বাড়ির আশেপাশে যে মন্দিরে গিয়েছেন সেখানে গিয়ে কখনও খেয়াল করেছেন যে প্রতিটি মন্দিরের শিবলিঙ্গ এক দিকে মুখ করেই রাখা। কখনও প্রশ্ন জেগেছে কেন এমনটা? এর নেপথ্যে রয়েছে এক বিশেষ কারণ।
শিবলিঙ্গের গৌরীপট্ট অর্থাৎ যা যোনির প্রতীক, সেটি সব সময়ই উত্তর দিকে মুখ করে রাখা হয়ে থাকে। তাই বাড়ি হোক বা মন্দির, শিবলিঙ্গের গৌরীপট্ট সব সময়ই উত্তর দিক করেই মুখ করে থাকে। বা রাখা উচিত।
এ বার প্রশ্ন আসতেই পারে কী এই গৌরীপট্ট? শিবলিঙ্গে জল ঢালার পর যে অংশের মাধ্যমে জল বেরিয়ে যায়, অর্থাৎ লম্বাটে মতো জায়গাটি সেটাকেই গৌরীপট্ট বলা হয়ে থাকে। এটির মাধ্যমে নারী-পুরুষের অবিচ্ছেদ্য ঐক্য এবং জীবন সৃষ্টির উৎসকে বোঝায়।
শিবলিঙ্গের একদম নিচের অংশ, যেটা মাটির নিচে থাকে এবং চারমুখী হয় সেটা ব্রহ্মার প্রতীক। এর পর যেটি বেদীমূল হিসেবে কাজ করে, বা আটমুখী অংশ যেটি সেটা বিষ্ণুর স্বরূপ। এবং উপরের অর্ধবৃত্তাকার অংশ যেটি দেখা যায় সেটাকেই দেবাদিদেব মহাদেবের প্রতীক হিসেবে পুজো করা হয়।
ফলে অতীতে যখন কেউ দিক ভুল করতেন, কোন দিকে যাত্রা করতে হবে দিশা খুঁজে পেতেন না তখন কাছেপিঠে শিব মন্দির থাকলে সহজেই দিক নির্ণয় করা সম্ভব এবং সহজ হতো। এই বিষয়ে ব্যাখ্যা করে লেখক গৌতম বসু মল্লিক বলেন, ''শিবলিঙ্গের এই যে গৌরীপট্ট সেটা সব সময় উত্তর দিকে থাকবে। অর্থাৎ যদি কিছু না থাকে, সেখানে দাঁড়িয়ে যদি একটা শিব মন্দির যদি পাওয়া যায় তা হলেও দিক নির্ণয় সম্ভব হবে।''
ফলে এ বার থেকে আপনার বাড়ির শিবলিঙ্গের গৌরীপট্ট আর ভুল দিকে না রেখে, উত্তর দিকে মুখ করেই রাখবেন। এমনকী কোন দিকটি উত্তর না বুঝলে, কাছের মন্দিরে গিয়ে শিবলিঙ্গ দেখলেই বুঝতে পারবেন।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।