গাজ়ায় নিহতদের দেহ কোলে নিয়ে স্বজনহারারা। ছবি: রয়টার্স।
প্যালেস্টাইনপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইজ়রায়েলি সেনা। সম্প্রতি গাজ়া শহরের বহুতল ভবনগুলিকে নিশানা করতে শুরু করেছে তারা। ইজ়রায়েলি বাহিনী গাজ়ার এক পরিত্যক্ত স্কুলেও বোমা ফেলেছে। গাজ়া শহরে আল-ওয়াফা হাসপাতালের অদূরে আশ্রয়হীনদের তাঁবুর কাছেও বোমা পড়েছে বলে অভিযোগ। রবিবার সকাল থেকে গাজ়ার বিভিন্ন প্রান্তে অন্তত ১৭ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে।
গাজ়ায় যুদ্ধ পরিস্থিতির জন্য সশস্ত্র হামাস গোষ্ঠীর দিকেই আঙুল তুলে যাচ্ছে তেল আভিভ। ইজ়রায়েলি বিদেশমন্ত্রী গিদোন সার রবিবার আবারও সংঘর্ষ বন্ধ করার দায় হামাসের উপরেই ঠেলে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, হামাস যদি পণবন্দিদের মুক্তি দেয় এবং অস্ত্রসমর্পণের পথ বেছে নেয়, তবেই গাজ়ায় সংঘর্ষ শেষ হতে পারে। ইজ়রায়েলি বিদেশমন্ত্রীর কথায়, হামাস এই শর্তগুলি পূরণ করলে আগামিকালই যুদ্ধ থেমে যেতে পারে।
যদিও হামাস গোষ্ঠীও নিজেদের শর্ত বুঝিয়ে দিয়েছে ইজ়রায়েলকে। তাদের দাবি, ইজ়রায়েলকে সংঘর্ষ থামাতে হবে এবং গাজ়া থেকে ইজ়রায়েলি বাহিনীকে সরিয়ে নিতে হবে। তবেই তারা পণবন্দিদের মুক্তি দেবে। শনিবারও এ প্রসঙ্গে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। ঘটনাচক্রে, তার পরেই রবিবার ফের নিজেদের শর্ত বুঝিয়ে দিলেন ইজ়রায়েলি মন্ত্রী।
গত শনিবারও গাজ়া শহরের বহুতল এবং আশপাশের তাঁবু থেকে সাধারণ মানুষকে অন্যত্র সরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল ইজ়রায়েলি বাহিনী। ইজ়রায়েলের দাবি, ওই বহুতল ভবনগুলিকে হামাস গোষ্ঠী নিজেদের ডেরা হিসাবে ব্যবহার করছে। সেই কারণেই বহুতলগুলিতে হামলা চালানো হচ্ছে বলে দাবি ইজ়রায়েলি সেনার। চলতি সপ্তাহের শুরুতেই গাজ়া ভূখণ্ডের প্রায় ৪০ শতাংশ এলাকার উপর নিজেদের দখল নিয়ে নেয় ইজ়রায়েলি সেনা।
ইজ়রায়েলি বাহিনীর দাবি, ওই বহুতলগুলিকে উপর থেকে নজরদারি চালানোর জন্য ব্যবহার করছে হামাস গোষ্ঠী। সাধারণ গাজ়াবাসীকে সেখান থেকে সরে গাজ়ার দক্ষিণ প্রান্তে আল-মাওয়াসিতে চলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ইজ়রায়েলি সেনা। ওই এলাকাটিকে একটি ‘মানবিক অঞ্চল’ হিসাবে ঘোষণা করেছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। তাদের দাবি, সেখানে সাধারণ গাজাবাসীকে পানীয় জল, খাবার এবং চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। যদিও আল-মাওয়াসি শহরগুলি কতটা নিরাপদ, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।