অষ্টমীর অঞ্জলি হোক বা বিজয়ার বরণ, এমনকি বছরের অন্যান্য সময় যে কোনও পুজো-পার্বণে বাঙালি মহিলাদের অনেক সময়ই গরদের শাড়ি পরতে দেখা যায়। কিন্তু এই শাড়ির উৎপত্তি কোথায়, কেই বা প্রথম বানিয়েছিলেন এই শাড়ি, গরদ কথার অর্থ কী এ সব প্রশ্নের উত্তর জানা আছে? না থাকলে, গরদের শাড়ির সমস্ত খতিয়ান জেনে নিন।
গরদের শাড়ির উৎপত্তি
গরদের শাড়ি খোদ পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী শাড়ি। এই শাড়ি মূলত মুর্শিদাবাদ এবং বীরভূম জেলায় বোনা হয়ে থাকে। মুর্শিদাবাদের মির্জাপুরের তাঁতি মৃত্যুঞ্জয় সরকার গরদ শাড়ির উদ্ভাবক। সম্প্রতি কড়িয়াল গরদ শাড়ি জিআই অর্থাৎ জিওগ্রাফিকাল ইন্ডিকেশন তকমা পেয়েছে।
গরদ শাড়ি কীভাবে বোনা হয়? এর বৈশিষ্ট্য কী?
গরদ শাড়ি হল আদতে সিল্ক শাড়ি, বলা ভাল বাংলার নিজের পিওর সিল্ক। এটি মূলত মালবেরি সিল্ক দিয়ে তৈরি হয়ে থাকে। এই শাড়ির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল এর ভেলভেট পাড়। অর্থাৎ সামনের দিকে গরদের শাড়ির আঁচল হবে জেল্লাদার, উজ্জ্বল। আর উল্টোদিকে ম্যাট ফিনিশ। গরদের শাড়ির নানা রকমের পাড় হলেও, সাদা শাড়িতে লাল পাড় গরদের শাড়িকে কড়িয়াল গরদ বলা হয়ে থাকে। এই শাড়ির বুনন পদ্ধতিও আলাদা।
বর্তমানে সাদা সিল্কের সুতোকে নানা রং করে সেটা দিয়েও গরদের শাড়ি তৈরি হচ্ছে। এই ধরনের গরদের শাড়িকে বলে জাকার্ড গরদ।
গরদের শাড়ি কেন বলা হয় এটিকে?
গরদ শব্দটির অর্থ নিয়ে নানা তথ্য জানা যায়। কারও মতে, মালবেরি রেশমে যে আঠা থেকে সেটাকে দূর করার জন্য জল এবং সোডা মিশিয়ে এই সুতোকে সেদ্ধ করা হয়। এই কাঁচা রেশমের থেকে আঠা সরানোর যে পদ্ধতি সেটাকে ডিগমিং বলা হয়। তাঁতিরা বলেন গদ। সেই গদ বা গাদ থেকে গরদ কথাটির উৎপত্তি। আরেক মত অনুযায়ী গরদ কথার অর্থ সাদা, বা শুভ্র।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।