অনেকের ক্ষেত্রেই ভ্রমণের সময় বা ভিড়ের মধ্যে অসুস্থ বোধ করা, বমি বমি ভাব হওয়া বা বমি হওয়া একটি সাধারণ সমস্যা। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে 'মোশন সিকনেস'। সাধারণত শরীরের ভারসাম্য রক্ষাকারী অঙ্গগুলির সঙ্গে চোখ ও মস্তিষ্কের সংযোগের তারতম্য ঘটলে এমনটা হয়। এ দিকে, সামনেই পুজো! এই সময়ে যাতে আপনার ঘুরতে বের হওয়া বা আনন্দ করার ক্ষেত্রে এই ধরনের কোনও বাধা না আসে, তার জন্য কিছু টিপ্স এখানে দেওয়া হল।
ভ্রমণের সময় বমি ভাব কাটানোর উপায়
সঠিক আসনে বসুন: গাড়িতে সামনের দিকে বসতে চেষ্টা করুন এবং জানালার কাচ খুলে রাখুন। এতে আপনি টাটকা বাতাস পাবেন এবং বমি ভাব কমবে। যদি বাসে ভ্রমণ করেন, তাহলে সামনের দিকে জানালার ধারে বসার চেষ্টা করুন। ট্রেনের ক্ষেত্রেও জানালার ধারে বসা উচিত। এতে বাইরের দিকে তাকিয়ে থাকলে গতি এবং মস্তিষ্কের মধ্যে সংযোগ ঠিক থাকে।
ভ্রমণের আগে হালকা খাবার খান: ভারী, তৈলাক্ত, মশলাযুক্ত খাবার বা অতিরিক্ত তেল-ঝাল আছে, এমন খাবার ভ্রমণের আগে খাবেন না। হালকা কিছু খাবার, যেমন - বিস্কুট, টোস্ট বা ফল খেতে পারেন। খালি পেটে ভ্রমণ করাও উচিত নয়।
আদা ব্যবহার করুন: আদা ‘মোশন সিকনেস’-এর জন্য একটি কার্যকর প্রাকৃতিক প্রতিষেধক। ভ্রমণের আগে আদার কুচি চিবোতে পারেন বা আদা চা খেতে পারেন। আদার মধ্যে থাকা উপাদান পেটের গোলমাল দূর করতে সাহায্য করে।
লেবু বা লবঙ্গ কাছে রাখুন: বমি ভাব হলে লেবুর গন্ধ শুঁকতে পারেন। লবঙ্গের টুকরো মুখে রাখলেও উপকার পাওয়া যায়।
ফোন বা বইয়ে মনোযোগ দেবেন না: ভ্রমণের সময় ফোন ব্যবহার করা বা বই পড়ার মতো কাজগুলি এড়িয়ে চলুন। এতে বমি ভাব আরও বেড়ে যেতে পারে। চেষ্টা করুন দূরের কোনও বস্তুর দিকে তাকিয়ে থাকতে।
জল পান করুন: শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা খুব জরুরি। অল্প অল্প করে জল পান করতে পারেন।
চোখ বন্ধ রাখুন: যদি বমি ভাব খুব বেশি হয়, তবে কিছু ক্ষণ চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকুন বা বসেই আরাম করার চেষ্টা করুন।
অতিরিক্ত ভিড়ে কী করবেন?
শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম: অতিরিক্ত ভিড়ের মধ্যে অস্বস্তি হলে লম্বা শ্বাস নিন। নাক দিয়ে শ্বাস নিয়ে মুখ দিয়ে ধীরে ধীরে ছাড়ুন। এতে মন শান্ত হবে এবং বমি ভাব কমবে।
খোলা জায়গায় থাকার চেষ্টা করুন: ভিড়ের মাঝে দম বন্ধ লাগলে চেষ্টা করুন খোলা জায়গায় বা জানালার কাছে যেতে। টাটকা বাতাস মনকে সতেজ করে তোলে।
আগে থেকে প্রস্তুতি নিন: যদি আপনার জানা থাকে যে আপনাকে অতিরিক্ত ভিড়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে, তাহলে আগে থেকেই কিছু প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন। যেমন - আদার কুচি বা লবঙ্গ আপনার ব্যাগে রাখতে পারেন।
যদি এই পদ্ধতিগুলি অবলম্বন করার পরও আপনার সমস্যা না কমে, তা হলে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তিনি হয়তো ‘মোশন সিকনেস’-এর জন্য কোনও ওষুধ খাওয়ার বা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেবেন। পুজোয় সুস্থ থাকুন এবং আনন্দ করুন!
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।