Kabul

Afghainstan Crisis: কাবুলে রকেট, হানা ড্রোনেরও, নিহত এক মহিলা ও শিশু

কাবুল বিমানবন্দরের কাছেই খোওয়াজা বুগরা এলাকার একটি বাড়িতে এক বা একাধিক রকেট আছড়ে পড়ে। নিহত হন এক মহিলা এবং একটি শিশু।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কাবুল শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২১ ০৫:০৮
Share:

জঙ্গিদের গাড়িবোমা ধ্বংস করতে কাবুলে ড্রোন হানা চালিয়েছে আমেরিকা। আত্মরক্ষার জন্য একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: পিটিআই

পেন্টাগনের পরে একই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন খোদ আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বলেছিলেন, এই সপ্তাহান্তে কাবুলে আরও একটি জঙ্গি হামলা হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। আজ সন্ধ্যায় কাবুলে ফের বিস্ফোরণের শব্দ আর পাকিয়ে ওঠা কালো ধোঁয়া নতুন করে আতঙ্ক-স্রোত বইয়ে দিল আফগানিস্তানে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, এ দিন কাবুল বিমানবন্দরের কাছেই খোওয়াজা বুগরা এলাকার একটি বাড়িতে এক বা একাধিক রকেট আছড়ে পড়ে। নিহত হন এক মহিলা এবং একটি শিশু। আহত অন্তত তিন জন। অন্য একটি সূত্রের দাবি, নিহতের সংখ্যা সাত। এ দিকে, গত কাল নানগরহর প্রদেশের পরে আজ কাবুলেই হামলা চালিয়েছে আমেরিকার ড্রোন। সেনা জানিয়েছে, এই হামলার লক্ষ্য ছিল ইসলামিক স্টেট খোরাসান বা আইএস-কের একটি সম্ভাব্য গাড়িবোমা।

Advertisement

আমেরিকান সেনার আফগানিস্তান ছাড়ার সময়সীমা শেষ হতে বাকি আর মাত্র দু’টো দিন। ব্রিটেনের শেষ উদ্ধারকারী বিমান ইতিমধ্যেই কাবুল ছেড়ে গিয়েছে। এত দিন কাবুলে থেকে উদ্ধারকাজ পরিচালনা করা ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত লরি ব্রিস্টো দেশে ফিরে গিয়েছেন সেই বিমানে। গত কাল বাইডেন বলেন, ‘‘পরিস্থিতি অত্যন্ত বিপজ্জনক। বিমানবন্দরে হামলার আশঙ্কাও প্রবল।
আমাদের কমান্ডারেরা আমাকে জানিয়েছেন যে, আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে আরও একটি হামলা হওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। আমি তাঁদের বলেছি, বাহিনীর নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে যাবতীয় পদক্ষেপ করতে হবে।’’ এর পরেই এখনও আফগানিস্তানে রয়ে যাওয়া আমেরিকানদের বিদেশ দফতর বলে দেয়, তাঁরা যেন বিমানবন্দরের আশপাশ এড়িয়ে চলেন।

গত কাল নানগরহরে আমেরিকার রিপার ড্রোনের হামলায় দুই ‘হাই প্রোফাইল’ জঙ্গি নিহত হয়। এই প্রসঙ্গে বাইডেন বলেছেন, ‘‘ওটাই আমাদের শেষ আঘাত নয়। ঘৃণ্য হামলাটা যারা চালিয়েছিল, তাদের খুঁজে বার করে উচিত শিক্ষা দেব আমরা। আমেরিকা বা আমাদের বাহিনীর কেউ ক্ষতি করার চেষ্টা করলে তার জবাব দেব।’’ আজ বিমানবন্দরের লাগোয়া যে এলাকায় রকেট হামলাটি হয়, সেখানে বহু আমেরিকান নাগরিক থাকেন। মনে করা হচ্ছে, কাবুল বিমানবন্দরে বিস্ফোরণ ঘটানো আইএস-কে জঙ্গিরাই ওই রকেট ছুড়েছে এবং আমেরিকানরাই তাদের নিশানা ছিলেন।

