International News

‘ব্রহ্মাণ্ডের রক্ষক জেডিরা’ তাঁদের বিশ্বাসকে ধর্ম হিসেবে মানল না ইংল্যান্ড

শুধু পৃথিবীর নয়, তাঁরা গোটা ব্রহ্মাণ্ডের শান্তি ও ন্যায়ের রক্ষক। তাঁরা সন্ন্যাসী, আবার যোদ্ধাও। ব্রহ্মাণ্ডকে সুরক্ষিত রাখতে আবহমান কাল ধরে মহাকাশে তাঁদের অতন্দ্র প্রহরা। সেই জেডি নাইটদের অনুগামীরা কিন্তু এ বার বড়সড় ধাক্কা খেয়ে গেলেন ইংল্যান্ডে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬ ২১:৫১
Share:

পৌরাণিক কাহিনীর জেডি নাইটদের হাতে যে পবিত্র তরবারি থাকে, তার অনুকরণে তৈরি তরবারি হাতে জেডিরা। ছবি: সংগৃহীত।

শুধু পৃথিবীর নয়, তাঁরা গোটা ব্রহ্মাণ্ডের শান্তি ও ন্যায়ের রক্ষক। তাঁরা সন্ন্যাসী, আবার যোদ্ধাও। ব্রহ্মাণ্ডকে সুরক্ষিত রাখতে আবহমান কাল ধরে মহাকাশে তাঁদের অতন্দ্র প্রহরা। সেই জেডি নাইটদের অনুগামীরা কিন্তু এ বার বড়সড় ধাক্কা খেয়ে গেলেন ইংল্যান্ডে।

Advertisement

জনপ্রিয় হলিউড মুভি ‘স্টার ওয়ারস’-এর একের পর এক সিক্যুয়েলে জেডি নাইটদের মহান আত্মত্যাগের কাহিনী দেখা গিয়েছে। পৌরণিক কাহিনীভিত্তিক ‘স্টার ওয়ারস’-এর জনপ্রিয়তা দিন দিন যে ভাবে বেড়েছে, এক সময় তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে জেডি মতের স্বঘোষিত অনুসারীর সংখ্যাও। জেডিদের এই প্রসার মূলত ইংল্যান্ড, আমেরিকা সহ পশ্চিমি বিশ্বেই ঘটছিল। গত দেড় দশকে অবশ্য ইংল্যান্ডে বেশ কিছুটা কমেছে জেডিইজমের ঘোষিত অনুসারীর সংখ্যা। তার মধ্যেই আবার ধাক্কা। ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের চ্যারিটি কমিশন আচমকা জানিয়ে দিল জেডিইজম কোনও ধর্মমতই নয়। মানুষের নৈতিক চরিত্রের উন্নতি ঘটানোর মতো কোনও উপাদান জেডিইজমের মধ্যে নেই বলে কমিশন মনে করছে।

স্টার ওয়ারসে প্রদর্শিত জেডি মাস্টার। ছবি: সংগৃহীত।

Advertisement

জেডি মতের অনুসারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে দাতব্য বা সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা দেওয়ার জন্য চ্যারিটি কমিশন ফর ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলসে আবেদন জানিয়েছিল ‘দ্য টেম্পল অব দ্য জেডি অর্ডার’ বা টোটজো। সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে কমিশন। আমেরিকার টেক্সাস ভিত্তিক এই টোটজো সংগঠন নিজেদের ধর্মীয় সংগঠন বলে দাবি করলেও, আসলে টোটজোকে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে মান্যতা দেওয়া যায় না বলে ইংল্যান্ডের চ্যারিটি কমিশন জানিয়েছে। কমিশনের ওয়েবসাইটে বিশদে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, কেন টোটজো বা জেডিদের আবেদন খারিজ করে দেওয়া হল। চ্যারিটি কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, টোটজো আসলে একটি ওয়েবসাইট-ভিত্তিক সংগঠন এবং তাদের কার্যকলাপ বা অস্তিত্ব মূলত ওয়েবসাইটেই সীমাবদ্ধ। সেই কারণে টোটজো সংগঠনকে বা জেডিইজমকে ধর্মমত হিসেবে মান্যতা দেওয়া সম্ভব নয়।

স্টার ওয়ারসে অশুভ শক্তির বিপরীতে শুভ শক্তি হিসেবে জেডিদের উপস্থিতির চিত্র। ছবি: সংগৃহীত।

২০০১ সাল পর্যন্ত পশ্চিমি দুনিয়ায় স্বঘোষিত জেডিদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছিল। সে বছর শুধু ব্রিটেনেই জেডিদের সংখ্যা প্রায় ৩ লক্ষ ৯০ হাজার ছুঁয়েছিল। ২০০১-এর জনগণনায় ব্রিটেনে যাঁরা নিজেদের জেডি বলে জানিয়েছিলেন, তাঁরা সকলে জেডি নন বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি। অনেক নাস্তিক নাকি সে বছরের জনগণনায় নিজেদের জেডি বলে উল্লেখ করেছিলেন। ২০০১ সালের পর থেকে অবশ্য এই স্বঘোষিত জেডিদের সংখ্যা ক্রমশ কমতে শুরু করে। ২০১১-র জনগণনায় দেখা যায়, ইংল্যান্ডে জেডির সংখ্যা ১ লক্ষ ৭৭ হাজারে দাঁড়িয়েছে।

আরও পড়ুন: উৎপাত থেকে রেহাই পেতে হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালাকে খুঁজছে প্যারিস

চ্যারিটি কমিশন অব ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস জানিয়েছেন, ধর্মমত হিসেবে মান্যতা পাওয়ার জন্য যেটুকু আধ্যাত্মিক উপাদান থাকা জরুরি, জেডিইজমের মধ্যে তা নেই। মানুষের নৈতিক উন্নতি ঘটানোই যে জেডিদের বিশ্বাস বা উপাসনার মূল লক্ষ্য, তার যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে চ্যারিটি কমিশন মনে করছে। তাই জেডিইজমকে ধর্মমত হিসেবে বা টোটজোকে দাতব্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে মান্যতা দেওয়া হচ্ছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন