আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ তথা দক্ষিণপন্থী নেতা চার্লি কার্ককে কটাক্ষ করে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করার ‘অপরাধে’ ছ’জন বিদেশির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করল আমেরিকার সরকার। ওই ছ’জনের ভিসা কেড়ে নেওয়া হল রাতারাতি। তাঁদের নিজ নিজ দেশে ফিরতে বাধ্য করা হচ্ছে। মার্কিন প্রশাসনের কোপ পড়েছে ছ’টি পৃথক দেশের নাগরিকের উপর।
ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ চার্লিকে গত সেপ্টেম্বরে প্রকাশ্য জনসভায় গুলি করে খুন করা হয়েছে। তাঁর মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোকাহত এবং আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সম্প্রতি চার্লির জন্মদিন উপলক্ষে তিনি তাঁকে প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম-এ সম্মানিত করেছেন। এটি আমেরিকার সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান। চার্লিকে সম্মানিত করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ছয় বিদেশির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়েছে। আমেরিকার বিদেশ দফতর এই ছ’জনের ভিসা প্রত্যাহারের কথা জানিয়ে সমাজমাধ্যমে লিখেছে, ‘‘যে সমস্ত বিদেশি আমেরিকানদের মৃত্যুকামনা করেন, তাঁদের প্রতি আমেরিকার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। চার্লি কার্কের ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডের পর যাঁরা আনন্দ-উল্লাস করেছিলেন, তাঁদের চিহ্নিত করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বিদেশ দফতর। এই ছ’জন তাঁদেরই উদাহরণ। আমেরিকায় এঁদের আর প্রয়োজন নেই।’’
কাদের উপর কোপ পড়ল? মার্কিন বিদেশ দফতরের ঘোষণা অনুযায়ী, মেক্সিকো, দক্ষিণ আফ্রিকা, আর্জেন্টিনা, জার্মানি, ব্রাজ়িল এবং প্যারাগুয়ের এক জন করে নাগরিকের ভিসা প্রত্যাহার করা হয়েছে। বৈধ ভিসার মাধ্যমেই আমেরিকায় থাকছিলেন তাঁরা। এ বার ওই ছ’জনকেই দেশে ফেরত পাঠানো হবে। প্রশাসনের দাবি, আর্জেন্টিনার বাসিন্দা চার্লির বিরুদ্ধে বর্ণবিদ্বেষ, বিদেশিবিদ্বেষ, নারীবিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ তুলে কটাক্ষ করেছিলেন। এ ছাড়া, জার্মানির বাসিন্দা চার্লির মৃত্যুর পর লিখেছিলেন, ‘‘যখন কোনও ফ্যাসিবাদী মারা যায়, গণতন্ত্রের সমর্থকদের তাতে খারাপ লাগে না।’’ অভিযোগ, ছ’জনই চার্লির মৃত্যু নিয়ে কোনও না কোনও ভাবে সমাজমাধ্যমে অভিযোগ করেছিলেন।
উল্লেখ্য, চার্লিকে খুনের অভিযোগে টাইলার রবিনসন নামের এক যুবককে সেপ্টেম্বরেই গ্রেফতার করেছিল আমেরিকার পুলিশ। তাঁর মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করা হবে বলে ঘোষণা করেছেন স্বয়ং ট্রাম্প। চার্লিকে সম্মানিত করার পর মঞ্চে তাঁর স্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘‘চার্লি সত্য ও স্বাধীনতার জন্য শহিদ হয়েছেন। সাহসিকতার সঙ্গে সত্য ও বিশ্বাসের কথা বলতেন তিনি। আমেরিকাকে শক্তিশালী করে তোলার জন্য সকলের সঙ্গে দৃঢ় ভাবে লড়েছিলেন।’’ চার্লির মৃত্যুর পর সমাজমাধ্যম ঘেঁটে তাঁর বিরোধীদের খুঁজে বার করার কাজ করছে মার্কিন প্রশাসন। নানা ভাবে তাঁদের হেনস্থা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।