৩৭০-এর সৌভাগ্য বদলে গেল ১৭-এর বিপর্যয়ে

এমএইচ ৩৭০-এ ওঠার কথা ছিল স্ত্রীর। বন্ধুর সঙ্গে সময়সূচি বদলে ৮ মার্চ ওই বিমানে ওঠেননি বিমানসেবিকা। সেই উড়ানের পরিণতিটা সকলেরই জানা। এর ঠিক চার মাসের মধ্যে সহকর্মীর সঙ্গে ডিউটি বদলে এমএইচ ১৭-এ উঠে মারা গেলেন তাঁর স্বামী ভারতীয় বংশোদ্ভূত স্টুয়ার্ড সঞ্জিদ সিংহ সাঁধু।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কুয়ালা লামপুর শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৪ ০৩:৫৩
Share:

সঞ্জিদ সিংহ সাঁধু

এমএইচ ৩৭০-এ ওঠার কথা ছিল স্ত্রীর। বন্ধুর সঙ্গে সময়সূচি বদলে ৮ মার্চ ওই বিমানে ওঠেননি বিমানসেবিকা। সেই উড়ানের পরিণতিটা সকলেরই জানা। এর ঠিক চার মাসের মধ্যে সহকর্মীর সঙ্গে ডিউটি বদলে এমএইচ ১৭-এ উঠে মারা গেলেন তাঁর স্বামী ভারতীয় বংশোদ্ভূত স্টুয়ার্ড সঞ্জিদ সিংহ সাঁধু।

Advertisement

এক মাস পরে ছেলে বাড়ি ফিরবে বলে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন বৃদ্ধ বাবা-মা। পেশায় বিমানের স্টুয়ার্ড হওয়ায় অনেক দিন অন্তর একমাত্র ছেলের দেখা মেলে। বাড়িতে তাই বেশ খুশি খুশি রব ছিল। ছেলের পছন্দের খাবারটাই রাঁধবেন, ঠিক করে ফেলেছিলেন বৃদ্ধা। সেই মতো জোগাড়যন্ত্র করে রেখেছিলেন। হঠাৎই এল পুত্রবধূর ফোনটা জঙ্গিদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রে জ্বলেপুড়ে খাক হয়ে যাওয়া এমএইচ ১৭ বিমানে ছিল তাঁদের একমাত্র ছেলে সঞ্জিদ।

“জানেন, ছেলেটার ওই বিমানে ওঠার কথা ছিল না। এক সহকর্মীর সঙ্গে শিফ্ট বদলেছিল ও...” কাঁপা কাঁপা গলায় বললেন সঞ্জিদের বাবা জিজর সিংহ। বৃদ্ধের আক্ষেপ, “উড়ান ছাড়ার আগে আমাকে ফোন করেছিল ছেলে। তখনও জানতাম না, ওটাই ওর সঙ্গে শেষ কথা।”

Advertisement

শ্বশুর-শাশুড়িকে দুঃসংবাদটা প্রথম দিয়েছিলেন পুত্রবধূই। তিনিও পেশায় বিমান সেবিকা। গত মার্চ মাসে তাঁর এমএইচ৩৭০-তে ওঠার কথা ছিল। কিন্তু শেষমুহূর্তে এক সহকর্মীর সঙ্গে কাজ বদলে অন্য একটি বিমানের দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। এমএইচ৩৭০-র নিখোঁজ রহস্য ভেদ হয়নি এখনও। ২৩৯ যাত্রী-সহ তাঁর সহকর্মীটি এখনও নিরুদ্দেশ। সে দিন ভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন তরুণী। ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন ঈশ্বরকে। তবে জানতেন না, এক দিন তিনি যে ভাবে বেঁচে ফিরেছিলেন, কয়েক মাসের মধ্যে প্রায় একই ভাবে হারাতে হবে কাছের মানুষটিকে।

ঈশ্বরকে ক্রমাগত ধন্যবাদ দিচ্ছেন স্কটল্যান্ডের বাসিন্দা ইজি সিম। স্বামী-শিশুসন্তানকে নিয়ে কুয়ালা লামপুর বেড়াতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু অ্যামস্টারডামের স্কিপোল বিমানবন্দরে গিয়ে শোনেন এমএইচ ১৭ বিমানে একটা আসনও ফাঁকা নেই। জায়গা না-পেয়ে তখন অনেক হা-হুতাশ করেছিলেন তাঁরা। দুর্ঘটনার খবরটা পাওয়ার পর কী বলবেন, কয়েক মুহূর্তে বুঝেই উঠতে পারেননি তাঁরা। তরুণীর স্বামী ব্যারি সিম বললেন, “ভয়ে হাত-পা পেটের ভিতর সিঁধিয়ে গিয়েছিল...। কী যে ভাগ্য!” ইশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন ইজিও, “নিশ্চয়ই মাথার উপর কারও আশীর্বাদের হাত রয়েছে।” তবে স্পষ্টই জানালেন, আকাশপথে সফরের ভয়টা এখনও তাড়া করে বেড়াচ্ছে। নিজের মনেই বললেন, “মৃত্যু যদি পিছু নেয়!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন