শরৎ-এর আগমন, আকাশে পেঁজা তুলোর মেঘ, আর সামনেই পুজো! এই সময়টাই তো নিজেদের নতুন করে সাজানোর। আর এই সাজের অনুপ্রেরণা যদি আসে বিদ্যা বালানের মতো অভিনেত্রীর কাছ থেকে, তা হলে তো কথাই নেই। তিনি শাড়ির প্রতি তাঁর অকৃত্রিম ভালবাসার জন্য পরিচিত।
নবরাত্রির প্রথম দিনে বিদ্যা বালান সেজে উঠেছিলেন ঘিয়ে আর সোনালি রঙের এক ঐতিহ্যপূর্ণ কসাভু শাড়িতে। কেরল রাজ্যের এই শাড়িটির বিশেষত্ব হল এর সাদা জমিন আর চওড়া সোনালি পাড়। শাড়ির সঙ্গে তিনি পরেছিলেন স্লিভলেস ব্লাউজ, যা তাঁর সাজে এনেছিল এক আধুনিকতার ছোঁয়া। তবে তাঁর গোটা সাজেই ছিল শান্ত, স্নিগ্ধ এক ভাব, যা মুহূর্তেই মনে করিয়ে দেয় রাজা রবি ভার্মার আঁকা দেবীদের কথা। মা শৈলপুত্রীর আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য নবরাত্রির এই দিন সাদা রঙের পোশাক পরা হয়। সাদা বিশুদ্ধতা, শক্তি আর শান্তির প্রতীক। বিদ্যার এই সাজ শুধু একটি ফ্যাশন স্টেটমেন্ট ছিল না, বরং তা ছিল উৎসবের গভীর অর্থ আর আধ্যাত্মিকতার এক সুন্দর মেলবন্ধন।
বিদ্যা বালান তাঁর সাজে অতিরিক্ত জাঁকজমক একদমই এড়িয়ে গিয়েছেন। কানে সোনালি স্টাড, হাতে আইভরি রঙের চুড়ি আর কপালে লাল টিপ। সব মিলিয়ে তাঁর সাজে ছিল এক অসাধারণ ভারসাম্য। তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, আন্তরিকতা আর ঐতিহ্য কখনও ফ্যাশন থেকে পিছিয়ে থাকে না। বরং তা আরও আকর্ষণীয় হয়।
কসাভুর ইতিহাসও কম আকর্ষণীয় নয়। কেরলের শতাব্দীপ্রাচীন এই বুনন আজও বালারামপুরম, চেন্দমঙ্গলম বা কুঠামপুল্লির তাঁতি পরিবারগুলির হাতে রয়ে গিয়েছে। জি-আই ট্যাগ পাওয়া এই শাড়িই বারবার মনে করিয়ে দেয়, ফ্যাশনের বাইরেও ঐতিহ্যের মানে কত গভীর।
পুজোর ক’টা দিন এখনই কড়া নাড়ছে। কারও মনে প্রশ্ন, নতুন শাড়ি না ফিউশন ড্রেস! উত্তরটা সহজ— বিদ্যার মতো হলে, এক ঝলক সাদামাঠা অথচ ঐতিহ্য মেশানো পোশাকই হতে পারে সেরা পছন্দ। লাল টিপের সঙ্গে সাদা শাড়ি বা সোনালি পাড়, হাতে সামান্য গয়না। পুজোর ঠাকুরদর্শন থেকে আড্ডা— সর্বত্র মানানসই।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।