US H-1B Visa

ভিসায় বঞ্চনা কী ভাবে? বিদেশি কর্মীদের জন্য কবে কোথায় কত আমেরিকানের চাকরি গিয়েছে? হিসাব দিল হোয়াইট হাউস

এ বার থেকে মার্কিন সংস্থাগুলিকে এক-একটি এইচ-১বি ভিসার জন্য এককালীন এক লক্ষ ডলার করে সরকারকে দিতে হবে। শনিবার এই নির্দেশনামার সপক্ষে যুক্তি দিয়ে বিস্তৃত বিবৃতি প্রকাশ করেছে হোয়াইট হাউস।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:৩৪
Share:

এইচ-১বি ভিসা নিয়ে শুক্রবার নতুন নির্দেশনামায় স্বাক্ষর করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।

এইচ-১বি ভিসার বিরুদ্ধে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রধান অভিযোগ, এর জন্য মার্কিন নাগরিকেরা বঞ্চিত হচ্ছেন। বিদেশিদের কারণে চাকরি যাচ্ছে আমেরিকার ‘ঘরের লোকের’। সেই কারণেই এই ভিসার উপর এক লক্ষ ডলারের (ভারতীয় মুদ্রায় ৮৮ লক্ষ টাকা) বোঝা চাপিয়ে দিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, এ বার থেকে মার্কিন সংস্থাগুলিকে এক-একটি এইচ-১বি ভিসার জন্য এককালীন এক লক্ষ ডলার করে সরকারকে দিতে হবে। শনিবার (স্থানীয় সময়) এই নির্দেশনামার সপক্ষে যুক্তি দিয়ে বিস্তৃত বিবৃতি প্রকাশ করেছে হোয়াইট হাউস। কেন এত অর্থ দাবি করা হচ্ছে এইচ-১বি ভিসার জন্য, কোথায় কবে কত আমেরিকান এই ভিসার কারণে চাকরি হারিয়েছেন, তার হিসাব রয়েছে হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে।

Advertisement

সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, আমেরিকায় ২০০৩ সালে এইচ-১বি ভিসাধারী তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীর সংখ্যা ছিল ৩২ শতাংশ। এখন তা বেড়ে ৬৫ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মার্কিন নাগরিকদের বেকারত্ব। বিবৃতিতে ট্রাম্প প্রশাসন বলেছে, ‘‘কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের মধ্যে এখন বেকারত্বের হার ৬.১ শতাংশ। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের মধ্যে বেকারত্বের হার ৭.৫ শতাংশ। জীববিজ্ঞান বা আর্ট হিস্ট্রির চেয়ে সংখ্যাটা দ্বিগুণ। ২০০০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে আমেরিকায় বিদেশি কর্মীর সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে গিয়েছে। সার্বিক ভাবে কর্মসংস্থান বেড়েছে ৪৪.৫ শতাংশ।’’

সংস্থাগুলির পরিসংখ্যান উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে। বিবৃতি অনুযায়ী, ‘‘২০২৫ অর্থবর্ষে একটি সংস্থা ৫,১৮৯টি এইচ-১বি ভিসার আবেদন মঞ্জুর করেছে। আবার ওই বছরেই ১৬ হাজার আমেরিকান কর্মীকে ছাঁটাই করেছে। যে সংস্থা ২০২৫-এ ১,৬৯৮টি ভিসার আবেদন গ্রহণ করেছে, সেখান থেকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে ২,৪০০ আমেরিকান কর্মীকে। তৃতীয় একটি সংস্থা ২০২২ সালের পর থেকে মোট ২৭ হাজার মার্কিন কর্মীকে ছাঁটাই করেছে। নিয়েছে ২৫,০৭৫টি নতুন ভিসার আবেদন। গত ফেব্রুয়ারিতে একটি সংস্থা এক হাজার মার্কিন কর্মীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছিল। তারা এখনও পর্যন্ত ১,১৩৭টি এইচ-১বি ভিসার আবেদন নিয়েছে।’’

Advertisement

কর্মক্ষেত্রে আমেরিকানদের অগ্রাধিকার দিতেই ট্রাম্প এইচ-১বি ভিসাতে লক্ষ ডলারের বোঝা চাপিয়েছেন, দাবি হোয়াইট হাউসের। বলা হয়েছে, ‘‘আমেরিকান কর্মীদের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করতেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছেন মানুষ। প্রতিশ্রুতি রাখতে তিনি দিনরাত পরিশ্রম করছেন। কর্মসংস্থান ফেরাতে এবং নতুন বিনিয়োগ আনতে প্রেসিডেন্ট চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বাণিজ্য চুক্তিতেও তিনি একাধিক সফল সমঝোতা করেছেন। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে আমেরিকান কর্মীরা লাভবান হচ্ছেন।’’

এইচ-১বি ভিসা নিয়ে প্রতি বছর ভারত থেকে বহু মানুষ আমেরিকায় যান। এই মুহূর্তে ভারতীয়েরাই এই ভিসার সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাচ্ছেন। শুধু গত বছরেই ভিসার ৭১ শতাংশ আবেদন মঞ্জুর হয়েছে ভারত থেকে। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে চিন (১১.৭ শতাংশ)। শনিবার নয়াদিল্লি এ নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। বলা হয়েছে, এই পদক্ষেপের ফলে এইচ-১বি ভিসাধারী মানুষের জীবনে পারিবারিক বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে। ভারত সরকার মনে করে, এ বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা করবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement