পুষ্পাঞ্জলি, কুমারী পুজো আর সন্ধিক্ষণে সন্ধিপুজো– এই তিন নিয়েই মহাষ্টমী। তবে কিছু ব্যতিক্রমী আচারও রয়েছে বাংলার বিভিন্ন বনেদি বাড়িতে। এমন বাড়িও রয়েছে, যেখানে সন্ধিপুজোই হয় না। খাস কলকাতার মানিকতলার ঘোষবাড়ির দুর্গাপুজো যেমন। ১৮৫৬ সালে ঘোষ বাড়ির পূর্বপুরুষ গিরিশচন্দ্র ঘোষের (নাট্যকার, নট গিরিশ ঘোষ নন) হাতে এই পুজোর সূচনা। শোনা যায়, কোনও এক বছর ঘোষবাড়ির গুরুদেব সন্ধিপুজো চলাকালীন প্রয়াত হন। তার পর থেকেএ বাড়িতে সন্ধিপুজো বন্ধ। তার বদলে পরিবারের সকলের কল্যাণ কামনায় আয়োজিত হয় কল্যাণী পুজো। কল্যাণী পুজোয় ১০৮ প্রদীপ জ্বালানো হয়। আর অষ্টমীর আরতির সময়ে জ্বলে ৩৬৫টি প্রদীপ। বছরের ৩৬৫ দিনের সন্ধেবাতির প্রতীক হিসেবে এই রীতি পালন করে চলেছে ঘোষবাড়ি। কোনও কারণে কোনও দিন সন্ধ্যায় বাতি না পড়লে যাতে বিঘ্ন না ঘটে, তার জন্যই এই আচার।
সন্ধিপুজোয় পদ্ম ফুল আবশ্যক। কিন্তু কলকাতার এক বাড়িতে সন্ধিপুজো হয় অন্য ফুলে। উত্তর কলকাতার নীলমণি মিত্র স্ট্রিটের মিত্র বাড়ির সন্ধিপুজোয় এমন ব্যতিক্রম দেখা যায়। সেখানে দেবীকে ১০৮টি অপরাজিতা ফুল নিবেদন করা হয়।
দামোদরের তীরবর্তী নবখণ্ড গ্রামে আবার শালুক ফুল ছাড়া সন্ধিপুজোর বলি হয় না। সন্ধিপুজোয় বলির আগে খাঁ পরিবারের কোনও এক সদস্য নির্দিষ্ট পুকুরে ডুব দিয়ে একটি সাদা শালুক ফুল তুলে আনেন। এক ছুটে সেই ফুল মন্দিরে নিয়ে যেতে হয়। সাদা শালুকের তিনটি পাপড়ি রক্ত চন্দন মাখিয়ে রাখা হয় দেবী দুর্গার পায়ে। ফুলের দল মাটিতে পড়া মাত্র বলিদান আরম্ভ হয়। নবখণ্ডের মাজি, চট্টোপাধ্যায় এবং খাঁ– তিন পরিবার মিলে একটিই দুর্গাপুজো করে।
বীরভূমের লাভপুরের বাজিকরদের শীতলগ্রামেও একেবারে অন্য রকম ভাবে সন্ধিপুজো হয়। এক-দেড়শো বছর আগে ওড়িশা থেকে বাজিকরদের এই গ্রামে নিয়ে এসেছিলেন বীরভূমের জমিদার। তার পর থেকে তাঁরা রয়ে গিয়েছেন বঙ্গে। সারা বছর বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ঘুরে নানান ধরনের বাজির খেলা দেখান। শরতে দুগ্গা পুজোর আয়োজন করেন। বাজিকরদের পুজোয় মন্ত্রোচ্চারণ হয় বাংলায়। অষ্টমী পুজোর দিন সন্ধ্যায় দেবীর থানে সিঁদুর ছড়িয়ে দেওয়া হয়। উপরে নতুন সাদা কাপড় দিয়ে ঢাকা দেওয়া হয়। চলে প্রার্থনা। তাঁদের বিশ্বাস, সাদা কাপড়ে ফুটে উঠবে দেবীর পায়ের ছাপ। সেই ছাপ ফুটে ওঠার পরেই শুরু হয় সন্ধিপুজো।
‘আনন্দ উৎসব ২০২৫’-এর সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন একাধিক সহযোগী। প্রেজ়েন্টিং পার্টনার ‘মারুতি সুজ়ুকি অ্যারেনা’। অন্যান্য সহযোগীরা হলেন ওয়েডিং পার্টনার ‘এবিপি ওয়ানস্টপ ওয়েডিং’, ফ্যাশন পার্টনার ‘কসমো বাজ়ার’, নলেজ পার্টনার ‘টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি’, ব্যাঙ্কিং পার্টনার ‘ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’, কমফোর্ট পার্টনার ‘কার্লন’।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।