প্রেজেন্টস্
Knowledge Partner
Fashion Partner
Wedding Partner
Banking Partner
Comfort Partner

শরতের নীল আকাশ থেকে শিউলির গন্ধ, দুর্গাপুজো মানেই নস্ট্যালজিয়ার ঝাঁপি!

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এমন অনেক কিছুই হারিয়ে গিয়েছে, যার সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে শারদোৎসবের স্মৃতি।

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৬:০০
প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

বাঙালি জাতির কাছে দুর্গাপুজো কেবলমাত্র একটি উৎসব নয়। তা হল - একগুচ্ছ স্মৃতি আর নস্ট্যালজিয়া। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছুই বদলে গিয়েছে বটে, কিন্তু কিছু কিছু মুহূর্ত আজও আমাদের মনকে সেই পুরোনো দিনগুলিতে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। শারদোৎসবের মুহূর্তগুলি ঠিক তেমনই। কত পুরোনো কথাই না মনে পড়ে যায়!

বাংলা ক্যালেন্ডার:

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

বিশ্বায়নের যুগের আমরা সকলেই ইংরেজি সাল, তারিখ, মাসের হিসাবে অভ্যস্থ হয়ে পড়েছি। তাই, বাংলা ক্যালেন্ডারের দরকার কমেছে। ভাগ্যি ভালো দুর্গাপুজো আছে! বছরের এই সময়টায় অন্তত অধিকাংশ বাঙালি একবার হলেও মহালয়া থেকে বিজয়ার নির্ঘণ্ট জানতে তার স্মার্টফোনে ডিজিট্যাল বা অনলাইন বাংলা ক্যালেন্ডার 'সার্চ' করে। কারণ, বহু বাঙালি বাড়িতেই আজকাল আর বাংলা ক্যালেন্ডার থাকে না!

পাঁজি:

আগেকার দিনে বাঙালি গেরস্থ (হিন্দু) বাড়িতে একখানা পাঁজি অবশ্যই থাকত। কোনও শুভ অনুষ্ঠান হোক বা শ্রাদ্ধ, শান্তি - সেসবের দিনক্ষণ স্থির করতে ঠাকুরমশাইকে খবর দেওয়ার আগেই বাড়ির লোকজন পাঁজি দেখে আয়োজনের সম্ভাব্য তারিখ পেয়ে যেতেন। আজকাল ক'টা বাড়িতে খুঁজলে পাঁজি পাওয়া যাবে, সে এক কঠিন প্রশ্ন!

শরতের নীল আকাশ:

বিরাট-বিরাট কংক্রিটের ভিড় তখনও জমেনি বাংলার শহর, গঞ্জ, মফঃস্সলে। তাই আকাশ দেখা সহজ ছিল। শরতের আগমনী বার্তা দিত সেই আকাশ। ভাদ্র মাস শেষ হলেই আকাশের রং ক্রমে উজ্জ্বল আকাশি-নীলে বদলে যেত। বোঝা যেত, উমা আসছে। আকাশের সেই রংবদল আজও হয়। কিন্তু, তা ঢাকা পড়ে যায় কালো ধোঁয়া আর দূষণে। পেল্লায় সব বহুতল আড়াল করে দেয় পেঁজা তুলোর ভেলা!

কাশফুলের মেলা:

কাশফুলে ভরা মাঠ পেরিয়ে অপু-দুর্গা ছুটেছিল রেলগাড়ি দেখতে। আর, বাঙালিকে আজ সেই কাশফুল দেখতেই শহর ছাড়িয়ে প্রত্যন্ত গ্রামে ছুটতে হয়! যেখানে আজও ইতি-উতি কাশের দল বেঁচে থাকার লড়াই লড়ে। উন্নয়ন আর সভ্যতার জাঁতাকলে মাটির যে বড্ড আকাল। কাশের জঙ্গল থাকবে কোথায় বলো?

শিউলির গন্ধ:

ফ্ল্যাটবাড়ির সৌজন্যে বাঙালি বাড়ির উঠোন আজ বাড়ন্ত। আগে এই উঠোনেই আম, পেয়ারা ফলত। জবা, টগরের সঙ্গেই প্রত্যেক শরতে ফুটত শিউলি। সেই ফুল ঝরে পড়ত আটপৌঢ়ে উঠোনে। গন্ধে ম-ম করত গোটা বাড়ি। আজ বাঙালি আর শিউলির চারা পোঁতে না। বদলে ব্যালকনির টবে ভিনদেশি ক্যাকটাস লাগায়, দামি সার দেয়! সেখানে শিউলির ঘ্রাণ অলীক স্বপ্ন!

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

ছাতিম ফুল:

শিউলির মতোই শারদীয়ার আগমনী জানান দিত ফুলে ভরা ছাতিম গাছ। থোকা থোকা ছাতিম ফুল সবুজ পাতায় ঠাসা গাছগুলোকে যেন আলোয় ভরিয়ে দিত, গন্ধে চড়ত নেশা! আজকাল সেই ছাতিম গাছের সংখ্যাও ক্রমশ কমছে।

রেডিয়ো:

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

বাঙালি যতই বিশ্ব নাগরিক হয়ে উঠুক, মহালয়া আজও তাকে এই বাংলার মাটিতে নামিয়ে আনে। মনে করিয়ে দেয়, কোথায় রয়েছে তার শিকড়। আজও মহালয়ার ভোরে - ঘড়িতে চারটে বাজলেই বেজে ওঠে - 'আশ্বিনের শারদ প্রাতে...!' কিংবদন্তী বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের ভরাট কণ্ঠে বাঙালি যখন মহিষাসুরমর্দিনী শোনে, তখন তার চোখের কোনা আজও চিকচিক করে ওঠে। এই একটা দিনের জন্যই বাঙালি বাড়িতে অবহেলায় পড়ে থাকা রেডিয়োর ধুলো ঝাড়া হয়, তাকে সারিয়ে-সুরিয়ে মেরামত করা হয়! কারও কারও অবশ্য স্মার্টফোন বা অ্যালেক্সাতেও মহালয়া শুরু হয়!

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy