কড়া নাড়ছে পুজো। শুরু হয়ে গিয়েছে নতুন জামা, জুতো কেনা। এই সময়টায় সবার মনে একটা চাপা উত্তেজনা থাকে। যার একটা বড় অংশ জুড়ে থাকে নিজেকে নতুন করে সাজিয়ে তোলার ইচ্ছে। বন্ধুদের ভিড়ে একটু তাক লাগানো, নতুন পোশাকে নিজেকে আরও সুন্দর দেখানো, বাড়তি মেদ ঝরিয়ে ফেলা— ইচ্ছের তালিকাটা ক্রমাগত বড় হয়ে চলে।
মেদ ঝরাতে অনেকেই তাই শেষ মুহূর্তে জিমে ছোটেন। কেউ বা বাড়িতেই জোরকদমে শুরু করে দেন শরীরচর্চা। কিন্তু ফিটনেস বৃদ্ধি বা ছিপছিপে হয়ে ওঠা তো আর স্বল্প মেয়াদী প্রক্রিয়া নয়, এটা আসলে একটা লম্বা সফর। তাই মাত্র ক'দিনের চেষ্টায় রাতারাতি ম্যাজিকের মতো ফল পাওয়া সম্ভব নয়। তবে এই তাগিদটাকেই কাজে লাগানো যেতে পারে, যা ভবিষ্যতের জন্য একটা ভাল অভ্যাস তৈরি করে দেবে।
যাঁরা বছরভর ব্যায়াম করেন, তাঁরা সুস্থ এবং ফিট থাকেন। তবে যাঁরা এই শেষ মুহূর্তে কিছু একটা করতে চাইছেন, তাদের জন্যও রয়েছে কিছু সহজ টিপ্স।
১। যদি এখন থেকেই রোজ জগিং বা দৌড় শুরু করেন, তা হলে হয়তো পুজোয় খুব বেশি মেদ ঝরবে না। কিন্তু আপনার দমের উন্নতি হবে। আর ঘাম ঝরিয়ে ক্যালরি পোড়ানোর যে আনন্দ, সেটা এক বার পেয়ে গেলে কিন্তু ছাড়তে ইচ্ছে করবে না।
২। যদি আপনার আবাসন কমপ্লেক্সে সুইমিং পুল বা সাইক্লিংয়ের ব্যবস্থা থাকে, তবে তো কথাই নেই। সাঁতার এমন একটা দারুণ ব্যায়াম, যা পুরো শরীরের গঠন ঠিক করতে সাহায্য করে। আধ ঘন্টা সাইক্লিং করলেও প্রচুর ক্যালোরি ঝরে। যাঁরা জিমে যাওয়ার সময় পান না, তাঁরা বাড়িতেই ওয়াল স্কোয়াট, প্ল্যাঙ্ক, ডেড বাগ-এর মতো কিছু সহজ ব্যায়াম করতে পারেন। এগুলি মাংসপেশিকে শক্তিশালী করে এবং মেদ ঝরাতে সাহায্য করে।
৩। যাঁরা রোজ জিমে যেতে পারেন না, তাঁদের জন্য কিছু ঘরোয়া পদ্ধতির কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। এই ব্যায়ামগুলো ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে সকলের জন্যই উপকারী:
- ওয়াল স্কোয়াট: দেওয়ালে হেলান দিয়ে নীচে একটা রবারের বল রেখে বারবার তার উপরে বসা এবং উঠে দাঁড়ানো। বল না থাকলে একটা চেয়ার রেখেও এই ব্যায়াম করা যায়। খেয়াল রাখতে হবে, এই স্কোয়াট করার সময়ে আপনার নিতম্ব যেন চেয়ার স্পর্শ করে। এতে হাঁটুর পেশির জোর বাড়ে।
- পেটের মেদ কমানোর ব্যায়াম: প্ল্যাঙ্ক, সাইড প্ল্যাঙ্ক, ডেড বাগ, বার্ড ডগ-এর মতো কিছু সাধারণ ব্যায়াম ২০-৩০ সেকেন্ড করে রোজ করা যায়। এতে মাংসপেশির জোর বাড়বে, সঙ্গে মেদও ঝরবে।
- ডাম্বল: ঘরে ডাম্বল কিনে সহজ কিছু শরীরচর্চা করতে পারেন সকলেই।
৪। তবে শুধু ব্যায়াম করলেই হবে না। পাশাপাশি, খাবারের দিকেও নজর দেওয়া খুব জরুরি। ফ্যাট জাতীয় খাবার, যেমন ময়দা বা অতিরিক্ত তেল কম খান। প্রচুর জল আর জলীয় ফল, যেমন তরমুজ, মুসম্বি খেতে হবে নিয়মিত। কারণ শরীর থেকে বর্জ্য বার করে দিতে জলের কোনও বিকল্প নেই। এর সঙ্গে চাই পর্যাপ্ত ঘুম। মনে রাখবেন, সুস্থ শরীর শুধু পুজোয় আনন্দ করার জন্যই নয়, আপনার সারা জীবনের জন্য সবচেয়ে বড় সম্পদ এটি। তাই পুজোয় হইহুল্লোড়ের পাশাপাশি ভিতর থেকে সুস্থ থাকতে গেলে জীবনযাপনের দিকে নজর দেওয়া ভীষণ ভাবে জরুরি।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।