(বাঁ দিকে) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
জাপানের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সেরে ফেলল আমেরিকা! দুই দেশের মধ্যে হওয়া বাণিজ্যচুক্তির কথা জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ১৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক বহাল থাকবে বলেও জানান তিনি। ট্রাম্প মনে করেন, এখনও পর্যন্ত আমেরিকার সঙ্গে যে সব দেশের বাণিজ্যচুক্তি হয়েছে, তার মধ্যে জাপানের সঙ্গে চুক্তিই ‘বৃহত্তম’। অর্থাৎ, এই চুক্তি আমেরিকা অনেক বেশি লাভবান হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, এই চুক্তির অংশ হিসাবে আমেরিকা ৯০ শতাংশ মুনাফা পাবে। শুধু তা-ই নয়, জাপান ৫৫ হাজার কোটি ডলার আমেরিকায় বিনিয়োগ করবে, এমনও দাবি করেছেন ট্রাম্প। যদিও জাপানের তরফে সরকারি ভাবে এই চুক্তির ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি।
ট্রাম্প তাঁর ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এর পোস্টে জাপানের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তির কথা ঘোষণা করেছেন। তাঁর দাবি, এই চুক্তির ফলে লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে, যা আগে কখনও হয়নি। চুক্তির বিষয়ে বিশদে কিছু না-জানালেও মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, গাড়ি, ট্রাক, কৃষিপণ্যের বাণিজ্যের জন্য জাপানের বাজার আমেরিকার জন্য উন্মুক্ত থাকবে! ট্রাম্পের কথায়, ‘‘এটি আমেরিকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা সর্বদা জাপানের সঙ্গে দুর্দান্ত সম্পর্ক বজায় রাখব।’’ শুধু জাপান নয়, ফিলিপিন্সের সঙ্গেও আমেরিকার বাণিজ্যচুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দুই দেশের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত হওয়াকে ‘আমেরিকার জয়’ দেখছেন ট্রাম্প।
জাপানের সঙ্গে আমেরিকার বাণিজ্যচুক্তি সম্ভব কি না, তা নিয়ে বিশ্ব কূটনৈতিক মহলে দীর্ঘ দিন ধরে চর্চা চলছিল। একটা সময় ট্রাম্প নিজেই জানিয়েছিলেন, জাপানের সঙ্গে কোনও ভাবেই বাণিজ্যচুক্তি সম্ভব নয়। চলতি মাসের শুরুতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, ‘‘জাপানের সঙ্গে চুক্তি আদৌ সম্পন্ন হবে কি না, তা নিয়ে আমি সন্দিহান। আমরা জাপানের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তবে আমরা কোনও চুক্তির দিকে এগোতে পারব কি না, তা নিয়ে আমি নিশ্চিত নই।’’ পাশাপাশি, জাপানকে ‘প্রতারক’ বলেও আক্রমণ করেছিলেন ট্রাম্প।
ইতিমধ্যেই জাপানকে শুল্ক-চিঠিও পাঠিয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সেই চিঠিতে তিনি স্পষ্ট করে দেন, জাপানের পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। তা ছাড়া ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম এবং মোটরগাড়ি ও তার যন্ত্রাংশের উপর আরও বাড়তি শুল্ক চাপানো হতে পারে। আগামী ১ অগস্ট থেকে নতুন শুল্কনীতি কার্যকর হওয়ার কথা। তবে তার আগেই জাপানের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার কথা ঘোষণা করে দিলেন ট্রাম্প।
জাপান, ফিলিপিন্সের মতো দেশের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত হলেও এখনও ভারতের সঙ্গে চুক্তির ভবিষ্যৎ কী, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। যদিও ভারতীয় পণ্যের উপর পাল্টা রফতানি শুল্ক আরোপের কথা এখনও ঘোষণা করেননি ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বার বার দাবি করেছেন যে, দ্রুত ভারতের সঙ্গে আমেরিকার বাণিজ্যচুক্তির কথা ঘোষণা করতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদী । তবে সূত্রের খবর, বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে দুই দেশের মধ্যে এখনও মতপার্থক্য রয়েছে। তবে তা সমাধানের চেষ্টা চলছে বলেও দাবি সরকারি সূত্রে।