পুজোর আগে মুখের জেল্লা বাড়াতে ‘গোল্ড ফেসিয়াল’ খুবই জনপ্রিয়। পার্লারে এর খরচ অনেক বেশি। তবে, কেউ চাইলে বাড়িতে সহজেই ‘গোল্ড ফেসিয়াল’ করাতে বা করতে পারেন। এতে খরচ যেমন বাঁচবে, তেমনি ত্বকও হবে উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত। চলুন জেনে নেওয়া যাক বাড়িতে ‘গোল্ড ফেসিয়াল’ করার পদ্ধতি, এর উপকারিতা এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপ্স।
‘গোল্ড ফেসিয়াল’ কারা করতে পারেন?
সাধারণত সব ধরনের ত্বকের জন্যই ‘গোল্ড ফেসিয়াল’ উপযোগী। তবে, যাঁদের ত্বক অতিরিক্ত সংবেদনশীল, ব্রণর সমস্যা আছে বা কোনও অ্যালার্জিজনিত সমস্যা রয়েছে, তাঁদের প্রথমে ত্বকের ছোট অংশে পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত। এ ছাড়াও, অল্প বয়সীদের জন্য ‘গোল্ড ফেসিয়াল’-এর প্রয়োজন হয় না। ৩০ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য এটি বেশি উপকারী।
‘গোল্ড ফেসিয়াল’-এর পাঁচটি ধাপ:
‘গোল্ড ফেসিয়াল’ সাধারণত পাঁচটি ধাপে করা হয়। ভাল ফল পেতে প্রতিটি ধাপ অনুসরণ করা জরুরি।
ক্লিনজ়িং:
প্রথমে একটি হালকা ক্লিনজ়ার দিয়ে মুখ ভাল ভাবে পরিষ্কার করে নিন। এতে মুখের সমস্ত ময়লা, তেল ও মেকআপ উঠে যাবে। এর পর একটি পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছে নিন।
স্ক্রাবিং:
এ বার ‘গোল্ড ফেসিয়াল’ কিটের স্ক্রাব ব্যবহার করুন। আঙুলে অল্প পরিমাণ স্ক্রাব নিয়ে মুখের ত্বকে এবং গলায় হালকা হাতে ২-৩ মিনিট বৃত্তাকার গতিতে ম্যাসাজ করুন। বিশেষ করে টি-জোন (কপাল, নাক ও চিবুক) এবং নাকের পাশে ভাল ভাবে ম্যাসাজ করুন। এর পর ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। স্ক্রাবিং ত্বকের মৃত কোষ দূর করে ত্বক মসৃণ করে তোলে।
ম্যাসাজ:
এটি ফেসিয়ালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। গোল্ড ম্যাসাজ ক্রিম বা জেল নিয়ে ত্বকে এবং গলায় ভাল ভাবে ম্যাসাজ করুন। আঙুলের ডগা দিয়ে উপর থেকে নীচের দিকে এবং ভিতর থেকে বাইরের দিকে ম্যাসাজ করুন। এতে মুখের রক্ত সঞ্চালন বাড়ে এবং ত্বকে একটি সোনালি আভা আসে। প্রায় ১০-১৫ মিনিট ম্যাসাজ করার পর একটি ভেজা টিস্যু বা স্পঞ্জ দিয়ে মুখ মুছে নিন।
ফেস প্যাক:
এ বার গোল্ড ফেস প্যাকটি মুখে এবং গলায় সমান ভাবে লাগান। চোখের চারপাশের সংবেদনশীল ত্বক বাদ দিন। ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করুন, যত ক্ষণ না প্যাকটি সম্পূর্ণ শুকিয়ে যায়। প্যাক শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জল দিয়ে আলতো ভাবে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বক টানটান করে এবং রন্ধ্রের মুখ ছোট করে।
ময়েশ্চারাইজ়িং:
ফেসিয়ালের শেষ ধাপ হল ময়েশ্চারাইজ়ার ব্যবহার। গোল্ড ফেসিয়াল কিটে দেওয়া ময়েশ্চারাইজ়ার বা আপনার পছন্দের যে কোনও ময়েশ্চারাইজ়ার নিয়ে হালকা হাতে মুখে লাগান। এটি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং ফেসিয়ালের জেল্লা দীর্ঘস্থায়ী করে।
গোল্ড ফেসিয়ালের পাঁচটি লাভ:
তাৎক্ষণিক ঔজ্জ্বল্য: গোল্ড ফেসিয়াল ত্বক সঙ্গে সঙ্গে উজ্জ্বল করে তোলে এবং ত্বকে একটি সোনালি আভা নিয়ে আসে। পুজোর মতো উৎসবে এটি খুবই উপযোগী।
তারুণ্য ধরে রাখে: এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে। যা সূক্ষ্ম রেখা এবং বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে।
রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি: ম্যাসাজের ফলে মুখের রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। যা ত্বককে সুস্থ ও প্রাণবন্ত রাখতে সাহায্য করে।
কালো দাগ দূর করে: নিয়মিত ‘গোল্ড ফেসিয়াল’ করলে ত্বকের কালো দাগ কমতে পারে।
ময়লা ও টক্সিন দূর করে: এটি ত্বকের গভীর থেকে ময়লা, তেল এবং টক্সিন বের করে ত্বককে পরিষ্কার রাখে।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।