কোথায় এমন অদ্ভুত পুজো হয়?
গিরিজা ঠাকুর ঘুম থেকে যখন উঠলেন, তার চোখ থেকে অঝোর ধারায় জল ঝরছে। দেবী তাঁকে দেখা দিয়েছেন! তাঁর পুজো শুরু করতে বলেছেন!
সালটা উনিশো সাতাত্তর বা আটাত্তর। গিরিজানন্দ মহারাজ ঘুরতে ঘুরতে অবিভক্ত বর্ধমানের ধেনুয়া গ্রামে গৌরী কেদারনাথ ধামের কালীকৃষ্ণ মন্দিরে এসেছেন। সেখানেই রাত্রিবাস করছেন। নিয়মিত সন্ধ্যাহ্নিক সেরে দেবীর নাম জপ করে রাতে ঘুমিয়েছেন। স্বপ্নে দেখলেন এক অদ্ভুত মাতৃরূপ।
তাঁর আরাধ্যা দশভুজা দেবী দুর্গা স্বয়ং আবির্ভূত হয়েছেন স্বপ্নে। কিন্তু তাঁর পদতলে মহিষাসুর নেই। দৃষ্টিতে ক্রোধ নেই। বরং এক উৎফুল্ল, আহ্লাদী ভাব। তিনি দুই হাতে ধরে রেখেছেন দুই প্রাণের সখী জয়া এবং বিজয়ার হাত। দেবী বললেন, সেই রূপেই পুজো পেতে চান তিনি।
আরও পড়ুন:
সেই থেকে বর্ধমানের হীরাপুরের ধেনুয়া গ্রামের এই আশ্রমে এই রূপেই পূজা করা হয় দুর্গাকে। একচালা কাঠামোয় দশভুজার সঙ্গে অবস্থান করেন জয়া এবং বিজয়া। তবে দেবী সিংহের পিঠে বসে থাকেন।
এখানে কিন্তু শেষ নয়। আরও অদ্ভুত এই পুজোর বিধি। পুজো হয় এক দিনে। মহালয়ার দিন একইসঙ্গে ষষ্ঠীর বোধন সেরে সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী পূজা সমাপ্ত করে দশমীর পুজো সারা হয়। হ্যাঁ, চার দিনের পুজো পূর্ণ উপচারে, অর্থাৎ সকল নিয়ম মেনে একই দিনে করা হয়। আর মহালয়ার আগের দিন, অর্থাৎ চতুর্দশীতে করা হয় দেবী দক্ষিণাকালীর পুজো।
এমন অদ্ভুত পুজোর রীতি পশ্চিমবঙ্গে আর একটিও নেই । স্বপ্নাদেশের কারণে বিভিন্ন পরিবারে দেবী দুর্গার বিবিধ রূপভেদ রয়েছে এবং তা নিয়ে আলোচনাও হয় যথেষ্ট। কিন্তু এই বিশেষ পুজো-বিধিটি একেবারেই স্বতন্ত্র ও অদ্বিতীয়।
কৃতজ্ঞতা -
অসীম কুমার ঠাকুর, পূজারী
ডিডি বাংলা তথ্যসম্প্রচার
প্রীতম দে