প্রতি বছর দুর্গাপুজো এলেই তাঁর বাড়িতে সাংবাদিক, হালে ডিজিট্যাল কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের ভিড় শুরু হয়ে যায়। তবুও তিনি বিরক্ত হন না। প্রবীণা এই মানুষটি হাসিমুখে কথা বলেন সকলের সঙ্গে। বারবার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে করা একই প্রশ্নের উত্তরও দেন সহাস্যে! যাঁর কথা বলছি, তিনি প্রখ্য়াত শিল্পী রেবা পাল। অশীতিপর এই বৃদ্ধার শিল্পচর্চা বাকিদের অবাক করবে, আবার অনুপ্রেরণাও দেবে।
সংগৃহীত চিত্র।
রেবা মূলত চালচিত্র আঁকেন। গত কয়েক দশক ধরে তিনি নদিয়ার কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণির বাসিন্দা। এখানেই তাঁর শ্বশুরবাড়ি। মাত্র ১৬ বছর বয়সে এই বাড়িতে বধূ বেশে এসেছিলেন তিনি। তারপর থেকে এখানেই বাস।
সংগৃহীত চিত্র।
তাঁর স্বামীও ছিলেন বিখ্যাত চিত্রকর। নাম - ষষ্ঠী পাল। তাঁর কাছেই প্রথম পটচিত্র বা চালচিত্র আঁকার পাঠ নিতে শুরু করেছিলেন কিশোরী রেবা। তারপর কেটে গিয়েছে বহু দশক। আজও রং, তুলি ছাড়তে পারেননি তিনি।
শিল্পী হিসাবে রেবা আজ নামজাদা হলেও সংসারের হাল খুব একটা ভালো নয়। বাড়ির অবস্থা জরাজীর্ণ। কিন্তু তাতেও কোনও আফশোস নেই তাঁর। রেবা চান, যত দিন পারবেন, এভাবেই চালচিত্র এঁকে যাবেন। আমরণ প্রয়াত স্বামীর ভিটেতেই জীবন কাটাতে চান তিনি।
সংগৃহীত ছবি।
রেবার চালচিত্রের বিষয় মূলত পৌরাণিক। তাঁর হাতের যাদুতে যেন জীবন্ত হয়ে ওঠেন স্বর্গের দেবদেবীরা। একের পর এক তুলির টানে নানা পৌরাণিক কাহিনি চালচিত্রে ফুটিয়ে তোলেন তিনি। এভাবেই বাংলার এক প্রাচীন শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার আপ্রাণ প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন এই আটপৌঢ়ে গুণী মানুষটি।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।