প্রেজেন্টস্
Knowledge Partner
Fashion Partner
Wedding Partner
Banking Partner
Comfort Partner

ডাকাত তাড়িয়েছিলেন দেবী! কোথায় ঘটেছিল এই ঘটনা?

তেল চপচপে তাগড়া চেহারা, বাবরি চুল, কপালে রক্ত তিলক, হাতে শানিত তরবারি। হা…রে…রে…রে…বলে বলে চিৎকার দিয়ে খিড়কি দুয়ার ভাঙতে যাবে সবে, ওমনি আওয়াজ উঠল ঝম ঝম ঝম… ভারী মল পায়ে কে যেন হেঁটে আসে!

তমোঘ্ন নস্কর

শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৬:২৩
সংগৃহীত চিত্র।

সংগৃহীত চিত্র।

গভীর রাত্রি। পেঁচা পর্যন্ত গভীর নিদ্রায় আচ্ছন্ন। ভাদ্র শেষের এমন বর্ষণক্লান্ত রাতে সবাই ঘুমোবে, সেটাই তো স্বাভাবিক। ঘুম নেই কেবল ওদের চোখে। রণপায়ে বাদা-জলা কাঁপিয়ে ওরা এসে দাঁড়িয়েছে দালানের ঠিক পিছনে। এত ক্ষণ অন্ধকারে মিশে ছিল শরীর, এই বার দৃশ্যমান হল ওরা। তেল চপচপে তাগড়া চেহারা, বাবরি চুল, কপালে রক্ত তিলক, হাতে শানিত তরবারি। হা…রে…রে…রে…বলে বলে চিৎকার দিয়ে খিড়কি দুয়ার ভাঙতে যাবে সবে, ওমনি আওয়াজ উঠল ঝম ঝম ঝম… ভারী মল পায়ে কে যেন হেঁটে আসে!

সচকিত হয় ডাকাত দল। কী ও এই গভীর রাত্তিরে? চাপা গর্জন করে ওঠে ডাকাত সরদার, কে আসে এত রাতে? অমনি সহস্র বাতি যেন জ্বলে ওঠে একসঙ্গে। প্রকট হন তিনি। তাঁর চক্ষু রক্তাভ। দশ হাতে দশ আয়ুধ৷ ক্রোধে গৌরবর্ণা মুখমণ্ডল আরক্ত।

হাত থেকে তরবারি খসে পড়ে ডাকাতের। ‘মা’ বলে লুটিয়ে পড়ে তাঁর পদতলে। সেই দিন সেইখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায় ডাকাত দল। পরে তারা এসে গৃহকর্তার কাছে সব কিছু ব্যক্ত করে ক্ষমা চেয়ে যায়। যে বাড়ির চৌহদ্দি পাহারা দেন দেবী স্বয়ং, সেখানে ডাকাতি করে কার সাধ্য!

হ্যাঁ, ঘোষ পরিবারের আরাধ্যা দেবী দুর্গা এমনই জাগ্রত। তাঁকে ঘিরে ছড়িয়েছে অজস্র কিংবদন্তি এবং গাথা। পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা প্রাণপুরুষ গৌরমোহন ঘোষ ছিলেন সামান্য এক কৃষক। দেবীর কৃপা লাভ করে তিনি ধান-চালের ব্যবসায় প্রভূত উন্নতি করেন এবং জমিদারী লাভ করেন। তদানীন্তন সাহেবদের সঙ্গে রীতিমতো ব্যবসা করতেন গৌরমোহন। তাঁর বাড়ির পুজোয় বারমহলে সাহেবরা আসতেন। সেই থেকে পাণ্ডুয়ার ঘোষ বাড়ির আর এক নাম হয় সাহেববাড়ি।

***

কী আশ্চর্য! গোয়ালঘরের পাশে জবা গাছটার ডাল আলো করে ফুটে রয়েছে একটি তাজা পদ্মফুল! ভিড় জমে যায় চতুর্দিক থেকে।এমনও ঘটে! জয়জয়কার হয় দেবীর নামে...

এই কিংবদন্তি ঘোষ বাড়িরই কোনও এক দুর্গাপুজোর। সে বছর অষ্টমী-নবমীর সন্ধিপুজো কালে ১০৮টি পদ্মের মধ্যে একটি পদ্ম খুঁজে পাওয়া যায় না। এ দিকে পুজোর সময় হয়ে আসছে। গোটা গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে লোক। আশপাশের গ্রামেও ছড়িয়ে যায় মানুষ। কোথাও থেকে একটি পদ্ম আর উদ্ধার হয় না। সবাই পুজোর জন্য সমস্ত পদ্ম নিয়ে নিয়েছে। সেই সময়ে ঘোষ বাড়ির পুরোহিত স্বপ্নাদিষ্ট হন। তিনি বলেন, “গোয়াল ঘরের পাশে খুঁজে পাবে পদ্ম।” তার পরে এই ঘটনা। সেই থেকে দেবীর কথা চাউর হয়ে যায় চতুর্দিকে। দেবী এখানে জীবন্ত।

আজও পারিবারিক ঠাকুরদালানেই পুজো হয় পারিবারিক রীতি মেনে। কাঠামো পুজো হয় রাধাষ্টমীর দিন, চক্ষুদান হয় মহালয়ায়। এ বাড়িতে নবমীতে ছাগবলির রীতিও বর্তমান।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy