প্রেজেন্টস্
Knowledge Partner
Fashion Partner
Wedding Partner
Banking Partner
Comfort Partner

বাঁকুড়ার বিশ্বকর্মাবংশীয় কর্মকারদের হাতে পুজো পায় পঞ্চমুখী, দশভুজ বিশ্বকর্মা

বাংলার বিশ্বকর্মা এক কন্দর্পকান্তি তরুণ। তাঁর ব্যতিক্রমী মূর্তিও পূজিত হয় বাংলায়। বাঁকুড়ার বিশ্বকর্মাবংশীয় ব্রাহ্মণ কর্মকারদের হাতে পূজিত হন পঞ্চমুখী বিশ্বকর্মা।

সৌভিক রায়

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৫:০৮
প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

গোটা বাংলায় ভাদ্রের শেষ দিনে বিশ্বকর্মার পুজো করা হয়। তিনি কন্দর্পকান্তি তরুণ। তাঁর বাহন হস্তী। চার হাতে দাঁড়িপাল্লা, হাতুড়ি ইত্যাদি ধারণ করেন তিনি। পুরোদস্তুর শ্রমজীবী ভাবনার প্রতীক হয়ে উঠেছে তাঁর এই রূপ। এই রূপেই তিনি অধিক জনপ্রিয়। প্রচলিত বিশ্বকর্মার ব্যতিক্রমও রয়েছে বঙ্গে। বহুত্ববাদের বাংলার ভিত্তিই বৈচিত্র। যেমন হুগলির তন্তুবায়দের বিশ্বকর্মা ঘোটকের পৃষ্ঠে অবস্থান করেন, বাঁকুড়ার সূত্রধরদের বিশ্বকর্মার বাহন আবার হংসরাজ। ‘মণ্ডনসূত্রধার’ অনুসারে বিশ্বকর্মা হংস বাহনারূঢ়। বাঁকুড়ায় বিশ্বকর্মা ব্যতিক্রমী মূর্তিতে পূজিত হন।

বাঁকুড়া জেলার কাপিষ্টা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত শালবেদিয়া গ্রামের কর্মকার সমাজ বিশ্বকর্মার পঞ্চমুখ ও দশভুজ রূপের পুজো করেন। দশ হাতে থাকে বেদ, সুদর্শন চক্র, ত্রিশূল, গদা, শঙ্খ, হাতুড়ি, তুলাদণ্ড, কমণ্ডলু। তাঁর বাহন হংসরাজ। বাঁকুড়ার পঞ্চমুখী বিশ্বকর্মার দু’পাশে থাকেন, দুই দেবী। লক্ষ্মী ও সরস্বতী। কর্মকাররা উপবীত ধারণ করে দেব শিল্পী বিশ্বকর্মার পুজোয় পৌরহিত্য করেন। কর্ণাটক, তামিলনাড়ু মূলত দক্ষিণ ভারতে এমন পাঁচ মুখ বিশিষ্ট দশ হাতের বিশ্বকর্মা পুজোর চল রয়েছে।

বিশ্বকর্মার মানস সন্তান পাঁচটি। এক একটি সন্তান সূত্রধর, কর্মকার ইত্যাদির মতো এক একটি জাতির প্রতীক। প্রত্যেকেই বিশ্বকর্মাবংশীয় ব্রাহ্মণ। যাঁরা বিশ্বকর্মাবংশীয় ব্রাহ্মণ হিসাবে পরিচিত, তাঁরা পুজো করার অধিকারী। তাঁদের উপবীত থাকে। শালবেদিয়া গ্রামের মাধব কর্মকার পঞ্চমুখী বিশ্বকর্মার পুজো করেন। তিনি প্রায় চল্লিশ বছর যাবৎ পুজো করছেন। তাঁরা বাবা, পিতামহরাও পুজো করেছেন। এই পুজোর বয়স প্রায় একশো বছর ছুঁইছুঁই। শালবেদিয়া ছাড়াও বাঁকুড়ায় তিনটি পঞ্চমুখী বিশ্বকর্মার পুজো হয়। বড়জোড়া থানার কোচকুন্দা গ্রামে অতীতে একটি পুজো হলেও, এখন ভাগ হয়ে দুটো পুজো হয়। মুরগাথলে আর একটি পুজো হয়।

ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ মতে, প্রজাপতি ব্রহ্মার নাভি থেকে বিশ্বকর্মার জন্ম। আবার বিশ্বকর্মা পুরাণ অনুসারে, আদিনারায়ণ প্রথমে ব্রহ্মা এবং পরে বিশ্বকর্মার সৃষ্টি করেন। বরাহ পুরাণে রয়েছে, ভগবান ব্রহ্মা বিশ্বকর্মাকে সৃষ্টি করেছিলেন ত্রিভুবন নির্মাণের পরিকল্পনাগুলির বাস্তবায়নের জন্য। আদতে বিশ্বকর্মা হল এক ধরনের উপাধি। যাঁরা কারুকার্যের সর্বোচ্চ জ্ঞানের অধিকারী, তাঁরাই বিশ্বকর্মা। বিরাট বিশ্বকর্মা, ধর্মবংশী বিশ্বকর্মা, অঙ্গিরাবংশী বিশ্বকর্মা, সুধন্ব বিশ্বকর্মা, ভৃগুবংশী বিশ্বকর্মা এই পাঁচজনই সম্ভবত পঞ্চমুখী বিশ্বকর্মার এক একটি মুখের প্রতীক। কালে কালে এঁরাই হয়তো সূত্রধর, স্বর্ণকার, কর্মকারের মতো এক একটি জাতির প্রতীক হয়ে উঠেছে।

তথ্যঋণ

মাধব কর্মকার ও মনোজিৎ দাস

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

Vishwakarma Puja
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy