বনেদি বাড়ির পুজো মানেই একচালার প্রতিমা। এমনকী আগেকার দিনে বারোয়ারি পুজোতেও একচালা প্রতিমা হত। ইদানীং অধিকাংশ জায়গায় পাঁচ চালার প্রতিমা দেখা যায়। একচালা ভেঙে প্রথম পাঁচ চালার প্রতিমা বানিয়েছিলেন যিনি, তিনি গোপেশ্বর পাল। এই কিংবদন্তি শিল্পীর ওয়ার্কশপ রয়েছে কলকাতাতেই। বলা ভাল, কুমোরটুলিতেই।
কী ভাবে একচালা ভেঙে পাঁচ চালা প্রতিমা তৈরি হল, সেই গল্প আনন্দবাজার ডট কমকে জানালেন গোপেশ্বর পালের নাতি সুরজিৎ পাল। একটি দুর্ঘটনার জেরেই এমনটা ঘটে বলে দাবি সুরজিতের। তিনি বলেন, ''১৯৩৮ সালের কথা। তখনকার দিনে তো আজকালকার মতো কাঠ, বাঁশ দিয়ে মণ্ডপ তৈরি হত না। হত হোগলা পাতা দিয়ে। সেই সময়ে কুমোরটুলি সর্বজনীন আর কুমোরটুলি পার্কের পুজো পাশাপাশি হত। সে বছর এই দুই ক্লাবের মধ্যে বাজি প্রতিযোগিতা চলছিল পঞ্চমীর দিনে। সেই সময়েই কুমোরটুলি পার্কের একটি বাজি কুমোরটুলি সর্বজনীনের মণ্ডপে এসে পড়ে। গোটা মণ্ডপ পুড়ে যায়।''
সেই সময়ে কুমোরটুলি সর্বজনীন দুর্গোৎসবের সভাপতি ছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। তিনি স্বয়ং এসে গোপেশ্বর পালকে বলেন, প্রতিমা বানিয়ে দেওয়ার জন্য। সুরজিতের কথায়, ''তার পরে দাদু কী ভাবে যেন ওই এক রাতেই মিরাকল ঘটান। একচালা ভেঙে পাঁচ চালার প্রতিমা গড়ে সেই রাতেই। সেই থেকেই এই পাঁচ চালার প্রতিমা চলে আসছে।''
আজও কুমোরটুলি গেলে কুমোরটুলি সর্বজনীনের ঠিক পাশের গলি দিয়ে একটু এগিয়ে চোখে পড়ে গোপেশ্বর পালের স্টুডিয়ো। বর্তমানে তাঁর দুই নাতি সেটির দায়িত্বে।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।