share:

ফের বিতর্কিত মন্তব্য পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশির। ফাইল চিত্র।

করতারপুর করিডরের উদ্বোধনে ভারতকে গুগলি দিয়েছেন ইমরান খানপাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার সম্পর্ক না থাকলেও ভারতের মন্ত্রীরা যে ভাবে এই প্রকল্পের উদ্বোধনে হাজির ছিলেন, সেই প্রসঙ্গ তুলে এনে নয়াদিল্লিকে এভাবেই কটাক্ষ করলেন পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি। এখানেই থেমে থাকেননি কুরেশি। ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের বয়স নিয়েও করলেন অমর্যাদাকর মন্তব্য। বললেন, ‘‘আমি জানি না সুষমাজির কী হয়েছে, বয়স বাড়ার সঙ্গে উনি আরও লাজুক হয়ে পড়ছেন।’’

Advertisement

বুধবারই সার্ক সম্মেলনে যোগ দিতে পাকিস্তানের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করে সুষমা জানিয়েছিলেন, ‘‘আমন্ত্রণ এসেছে, কিন্তু তাতে আমরা সদর্থক সাড়া দিচ্ছি না। ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে মদত দেওয়া বন্ধ না করা পর্যন্ত পাকিস্তানের সঙ্গে কোনও আলোচনা হবে না। আমরা সার্ক সম্মেলনে যোগ দিচ্ছি না।’’ এর পরই করতারপুর করিডর উদ্বোধনের সমস্ত কৃতিত্ব দাবি করে বসল পাকিস্তান। শুধু তাই নয়, এই প্রকল্পের উদ্বোধনে ভারতীয় মন্ত্রীদের উপস্থিতিকেও রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে দিলেন পাক বিদেশমন্ত্রী। ইমরানের গুগলির জন্যই ভারতীয় মন্ত্রীরা পাকিস্তানে হাজির হতে বাধ্য হয়েছেন বলে মন্তব্য করলেন শাহ মেহমুদ কুরেশি। তাঁর কথায়, ‘‘বৃহস্পতিবারই নবনির্বাচিত ইমরান খান সরকারের ১০০ দিন পূর্ণ হয়েছে। তার আগেই করতারপুর করিডরের উদ্বোধন ইমরান খান সরকারের বিরাট সাফল্য।’’

ভারতের গুরদাসপুরে ডেরা বাবা নানক থেকে পাকিস্তানের করতারপুরে দরবার সাহিব পর্যন্ত চার কিলোমিটার ভিসামুক্ত করিডরের শিলান্যাস অনুষ্ঠান ছিল বুধবার। এই পথ দিয়ে যাতায়াত করতে পারবেন শিখ পুণ্যার্থীরা। পাকিস্তানের আমন্ত্রণে অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরসিমরত কৌর বাদল ও হরদীপ সিংহ পুরী। বহু বছর আগে এই প্রকল্পের প্রস্তাব ভারতই দিয়েছিল পাকিস্তানকে। তাই শিলান্যাস অনুষ্ঠানে ভারতীয় মন্ত্রীদের উপস্থিতি অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা। তার সঙ্গে পাক বিদেশমন্ত্রী যে ভাবে রাজনীতিকে জড়িয়ে ফেললেন তাতে হতবাক কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। প্রশ্ন উঠে গেল ভারতের সঙ্গে শান্তির সম্পর্ক তৈরি করতে পাকিস্তান কতটা উৎসাহী তা নিয়েও।

Advertisement

আরও পড়ুন: দাউদ, হাফিজদের দায় নিতে নারাজ প্রধানমন্ত্রী ইমরান

শুধু করতারপুর করিডরের সাফল্যের কৃতিত্ব দাবি করাই নয়, ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে উদ্দেশ্য করেও অমর্যাদাকর মন্তব্য করেছেন কুরেশি। তাঁর কথায়, ‘‘ কী হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছি না। আমি জানি না, বয়সের সঙ্গে সুষমাজি লাজুক হয়ে পড়ছেন কেন?।’’ এই প্রসঙ্গে তিনি দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় ভারতের অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তকেই প্রশ্ন করে বসলেন। পাক বিদেশমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘গত বছর রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভা চলার সময় ভারতীয় বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে আমার বৈঠকের বিষয়টি দু’পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতেই ঠিক করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করে দেয় নয়াদিল্লি। দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শুরু করতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিও দিয়েছিলেন ইমরান খান। কিন্তু সাড়া দেয়নি ভারত। আমাদের দুই দেশের সম্পর্কে জটিলতা আছে, কিন্তু নিজেদের উন্নতির জন্যই আমরা শান্তি চাই।’’

আরও পড়ুন: হাফিজ সইদের খালিস্তানি বন্ধুর সঙ্গে ছবি, পাকিস্তানে গিয়ে এ বারও বিতর্কে সিধু

জম্মু ও কাশ্মীরে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিদের হাতে তিন পুলিশ কর্মীর নিষ্ঠুর ভাবে খুন হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদেই রাষ্ট্রপুঞ্জের বৈঠক বাতিল করেছিল নয়াদিল্লি। শুধু তাই নয়, কাশ্মীরী জঙ্গি বুরহান গনির নামে পাকিস্তানে ডাকটিকিট প্রকাশ করার ঘটনা নিয়েও নিজেদের আপত্তির কথা জানিয়েছিল নয়াদিল্লি। অন্য দিকে মুখে শান্তির কথা বললেও সন্ত্রাসে লাগাম টানার ক্ষেত্রে এখনও কোনও ইতিবাচক সাড়া মেলেনি পাকিস্তানের তরফে। পাকিস্তানের আশ্রয়ে থাকা দাউদ ইব্রাহিম এবং হাফিজ সইদ নিয়েও দায় সেরে ফেলেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী। তার পর শাহ মেহমুদ কুরেশির এই মন্তব্যে নিশ্চিত ভাবেই ভারত-পাক দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শুরু হওয়ার সম্ভাবনা আরও ক্ষীণ হয়ে পড়ল, এমনটাই মনে করছেন কূটনৈতির বিশেষজ্ঞরা।

আরও পড়ুন: পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে ভারতের অংশ দেখাল চিনা সংবাদমাধ্যম

(আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, আন্তর্জাতিক চুক্তি, আন্তর্জাতিক বিরোধ, আন্তর্জাতিক সংঘর্ষ- সব গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের আন্তর্জাতিক বিভাগে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন