Advertisement
E-Paper

এইচ-১বি ভিসা কী? আগে কত খরচ হত? মূল্য কতটাই বা বৃদ্ধি করলেন ট্রাম্প? নতুন নির্দেশের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন আমেরিকায়

দক্ষ বিদেশি কর্মীদের নিয়োগ করতে গেলে সংস্থাগুলিকে এক লক্ষ ডলার করে মার্কিন সরকারের হাতে তুলে দিতে হবে। শুক্রবার ট্রাম্প এই নির্দেশনামায় স্বাক্ষর করার পর থেকে বিতর্ক শুরু হয়েছে। বৈধতা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১০:২০
এইচ-১বি ভিসার জন্য মার্কিন সংস্থাগুলির উপর এক লক্ষ ডলারের বোঝা চাপিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এইচ-১বি ভিসার জন্য মার্কিন সংস্থাগুলির উপর এক লক্ষ ডলারের বোঝা চাপিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

এইচ-১বি ভিসার জন্য মার্কিন সংস্থাগুলির উপর এক লক্ষ ডলারের (ভারতীয় মুদ্রায় ৮৮ লক্ষ টাকা) বোঝা চাপিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দক্ষ বিদেশি কর্মীদের নিয়োগ করতে গেলে সংস্থাগুলিকে এই পরিমাণ অর্থ সরকারের হাতে তুলে দিতে হবে। শুক্রবার ট্রাম্প এই নির্দেশনামায় স্বাক্ষর করার পর থেকে বিতর্ক শুরু হয়েছে। হোয়াইট হাউসের বক্তব্য, বিদেশ থেকে কর্মী না এনে আমেরিকানদেরই প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তুলুক বিভিন্ন সংস্থা। তাহলে আমেরিকার চাকরি আমেরিকানেরাই পাবেন। তা ছাড়া, বাইরে থেকে যাঁদের আনা হচ্ছে, তাঁরা যে আসলেই ‘দক্ষ’, ট্রাম্পের নির্দেশ তা-ও নিশ্চিত করবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে অনেকেরই মত, এই এক লক্ষ ডলার এইচ-১বি ভিসার আবেদনকারী কর্মীদের কাছ থেকেই নেবে সংস্থাগুলি।

এইচ-১বি ভিসা কী

এইচ-১বি ভিসা একটি অ-অভিবাসী ভিসা। এর মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের দক্ষ কর্মীরা সাময়িক ভাবে আমেরিকায় থেকে সেখানকার সংস্থার হয়ে কাজ করতে পারেন। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন, অতি দক্ষ কর্মীদেরই এই সুযোগ দেওয়া হয়। ১৯৯০ সালে আমেরিকায় এই ধরনের ভিসা চালু হয়েছিল। এই ভিসার অধীনে বিদেশ থেকে যাঁরা আমেরিকায় কাজ করতে যান, মার্কিন কর্মীদের সমান বেতনই তাঁরা পেয়ে থাকেন।

কারা আবেদনের যোগ্য

যে কোনও বিষয়ে ন্যূনতম স্নাতক স্তরের ডিগ্রি থাকলে এই ভিসার জন্য আবেদন করা যায়। বিশেষত আমেরিকার বিজ্ঞান, গণিত, তথ্যপ্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং ক্ষেত্রে এই ভিসার চাহিদা রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে এইচ-১বি ভিসার মেয়াদ থাকে তিন বছর। সর্বোচ্চ ছ’বছর পর্যন্ত তা বৃদ্ধি করা যায়। এই সময়ের মধ্যে আমেরিকার গ্রিন কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন কর্মীরা। গ্রিন কার্ড বা স্থায়ী নাগরিকত্ব পেয়ে গেলে এইচ-১বি ভিসার মেয়াদ ইচ্ছামতো বৃদ্ধি করা যায়। শনিবার মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে, এইচ-১বি ভিসার আবেদনকারীদের জন্য প্রতি বছর এক লক্ষ ডলার করে দিতে হবে না সংস্থাগুলিকে। এটি এককালীন মূল্য। নতুন যাঁরা আবেদন করবেন, শুধু তাঁদের ক্ষেত্রেই তা প্রযোজ্য। যাঁদের এই ভিসা আছে, তাঁদের জন্যও আলাদা করে অর্থ দেওয়ার প্রয়োজন নেই।

খরচ কত

এইচ-১বি ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে তিন বছরের জন্য ১৭০০ (প্রায় দেড় লক্ষ টাকা) থেকে ৪৫০০ (৩.৯৬ লক্ষ টাকা) মার্কিন ডলার দিতে হয় কর্মীদের। ট্রাম্পের নির্দেশের পর এক লক্ষ ডলারের বোঝা যদি সংস্থাগুলি কর্মীদের কাছ থেকে নেয়, তবে এক লাফে ৮৮ লক্ষ টাকা করে আবেদনকারীদের দিতে হবে ভিসা পেতে চাইলে। অর্থাৎ, এক ধাক্কায় দাম বেড়ে যাচ্ছে প্রায় ৮৮ গুণ!

ভারতের সমস্যা কোথায়

এইচ-১বি ভিসা নিয়ে প্রতি বছর ভারত থেকে বহু মানুষ আমেরিকায় যান। এই মুহূর্তে ভারতীয়েরাই এই ভিসার সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাচ্ছেন। শুধু গত বছরেই ভিসার ৭১ শতাংশ আবেদন মঞ্জুর হয়েছে ভারত থেকে। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে চিন (১১.৭ শতাংশ)। ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে অ্যামাজ়ন এবং তার সহযোগী সংস্থাগুলি ১২ হাজার এইচ-১বি ভিসার আবেদন মঞ্জুর করেছে। মাইক্রোসফ্‌ট, মেটার মতো সংস্থা সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে পাঁচ হাজার করে আবেদনে। শনিবার নয়াদিল্লি এ নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। বলা হয়েছে, এই পদক্ষেপের ফলে এইচ-১বি ভিসাধারী মানুষের জীবনে পারিবারিক বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে। ভারত সরকার মনে করে, এ ব্যাপারে ট্রাম্প প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা করবে।

বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন

আমেরিকার অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন ট্রাম্পের এই নির্দেশনামার বৈধতা নিয়ে। আমেরিকান ইমিগ্রেশন কাউন্সিলের সিনিয়র আধিকারিক বলেছেন, ‘‘এইচ-১বি ভিসার উপর এক লক্ষ ডলার চাপানোর আইনত কোনও অধিকারই নেই ট্রাম্পের। প্রক্রিয়াকরণের খরচ তোলার জন্য কিছুটা দাম তিনি বাড়াতে পারেন মাত্র।’’ এর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হবে বলেও মনে করছেন তিনি। আবার আমেরিকার আইন সম্পর্কে ওয়াকিবহাল অনেকের মতে, প্রেসিডেন্টের নির্দেশ বৈধ। এ নিয়ে চর্চা চলছে।

Donald Trump H-1B Visa US Visa White House
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy