রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষী বাহিনী। ছবি: রয়টার্স।
পশ্চিম এশিয়ায় এ বার সরাসরি সামরিক সংঘাতে জড়াল রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং ইজরায়েল। সোমবার লেবাননে হামলাকারী ইজ়রায়েলি ড্রোনের উপর গুলিবর্ষণ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ পরিচালিত আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী! সাম্প্রতিক সময়ে যা নজিরবিহীন ঘটনা।
লেবাননে মোতায়েন রাষ্ট্রপুঞ্জ শান্তিরক্ষা মিশন (ইউনিফিল) জানিয়েছে, সোমবার দক্ষিণ লেবাননে হামলাকারী একটি ইজ়রায়েলি ড্রোন তারা গুলি করে নামিয়েছে। ড্রোনটি সীমান্ত শহর কফার কিলার অদূরে ‘আক্রমণাত্মক কার্যকলাপ’ চালানোয় সেখানে মোতায়েন আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষীরা ‘প্রয়োজনীয় প্রতিরক্ষামূলক পাল্টা ব্যবস্থা’ নিয়েছেন বলে ইউনিফিলের দাবি। ড্রোন ধ্বংসের কথা স্বীকার করে নিয়ে ইজ়রায়েলি সেনা হামলার কথা স্বীকার করেনি। তাদের দাবি, ড্রোনটি ‘রুটিন গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের কাজ’ করছিল।
সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাদাভ শোশানি এক্সে পোস্টে অভিযোগ করেছেন, বিনা প্ররোচনায় গুলি চালিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিসেনা। প্রসঙ্গত, গাজ়ার মতোই লেবাননেও সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ধারাবাহিক হামলার অভিযোগ উঠেছে তেল আভিভের বিরুদ্ধে। আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এমনকি, রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে নিরস্ত হওয়ার বার্তা দেওয়া হলেও হামলা থামায়নি ইজ়রায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ফৌজ। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজ়ায় ইজ়ারায়েলি হামলা শুরুর পরেই দক্ষিণ লেবাননে সক্রিয় শিয়া জঙ্গিগোষ্ঠী হিজ়বুল্লা তেল আভিভের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করেছিল। তার পরে এক বছর ধরে দু’তরফের সংঘর্ষ চলে।
শেষ পর্যন্ত গত নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে আমেরিকা এবং ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় দুই পক্ষ সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়। বলা হয়েছিল, যুদ্ধবিরতির সময়ে দুই দেশ থেকে সাধারণ মানুষ নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারবেন। যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, লেবানন সীমান্ত থেকে সেনা সরিয়ে নিতে ৬০ দিন পর্যন্ত সময় নিতে পারবে ইজ়রায়েল। তবে কোনও পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে নতুন করে আক্রমণ শানাতে পারবে না। কিন্তু তা লঙ্ঘন করে নেতানিয়াহুর বাহিনী ধারাবাহিক হামলা চালাচ্ছে বলে সেপ্টেম্বরে অভিযোগ করেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ। জানিয়েছিল, সংঘর্ষবিরতি চুক্তির পরেও ইজ়রায়েলি হামলায় লেবাননে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। লেবানন সরকারের অভিযোগ, দক্ষিণাঞ্চলের তাদের ভূখণ্ডের পাঁচটি সামরিক কৌশলগত অবস্থান এখনও দখলে রেখেছে ইজ়রায়েলি সেনা।