লন্ডনগামী ট্রেনে দুষ্কৃতী হামলা। ছবি: এএফপি এবং সংগৃহীত।
চলন্ত ট্রেনের ভিতরে আচমকাই ছোটাছুটি, চিৎকার শুরু করে দিলেন যাত্রীরা। কী হয়েছে বুঝে ওঠার আগেই দেখা গেল একটি ব্যক্তি বড় একটি ছুরি নিয়ে তেড়ে আসছেন। তার পরই যাত্রীদের লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি কোপাতে শুরু করলেন। কারও হাতে, কারও কাঁধে, কারও আবার পিঠে কোপ পড়ল। লুটিয়ে পড়লেন তাঁরা। রক্তে ভিজল ট্রেনের পাদানি।
আতঙ্কিত হয়ে তত ক্ষণ যাত্রীরা নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে ছোটাছুটি শুরু করে দিয়েছিলেন। ফলে হুড়োহুড়ি, ধাক্কাধাক্কিতে আরও অনেক যাত্রী পড়ে গেলেন। পদপিষ্টের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হল। এক সংবাদমাধ্যমকে সেই ঘটনার কথা বলতে গিয়ে শিউরে উঠেছিলেন এক যাত্রী। রেন চেম্বার্স নামে এক যাত্রী সংবাদমাধ্যম বিবিসি-কে বলেন, ‘‘আমার সামনে দিয়ে এক যাত্রী ছুটে গেলেন। তাঁর হাত থেকে গলগল করে রক্ত ঝরছিল। আমরা সকলে মিলে আতঙ্কে ট্রেনের সামনের কামরাগুলির দিকে ছুটতে শুরু করেছিলাম। ওই ব্যক্তি শুধু বলেছিল, ওদের হাতে ছুরি রয়েছে, পালাও তোমরা।’’ রেনের কথায়, ‘‘প্রথমে কিছু বুঝে উঠতে পারিনি কী হয়েছে। তার পরই শুনলাম ট্রেনে হামলা হয়েছে।’’ যে কামরায় হামলা হয়েছে, তার সামনের কামরাতেই ছিলেন রেন। ফলে ওই কামরার যাত্রীদের অক্ষত অবস্থাতেই উদ্ধার করা হয়েছে।
আরও এক যাত্রী জানান, চার দিকে রক্তে ভেসে যাচ্ছিল। অনেক যাত্রী নিজেকে বাঁচাতে ট্রেনের বাথরুমে আশ্রয় নেন। আরও এক যাত্রী বলেন, ‘‘মনে হচ্ছিল কোনও ছবির শুটিং চলছে।’’ লন্ডনগামী ওই ট্রেনে শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ৩৯ মিনিটে দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়। ট্রেনটি ডঙ্কাস্টার থেকে লন্ডনে যাওয়ার পথে এই ঘটনা ঘটে। হান্টিংডন স্টেশনের কাছে ট্রেনটিকে থামিয়ে যাত্রীদের উদ্ধার করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, এই হামলায় ১০ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ন’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এটি কোনও জঙ্গিহামলা কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুষ্কৃতীদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।