খোঁজ চলেছে বহু বছর। কোথায় গেল সেই জাহাজ? প্রথম বার ইউরোপ থেকে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে যে জাহাজ এসে পৌঁছেছিল বলে মনে করা হয়। অবশেষে সেই জাহাজেরই খোঁজ মিলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ক্যাপ্টেন জেমস কুকের সেই সশস্ত্র জাহাজ, যার খোঁজ চলেছে দুশো বছরেরও বেশি সময় ধরে। তারই সন্ধান মিলেছে বলে দাবি করেছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা।
অস্ট্রেলিয়ার গবেষকরা বলছেন, অস্ট্রেলিয়ার নিউ পোর্টের কাছে এই জাহাজের অবশেষ পাওয়া যেতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলে পৌঁছনো প্রথম ইউরোপীয় জাহাজ ছিল এটি। দ্বীপে নেমেই এর গাছপালার বৈচিত্র দেখে নাকি অবাক হয়ে যান কুক। তার জাহাজে একজন বোটানিস্টও ছিলেন। এ ধরনের গাছপালা পৃথিবীর আর কোথাও দেখা যায় না। কুক জায়গাটার নাম দিয়েছিলেন ‘বোটানি বে’।
২৩০ বছর বাদে এই জাহাজটির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, এমন দাবি করেছে অস্ট্রেলিয়ার রোড আইল্যান্ড মেরিন আর্কিওলজি প্রজেক্টের।
‘এনডেভর’ মূলত মার্কিন স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সেনা জাহাজ হিসাবেই ব্যবহার করা হত। জাহাজটি শেষ দেখা যায় ১৭৭৮ সালে। এরপর জাহাজটির কোনও সন্ধান মেলেনি। নানা সময় এই জাহাজের অংশবিশেষ খুঁজে পাওয়ার দাবি উঠলেও জেমস কুকের জাহাজ আজও যেন এক রহস্য।
ক্যাপ্টেন জেমস কুকের ঐতিহাসিক জাহাজটি অস্ট্রেলিয়ার উপকূলীয় রোডে দ্বীপের কাছেই ডুবে গিয়েছিল মনে করা হয়।
১৭৭০ সালের এপ্রিলের মাঝামাঝি তিনি অস্ট্রেলিয়ার অস্তিত্ব খুঁজে বের করেন। অস্ট্রেলিয়া জয়-সহ বিভিন্ন অভিযানে যে জাহাজটি সবসময় তার সঙ্গে ছিল সেটি হল এইচএমএস এনডেভর। ১৭৬৯ থেকে ১৭৭১ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশ নৌবাহিনীর অনুসন্ধানী এই জাহাজটির নেতৃত্ব দেন কুক।
আমেরিকার পূর্ব উপকূলে রোড আইল্যান্ডের গবেষকরা জানান, জাহাজের ধ্বংসস্তূপের একটি থ্রি-ডি ছবি বানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সেটা আজই প্রকাশ্যে আসার কথা।
ওক আর পাইন কাঠে তৈরি ছিল তাঁর এই জাহাজ। সশস্ত্র এই জাহাজকে নিয়ে রয়েছে নানা রহস্যময় গল্প। এই জাহাজে করে কুক নিউজিল্যান্ডও খুঁজে বের করেছিলেন।
জ্যোতির্বিজ্ঞানেও ছিল কুকের অগাধ জ্ঞান। ১৭৭৯ সাল নাগাদ হাওয়াইয়ের কেয়ালা কেকুয়া বে-তে হত্যা করা হয় ক্যাপ্টেন কুককে।
অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল মেরিটাইম মিউজিয়ামের চেয়ার পিটার ডেক্সলার ওই জায়গাটিতে যাবেন, যেখানে ধ্বংসাবশেষ থাকার কথা। অস্ট্রেলিয়ার কনসাল জেনারেল অ্যালিস্টার ওয়ালটনেরও এই অভিযানের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা।
সমু্দ্রের ওই এলাকায় এনডেভর ছাড়াও ১৩টি জাহাজ মিলেছে বলে দাবি। জাহাজগুলির অনুসন্ধানে এই অঞ্চলের হাই টেক ম্যাপিং-সহ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। জলের তলায় থাকলেও তারা প্রায় শতভাগ নিশ্চিত এটিই হচ্ছে অভিযাত্রী জেমস কুকের হারানো জাহাজ।