Advertisement

প্রায় একই সময়ে সম্ভাব্য গাড়িবোমাটিকে নিশানা করে আমেরিকার ড্রোন। সেন্ট্রাল কম্যান্ডের প্রধান বিল আর্বান বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘‘আত্মরক্ষার্থে কাবুলে একটি গাড়ি লক্ষ্য করে দূরনিয়ন্ত্রিত বিমান-হানা চালিয়েছে আমেরিকান সেনা। হামিদ কারজ়াই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আইএস-কের সম্ভাব্য আক্রমণ রুখে দেওয়া গিয়েছে। আমরা নিশ্চিত, ‘টার্গেট’-কে মারতে পেরেছি। গাড়িটিতে হওয়া বিস্ফোরণ থেকে ইঙ্গিত মিলেছে, সেটিতে যথেষ্ট পরিমাণ বিস্ফোরক বোঝাই করা ছিল।’’ তবে গোটা বিষয়টি নিয়ে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাখ্যা পাওয়া গিয়েছে। আমেরিকান প্রশাসনের অন্য সূত্রে জানা গিয়েছে, গাড়িটিতে চড়ে একাধিক আত্মঘাতী বোমারু জঙ্গি বিমানবন্দরে ঢোকার চেষ্টা করছিল। আবার তালিবান মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে একটি সংবাদ সংস্থা জানায়, বিমানবন্দরের অদূরে আত্মঘাতী জঙ্গিদের গুলি করে মেরেছে আমেরিকান সেনা। রকেট হামলার দায় নেয়নি কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী। আমেরিকান সেনার দাবি, তারা শুধুমাত্র জঙ্গিদের গাড়িটিকেই নিশানা করে হামলা চালিয়েছে।

তালিবান যদিও জানিয়ে দিয়েছে, ৩১ অগস্টের পরে আফগানিস্তানে হামলা চালানোর কোনও অধিকার থাকবে না ওয়াশিংটনের। তালিবানের রাজনৈতিক দফতরের মুখপাত্র সুহেল শাহিন বলেন, ‘‘৩১ অগস্টের পরে এই ধরনের যাবতীয় হামলা বন্ধ করবে তালিবানের নেতৃত্বাধীন সরকার।’’ বস্তুত তালিবানের দাবি, নানগরহরে ড্রোন হামলার ফলে দোহা চুক্তি লঙ্ঘিত হয়েছে। তালিবানের আর এক মুখপাত্র জ়বিউল্লা মুজাহিদ একটি ভারতীয় চ্যানেলকে বলেছেন, এ দিনের রকেট হামলার তদন্ত হবে। ৩১ অগস্টের সময়সীমা আর বাড়ানো হবে না। তবে ওই তারিখের পরেও আফগানিস্তান ছাড়তে কাউকে বাধা দেওয়া হবে না।

এ দিকে, পঞ্জশির প্রদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করেছে তালিবান। এখনও তালিবানের হাতের বাইরে থাকা ওই প্রদেশে নর্দার্ন অ্যালায়ান্সের ঘাঁটিতে প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লা সালে রয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। সেখান থেকে সাম্প্রতিক ঘটনাবলির বিষয়ে তিনি নিয়মিত টুইট করছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, সালে এবং তাঁর বাহিনীর সমাজমাধ্যম ব্যবহার করা আটকাতেই ইন্টারনেট বন্ধ করেছে তালিবান। এর আগে তালিবান দাবি করেছিল, তারা পঞ্জশিরে ঢুকে পড়েছে। সালে এবং নর্দার্ন অ্যালায়ান্সের নেতা আহমেদ মাসুদ সেই দাবি উড়িয়ে দেন। সালের বক্তব্য, আইএস ও তালিবানের আঁতাঁত রয়েছে। জ়বিউল্লার পাল্টা অভিযোগ, দেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছেন সালে। একাধিক ‘শক্তিধর’ দেশের সঙ্গে তালিবানের সুসম্পর্কই রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন