দরজায় কড়া নাড়ছে পুজো। শরতের আকাশে হালকা মেঘের আনাগোনা, শিউলি ফুলের মিষ্টি গন্ধ আর মা দুর্গার আগমনীর সুর— সব মিলিয়ে এক পবিত্র আমেজ। বাড়ি ঘর পরিষ্কার, নতুন জামাকাপড়, আলপনা – সবই সাজসজ্জার অংশ। কিন্তু একটা জিনিস কি চোখ এড়িয়ে যাচ্ছে? ঘুমের সঙ্গী সেই পুরনো বালিশ। বছরের পর বছর ধরে ব্যবহার করা বালিশই কি ঘরের শান্তি ও পুজোর পবিত্রতার পথে অদৃশ্য বাঁধা হয়ে উঠছে না?
বাস্তুশাস্ত্র বলছে, পুরনো বা ভাঙা জিনিস ঘরে রাখলে জমে ওঠে নেতিবাচক শক্তি। বিশেষ করে বালিশ, যেখানে বছরের পর বছর জমে শরীরের ঘাম, তেল আর ধুলো। এতে এক অস্বাস্থ্যকর শক্তি তৈরি হয়, যা পুজোর ঘরের বিশুদ্ধতার সঙ্গে একেবারেই যায় না।
পূজোর সময়ে সবকিছুই হতে হয় সতেজ আর পরিষ্কার। দেবতাকে দেওয়া প্রসাদ থেকে শুরু করে ফুল – সবই নতুন। সেখানে পুরনো বালিশ ব্যবহার মানে পবিত্র পরিবেশে অশুদ্ধতার ছাপ টেনে আনা।
ধুলো-মাইটে ভরা পুরনো বালিশ শুধু শক্তি নয়, শরীরের জন্যও ক্ষতিকর। অ্যালার্জি থেকে শ্বাসকষ্ট – অসুস্থ শরীর নিয়ে পুজো করলে মনোযোগী হওয়া কঠিন। ভাল ঘুমই আনে শান্ত মন। পুরনো বালিশ সেই ঘুমে বাধা দেয়, ফলে পুজোর সময় মন থাকেতে পারে ক্লান্ত।
আধ্যাত্মিক বিশ্বাস বলছে, পুরনো জিনিস ব্যবহার মানে অতীতের বোঝা টেনে নিয়ে চলা। পুজো যেখানে নতুন সূচনার প্রতীক, সেখানে পুরনো বালিশ হয়ে ওঠে বাঁধা। শুধু তাই নয়, পুরনো জিনিস জমিয়ে রাখলে ঘরে সমৃদ্ধির পথ আটকে যায়। আর্থিক উন্নতি কিংবা সম্পর্কের মধুরতা—সবেতেই প্রভাব পড়ে।
দম্পতি বা পরিবারের মধ্যে সৌহার্দ্য যেখানে পুজোর মূল উদ্দেশ্য, সেখানে পুরনো বালিশ হতে পারে অকারণ কলহের কারণ। নতুন বালিশ শুধু ঘুম নয়, মনেও আনে নতুন উদ্যম। সৃজনশীলতা বাড়ে, জীবনে আসে পরিবর্তনের বার্তা।বাস্তু শাস্ত্রে স্পষ্ট বলা আছে, পুরনো কাপড় বা জিনিস ঘরে অশুভ প্রভাব আনে। পুজোর শুভ শক্তিকে তা দুর্বল করে দেয়।
আর শেষ কথা—পুজো মানে আত্মিক উন্নতি। পবিত্রতা ধরে রাখাই সেখানে মূল। পুরনো বালিশ সেই পথে দাঁড়ায় অন্তরায় হয়ে।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।