গুপ্তধনের সন্ধান বললে খুব একটা ভুল হবে না। সোনার বারই রয়েছে ২০০ টন। বর্তমানে যার মূল্য প্রায় ১১১৩ কোটি ডলার। সব মিলিয়ে প্রায ১৩৩৪ কোটি ডলারের সম্পত্তি হওয়ার কথা। ১১৩ বছর আগে ডুবে যাওয়া সোনা বোঝাই একটি রুশ যুদ্ধজাহাজের খোঁজ মিলল দক্ষিণ কোরিয়ার উপকূলে। সম্প্রতি যার খোঁজ পেয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্ধারকারী দল।
দিমিত্রি দনস্কোই নামের এই রুশ ইম্পেরিয়াল নেভি ক্রুজারটির সন্ধান মিলেছে দক্ষিণ কোরিয়ার উলেউঙ্গডো দ্বীপের কাছে। ১৮৮৩ সালের অগস্টে সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে এটি যাত্রা শুরু করেছিল।
দক্ষিণ কোরিয়া, ব্রিটেন ও কানাডার উদ্ধারকারী দলের দু’টি ডুবোজাহাজ এই উদ্ধারকাজে সাহায্য করেছে। সমুদ্রের তলায় প্রায় ১৪০০ ফুট নীচে জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ মিলেছে।রবিবার শুরু উদ্ধারকাজ। অক্টোবর-নভেম্বর নাগাদ এটিকে উপরে ওঠানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
১৯০৫ সালে জাপানি যুদ্ধজাহাজের সঙ্গে লড়াইয়ের পর জাহাজটি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সুশিমার যুদ্ধে জাপানি নৌবহর ৫ হাজার ৮০০ টনের এই জাহাজটির মূল কাঠামোর বেশিরভাগটাই ধ্বংস করে দিয়েছিল।
এই জাহাজের উপর দু’-দু’বার হামলা হয়। ৫৯১ জন আরোহীর মধ্যে সেই সময় প্রাণ হারিয়েছিলেন ৬০ জন। জখম হন ১২০ জন। এরপর জাহাজের ক্যাপ্টেন লেভেদেভ জাহাজটিকে উলেউঙ্গডো দ্বীপে নিয়ে আসেন। মারা যান তিনিও।
জাহাজটির কামান, ডেক, বন্দুক, চাকা, নোঙর প্রতিটি জিনিসের উপরই বিপুলাকার জলজ উদ্ভিদের আস্তরণ তৈরি হয়েছে। তবে জাহাজ ও ডেকের পাশের কিছু অংশ ১১৩ বছর পরেও একটুও নষ্ট হয়নি।
প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বাক্স সোনার বার ছিল এই জাহাজে। ছিল রাশি রাশি স্বর্ণমুদ্রা। এই পরিমাণ সোনা জাপানিদের হাতে চলে যাবে ভেবে নাকি জাহাজের তলদেশে ছিদ্র করে দিয়েছিল রুশরা। উদ্ধার করা গেলে বর্তমানে যার মূল্য সব মিলে দাঁড়াতে পারে প্রায় ১৩৩৪ কোটি ডলার।
এই অভিযান থেকে প্রাপ্ত অর্থের অংশ উত্তর কোরিয়া হয়ে রাশিয়া থেকে দক্ষিণ কোরিয়া পর্যন্ত একটি রেলপথ তৈরিতে ব্যয় করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
উদ্ধার করা গেলে এই বিপুল সম্পদের অর্ধেক পাওয়ার কথা রাশিয়ার। বাকি অর্থের ১০ শতাংশ উলেউঙ্গডো দ্বীপের পর্যটনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে। জাহাজের স্মরণে তৈরি হবে একটি জাদুঘরও।