নতুন করে ইজ়রায়েলি হামলা শুরু হতেই গাজ়া ছেড়ে পালাচ্ছেন প্যালেস্টাইনিরা। ছবি: রয়টার্স।
গাজ়া ভূখণ্ড নিজেদের দখলে নিয়ে মঙ্গলবার থেকে হামলার তীব্রতা আরও বাড়িয়েছে ইজ়রায়েল। শুধু আকাশপথে নয়, ইজ়রায়েলি সেনার স্থলবাহিনীও ঢুকে পড়েছে গাজ়ার আরও ভিতরে। হুঙ্কার দিয়ে রেখেছে, ‘‘গাজ়া ছাড়ো!’’ গাজ়ায় ক্রমাগত বোমাবর্ষণ এবং গুলি চলছে। মঙ্গলবার ইজ়রায়েলি হামলায় মৃতের সংখ্যা ছিল প্রায় ৮০। বুধবার সেই সংখ্যা আরও বেড়েছে বলেই খবর। গাজ়ার স্থানীয় মেডিক্যাল সূত্রে খবর, নতুন করে ৩০ জনের বেশি গাজ়াবাসীর মৃত্যু হয়েছে।
হামলার কথা স্বীকার করেছে ইজ়রায়েল। সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইজ়রায়েল কাৎজ় বলেছেন, ‘‘পণবন্দিদের মুক্তি এবং হামাসের পরাজয় নিশ্চিত করার জন্য কাজ চলছে। সন্ত্রাসী অবকাঠামোয় আঘাত হানা হচ্ছে। জ্বলছে গাজ়া।’’ গাজ়ায় প্যালেস্টাইনপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের শেষ ঘাঁটি ধ্বংস করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। গাজ়ায় ইজ়রায়েলি হামলায় সাধারণ প্যালেস্টাইনিদের মৃত্যু হচ্ছে বলে বার বার অভিযোগ উঠেছে।
শুধু গাজ়া নয়, ইজ়রায়েলি সেনার নিশানায় ইরান-সমর্থিত হুথি গোষ্ঠী। মঙ্গলবার ইয়েমেনের হোদেদাও বন্দরে হামলা চালিয়েছে ইজ়রায়েলি সেনা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা (ভারতীয় সময়) পর্যন্ত ইয়েমেনে ১২টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার খবর মিলেছে। তবে হামলার আগে ইয়েমেন খালি করার নির্দেশ দিয়েছিল ইজ়রায়েল। তবে বুধবার ইয়েমেনে নতুন করে হামলার খবর মেলেনি।
আন্তর্জাতিক মহল ইজ়রায়েলি হামলার নিন্দা করেছে। নেতানিয়াহুর সরকার আন্তর্জাতিক আইনের পরোয়া করছে না বলেও অভিযোগ উঠেছিল। তবে ইজ়রায়েল ধারাবাহিক ভাবে অভিযান চালিয়ে গিয়েছে গাজ়া ভূখণ্ডে। রাষ্ট্রপুঞ্জ হামলার নিন্দা করে জানিয়েছে, গাজ়ায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইজ়রায়েল।
মঙ্গলবার রাতে (স্থানীয় সময়) বিমান এবং গোলাগুলির শব্দে বার বার কেঁপে উঠেছে গাজ়া শহর। বাসিন্দারা ভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালাতে শুরু করেছেন। কোনও রকমে শেষ সম্বলটুকু বুকে আঁকড়ে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার চেষ্টায় হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে গাজ়ায়। গাজ়াবাসীদের আতঙ্কের ছবি প্রকাশ করে ‘সিএনএন’ জানিয়েছে, গাজ়ায় রাতভর হামলা চলেছে। মায়সার আল আদওয়ান নামে গাজ়ার এক বাসিন্দা সিএনএন-কে বলেন, ‘‘সারা রাত ঘুমাইনি। ভয়, ভয়, সবাই ভয়ে পালাচ্ছেন। আমাদের মাথার উপর বিস্ফোরণ হচ্ছে।’’ শুধু একা মায়সার নয়, গাজ়ার প্রায় সব বাসিন্দার অভিজ্ঞতা একই।