নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সভায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। ছবি: রয়টার্স।
পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ইশাক দার দাবি করলেন, তাঁদের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি করতে চাইছে একাধিক মুসলিম দেশ। সৌদি আরবের সঙ্গে সম্প্রতি পাকিস্তান যে প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, তার সঙ্গেই যুক্ত হতে আগ্রহী অন্য দেশগুলি। যদি তা সম্ভব হয়, তবে ‘নেটোর মতো’ একটি আন্তর্জাতিক জোট গড়ে উঠতে পারে পূর্বেও, দাবি করেছেন দার।
শুক্রবার পাকিস্তানের আইনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে গাজ়া প্রসঙ্গে পাক-সৌদি চুক্তির কথা তোলেন উপপ্রধানমন্ত্রী। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজ়ায় শান্তি ফেরাতে যে ২০ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন, তার সঙ্গে পাকিস্তান সহমত হতে পারেনি। সে বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে দার বলেন, ‘‘পাকিস্তানের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তিতে যোগ দিতে অনেক দেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার বৈঠকের সময়েই তারা এ বিষয়ে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। যদি সৌদি-পাক চুক্তিতে আরও দেশ যোগ দেয়, নেটোর মতো একটা জোট তৈরি হতে পারে।’’ আরবীয় এবং অ-আরবীয় মুসলিম দেশ পাকিস্তানের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি চাইছে বলে তাঁর দাবি। নতুন সম্ভাব্য জোটকে দার ‘নতুন নেটো বা পূর্বের নেটো’ বলে উল্লেখ করেন।
পাক উপপ্রধানমন্ত্রীর দাবি, আগামী দিনে ইসলাম দুনিয়ার নেতৃত্ব দেবে পাকিস্তান। সেই আশার কথা বলতে গিয়ে দার বলেন, ‘‘সর্বশক্তিমানের ইচ্ছায় এক দিন পাকিস্তান ৫৭টি মুসলিম দেশের নেতৃত্ব দেবে।’’ এ প্রসঙ্গে পাকিস্তানের পরমাণু শক্তির কথাও উল্লেখ করেন তিনি। জোর দেন সামরিক শক্তির মতোই অর্থনৈতিক শক্তির উন্নয়নে।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের সঙ্গে পাকিস্তান ‘কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি’ স্বাক্ষর করে। তাতে বলা হয়, উভয় দেশ একে অপরের পাশে থাকবে। তৃতীয় কোনও দেশের আগ্রাসনের শিকার হলে তা উভয় দেশের উপর আগ্রাসন হিসাবেই দেখা হবে এবং সেই অনুযায়ী উভয় দেশ পদক্ষেপ করবে। এই চুক্তির প্রসঙ্গে দার আইনসভায় বলেন, ‘‘এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা চুক্তি। হঠকারী ভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’’
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর ৬ মে মধ্যরাতে পাকিস্তানে সেনা অভিযান চালায় ভারত। তার পর চার দিন টানা দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ চলেছে। দার সে প্রসঙ্গ তুলে বলেন, নতুন চুক্তির অধীনে পাকিস্তানের উপর এই ধরনের যে কোনও হামলা সৌদির উপরেও হামলা হিসাবে গণ্য হবে। তবে ইজ়রায়েল কাতারে আক্রমণ চালানোর পরপর এই পাক-সৌদি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। অনেকের মতে, ভারতকে নয়, আসলে পরমাণু শক্তিধর ইজ়রায়েলকে বার্তা দেওয়াই পাকিস্তানের সঙ্গে সৌদির এই চুক্তির উদ্দেশ্য।