উত্তর কলকাতার আভিজাত্য পূর্ন বনেদি বাড়ি গুলি র মধ্যে অন্যতম বৈষ্ণব দাস মল্লিক বাড়ি। আনুমানিক ২৬০ বছর আগে এই বাড়ি তে দুর্গাপূজার প্রচলন করেন বৈষ্ণব দাস মল্লিক নিজেই। এই বাড়িতে দেবী সিংহবাহিনী দশভূজা নয় বরং তিনি মহাদেবের অর্ধাঙ্গিনী হয়ে তার ই কোলে বিরাজ করেন। মা ত্রি- নয়নী নয় তার দুটি নয়ন। গণেশ ,কার্তিক ,লক্ষ্মী , সরস্বতী দেবী দুর্গার মূর্তি থেকে আকারে লম্বা । মায়ের পায়ের কাছে থাকে একটি সিংহ ,যে মা কে পাহারা দেয়। গণেশ আর কার্তিকের বাহন থাকলেও লক্ষ্মী ও সরস্বতী র কোনও বাহন নেই । কার্তিকের মাথায় রামমোহন টুপি ও কোচানো ধুতি তৎকালীন বাবু কালচারের পরিচয় বহন করে । এছাড়া ও এই বনেদি বাড়িতে দেবীর দুই সখি জয়া,বিজয়া ও দেবী রূপে পূজিতা । চলচিত্রে দেখা যায় চণ্ডী পুরাণ,বিষ্ণু পুরাণ ,বিষ্ণুর দশাবতার, ও দেবী দুর্গা র দশভূজা রূপের চিত্র। ষষ্ঠী র ১৫ দিন আগে থেকে অর্থাৎ জিতাষ্টমি থেকে পূজা শুরু হয় । বোধন আর ঘট পুজোর মধ্য দিয়েই পূজা শুরু হয় । অষ্টমী র দিন বাড়ির বয়জ্যেষ্ঠা গিন্নি ধুনো পুড়িয়ে থাকেন। অষ্টমী র অঞ্জলী র আগে ১০৮ ফুল দিয়ে পুরোহিত শতাঞ্জলি দিয়ে থাকেন ,তারপর হয় অষ্টমী র অঞ্জলী। নবমী তে ১মণ বাটা চিনি র ভোগ অপর্ন করা হয় মায়ের উদ্দেশ্যে। এই বাড়িতে অন্ন ভোগের রীতি নেই.
বাড়িতে তৈরী শুকনো খাবার খাজা ,গজা, বালুসাই, বিভিন্ন রকমের সন্দেশ , চন্দনক্ষীর প্রত্যেক দিন মায়ের ভোগ হিসাবে উৎসর্গ করা হয়। এই বাড়িতে কুমারী পূজা হয় না। আর হোম হয় বাড়ির ভিতে তৈরী করা গর্তে কোনও হোম কুণ্ডে নয়। দশমী তে এখনো বাহকের কাধে ই মা কে বিসর্জন এর উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। এই বনেদি বাড়ির দুর্গা পূজার অন্যতম বৈশিষ্ট্য এই যে পুজো তে বাড়ির প্রত্যেক টি পুরুষ সদস্য ( শিশু থেকে বয়জ্যেষ্ঠ) চেলি পরে অঞ্জলী দেন । আর মহিলা সদস্যরা নাকে নথ, পায়ে মল ও লাল রঙের শাড়ি পরে থাকেন। এই সময় কালো রঙের কোনও ছোঁয়া থাকবে না বাড়ির বউ দের শাড়িতে।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy