ভারত মহাসাগরের দক্ষিণে খোঁজ চালাচ্ছিল চিনের জাহাজ হেক্সিয়াম ০১। হঠাৎই তার ‘ব্ল্যাক বক্স লোকেটর’ যন্ত্রে ধরা পড়ল শব্দসঙ্কেত। প্রাথমিক ভাবে বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা, সেটি এমএইচ ৩৭০-র হলেও হতে পারে। তবে এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত কিছুই জানায়নি উদ্ধারকারী দল।
চিনা সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, শনিবার ভারত মহাসাগরের দক্ষিণে হেক্সিয়াম ০১ নামে ওই জাহাজের তিন কর্মী যে সঙ্কেতের খোঁজ পেয়েছেন, তার কম্পনের মাত্রা ছিল প্রতি সেকেন্ডে ৩৭.৫ হার্টজ। বিশেষজ্ঞদের কারও কারও মতে, বিমানের ককপিট ভয়েস রেকর্ডার এবং ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডারের কম্পনমাত্রাও এরকমই। একই দাবি করেছেন বিমানটির ব্ল্যাক বক্স প্রস্তুতকারক সংস্থার প্রেসিডেন্ট অনীশ পটেল। তবে বিশেষজ্ঞদের অন্য এক অংশের দাবি, ওই দু’টি যন্ত্র ছাড়াও আরও বিভিন্ন যন্ত্রের একই রকম কম্পনমাত্রা হতে পারে। ফলে নিশ্চিত হওয়ার আগেই কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো উচিত নয়। কিন্তু বিমান নিখোঁজ হওয়ার আঠাশ দিন পর এই শব্দসঙ্কেতের খোঁজ অন্তত তদন্তের কাজে সাহায্য করতে পারবে বলে অনেকেরই আশা।
অন্য দিকে, মালয়েশিয়ার পরিবহণ মন্ত্রী হিশামুদ্দিন হুসেন জানিয়েছেন, তদন্তের কাজে কোনও ত্রুটি রাখবে না মালয়েশীয় সরকার। এ দিন তিনটি কমিটি গড়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে মালয়েশিয়ার বিরুদ্ধে তথ্য গোপন করার এবং তদন্তে উদাসীন থাকার অভিযোগও উড়িয়ে দেন তিনি। ৮ মার্চ নিখোঁজ হয়েছিল এমএইচ ৩৭০। তার পর জলে, স্থলে ও আকাশপথে ব্যাপক খোঁজ চলেছে। কিছুই মেলেনি। অন্য দিকে, বিমানের ব্ল্যাক বক্সের ব্যাটারির আয়ুও কমে আসছিল। একই সঙ্গে এ-ও দাবি উঠতে থাকে যে বিমানের ব্ল্যাক বক্সটির ব্যাটারির মেয়াদ ফুরিয়েছে ২০১২ সালে। কিন্তু তার পরেও তা পরিবর্তন করা হয়নি।
এ দিন মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের তরফে জানানো হয়, চলতি বছরের জুন মাসে ব্যাটারির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। ফলে নির্দিষ্ট সময় পেরোনোর পরও তা বদলানো হয়নি, এমন অভিযোগ মোটেও ঠিক নয়। গত কাল থেকে সেই ব্ল্যাক বক্সের খোঁজে আরও জোরদার তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে। সমুদ্রের অন্দরে চালানো হয় খোঁজ। এ দিনও ১০টি সেনা বিমান, ৩টি অসামরিক বিমান আর ১১টি জাহাজ মিলে পারথের ১৭০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে প্রায় ২ লক্ষ ১৭ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকায় খোঁজ চালিয়েছে। কিন্তু শব্দসঙ্কেত ছাড়া আর কিছুই মেলেনি।