প্রেজেন্টস্
Knowledge Partner
Fashion Partner
Wedding Partner
Banking Partner
Comfort Partner

কাদা-মাটির গান থেকে মহামারী দেবীর পুজো, কী কী হয় মহানবমীতে?

সেকালের কলকাতায় নবমীর বলিদানের পরে বলির রক্তে ভেজা মাটিতে চলত কাদা-মাটির খেলা। তার পরে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে গাওয়া হতো কাদা-মাটির গান।

সৌভিক রায়

শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২৫ ০৯:৩৩
প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

মহানবমীর বলিদানের রক্তে ভিজে যেত মাটি। রক্তে ভেজা কাদা-মাটি মেখে নাচ-গান, খিস্তি-খেউড়, বলি দেওয়া মহিষের মুণ্ড নিয়ে টহল দেওয়া– পুরনো কলকাতার পুজোয় এমন নানা জিনিস চলত। ‘কলিকাতার ইতিবৃত্ত’-এ দত্তবাড়ির প্রাণকৃষ্ণ দত্ত এর পূর্ণাঙ্গ বর্ণনা দিয়েছেন। যার অনেকটা এমন– নবমীর দিন বলির পরে আরতি মিটলে বলির রক্তে প্লাবিত প্রাঙ্গণে মল্লযুদ্ধ ও নানা রকমের কসরৎ, ব্যায়াম হত। মোষের মুণ্ডু, আখ, কুমড়ো, লেবু নিয়ে কাড়াকাড়ি করতে করতে লোকজন রক্তে ভেজা মাটিতে গড়াগড়ি দিত। এক জন উবু হয়ে বসে পেট ও উরুদ্বয়ের মধ্যে একটা নারকেল ধরে রাখত। আট-দশজন বীর সেই নারকেল টেনে নেওয়ার চেষ্টা করত। তার পরে শুরু হতো কাদা-মাটির গান। বলির পরে যে বাড়িতে বলি হয়েছে, সেই বাড়ির লোক বলির রক্ত আর কাদামাটি গায়ে মেখে মোষের কাটা মুণ্ড মাথায় করে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে গান করত। কেবল মহিষ নয়। পাঁঠা, ঘোড়ার কাটামুণ্ডু মাথায় নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় বেড়ানোর চল ছিল।

বাড়ির ঠাকুরদারা তাঁদের সমবয়সি বন্ধু ও নাতিদের নিয়ে মুণ্ড মিছিলে গান গাইতে গাইতে যেতেন। এই গানই ‘কাদা মাটি’র গান নামে পরিচিত ছিল। আদতে ছিল টপ্পার সুরে খেউড়! অতি অশ্লীল ও অশ্রাব্য গান। কোনও রাখঢাক করে গাওয়া হতো না। এমনকী মেয়ে-বৌদের সামনেও গান চলত। গানের কলি মনে রাখার ব্যবস্থা ছিল। ঠাকুরদাদের হাতে থাকত খাতা। তাতে লেখা থাকত গানের কথা। কাদা-মাটির গানের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন সেকালের ধনীরা। মহেন্দ্রনাথ দত্তের লেখা থেকে জানা যায়, সেকালে লোকে কাদা-মাটির গান শুনে আনন্দ পেত।

শুধু কলকাতায় নয়, কলকাতার বাইরেও কাদা-মাটি খেলার প্রচলন ছিল। তবে অশ্লীল গানের অংশটি হয়তো ছিল না। রানাঘাটের সিংহবাড়িতে আজও এই রেওয়াজ অক্ষত রয়েছে। বিশ্বাস পাড়ার পালবাড়িই সিংহবাড়ি নামে খ্যাত, এদের পুজোর বয়স আড়াইশো বছর। অতীতে নবমীর দিনে এখানে ছাগ বলি হতো, তবে এখন তা বন্ধ। প্রাণী বলির আদলে চালকুমড়ো, আখ, কলা বলি দেওয়া হয়। নবমীর দিন এ বাড়িতে কাদা-মাটি খেলা হয়। হোলির রঙের মতো কাদা-মাটি খেলা হয়।

পাশাপাশি, মহানবমীর মধ্যরাতকে মহামারী দেবীর পুজোর জন্যে বেছে নেওয়া হয়েছে। বাঁকুড়ার জামকুড়ি গ্রামের রাজরাজেশ্বরী মন্দিরে মহামারী পটের পুজো করা হয় নবমীর গভীর রাতের নিভৃত ক্ষণে। কলেরার প্রকোপ থেকে রেহাই পেতে এই মহামারী দেবীর পুজো শুরু হয়েছিল। বিষ্ণুপুরে মল্লরাজাদের মৃন্ময়ী মন্দিরে

নবমীর মধ্যরাতে খচ্চরবাহিনী বা মহামারীর দেবীর পুজো হয়। কথিত, মহামারী থেকে প্রজাদের বাঁচাতে এই পুজোর প্রচলন করেন মল্লরাজ। দেবী পটে পুজো পান। রাজবাড়িতে এই পট গোপনে রাখা থাকে। নবমীর গভীর রাতে রাজবাড়ি থেকে পট নিয়ে আসা হয়। রাজপুরোহিত পটের দিকে পিছন ফিরে বসে বাম হাতে পুজো করেন। সেই সময়ে শুধুমাত্র রাজ পরিবারের সদস্য ও রাজপুরোহিত ছাড়া মন্দিরে আর কেউ থাকেন না। পুজো শেষ হলে রাতেই সেই পট রাজবাড়ির গোপন কক্ষে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। নবমী নিশি পেরিয়ে প্রভাত হওয়া মানেই উমার ফেরার পালা। আবার বছরব্যাপী প্রতীক্ষার শুরু।

‘আনন্দ উৎসব ২০২৫’-এর সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন একাধিক সহযোগী। প্রেজ়েন্টিং পার্টনার ‘মারুতি সুজ়ুকি অ্যারেনা’। অন্যান্য সহযোগীরা হলেন ওয়েডিং পার্টনার ‘এবিপি ওয়ানস্টপ ওয়েডিং’, ফ্যাশন পার্টনার ‘কসমো বাজ়ার’, নলেজ পার্টনার ‘টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি’, ব্যাঙ্কিং পার্টনার ‘ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’, কমফোর্ট পার্টনার ‘কার্লন’।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy