প্রেজেন্টস্
Knowledge Partner
Fashion Partner
Wedding Partner
Banking Partner
Comfort Partner

ঝাড়খণ্ডের ঝরিয়া রাজবাড়ির পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে এক রক্তাক্ত অধ্যায়ের গল্প!

সংগ্রাম সিংহ তখন দেবী দুর্গার স্তব করতে লাগলেন। তাঁর জপে তুষ্ট হয়ে দেবী তাঁকে দর্শন দিয়ে বললেন, ভক্তিভরে পোয়ার ভোগে তাঁর পুজো করতে।

তমোঘ্ন নস্কর

শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:০৯
নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব চিত্র

এক ছিল দুষ্টু সর্দার। তার অত্যাচারে ঝাড়খণ্ডের মানুষ অতিষ্ঠ। নিত্য দিন দেবীর কাছে তারা প্রার্থনা করত, তুমি আমাদের উদ্ধার কর।

ঘুরতে ঘুরতে সেই অঞ্চলে এসে পৌঁছলেন রাজপুত যুবক সংগ্রাম সিংহ। মানুষকে উদ্ধারে ব্রতী হলেন তিনি। স্বাভাবিক ভাবেই সেই সর্দারের সঙ্গে সংঘাত বাধল তাঁর। যুদ্ধের এক পর্যায়ে নিহত হলেন সর্দার। কিন্তু সেই সর্দারও দেবীর পুজো করত। তাই হাত থেকে তরবারি আর নামে না। ঝাড়া মারেন, আঘাত করেন সংগ্রাম, কিছুতেই পড়ে না তরবারি।

নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব চিত্র

সংগ্রাম সিংহ তখন দেবী দুর্গার স্তব করতে লাগলেন। তাঁর জপে তুষ্ট হয়ে দেবী তাঁকে দর্শন দিয়ে বললেন, ভক্তিভরে পোয়ার ভোগে তাঁর পুজো করতে। কারণ শরতে বিজয়ী হলে দেবী দুর্গার পুজো অবশ্যকর্তব্য। সংগ্রাম সিংহ মাথা নত করে মাতৃআদেশ মেনে নিলেন। হাত থেকে খসে পড়ল তরবারি।

সেই থেকে শুরু হল দুর্গা পুজো। সাড়ে তিনশো বছর আগে সংগ্রাম সিংহের হাত ধরে পত্তন হলো ঝরিয়া রাজ বংশের। আর সেই রাজবংশের আয়োজনে প্রতি বছর মহা আড়ম্বরে পালিত হতে লাগল শারদীয়া দুর্গাপুজো।

নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব চিত্র

কালিকাপুরাণোক্ত বিশেষ পুঁথিতে বর্ণিত পদ্ধতিতে আজও এই বাড়ির পুজো হয়। তার রীতিনীতি খানিক অদ্ভুত। সপ্তমীর দিন ভোরবেলা রাজ সরোবরে রানীর সাহচর্যে পরিবারের বধূরা নবপত্রিকাকে স্নান করান। তার পরে চলে যান পারিবারিক কুঠুরি ঘরে। সেখানে আছে প্রাচীন সেই তরবারি ও কুলদেবীর মূর্তি। দুর্গা পুজোর সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত পুজো পান তাঁরাও। এই সময়ে খোলা হয় সাড়ে চারশো বছরের প্রাচীন সীতাঘর। বংশের অন্যতম প্রতীক চিহ্ন এই ঘর সারা বছর বন্ধ থাকে। সুরম্য অট্টালিকা, দালান, প্রাসাদ মন্দির রাজাদের। কিন্তু সীতা ঘর আজও মাটির! মাটি ও খড়ের সেই কুঠুরি রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় সযত্নে।

দেবীর নির্দেশ মতো কুলবধূ নিজহস্তে চালের ভোগ বা পোয়া রেঁধে দেবীকে নিবেদন করেন। অতীতে নবমীতে একশো ছাগবলি হত। বর্তমানে তা অনেক কমে গিয়েছে। কিন্তু পুজোর সেই ভক্তি এবং আনন্দ একই রয়েছে। দশমীর দিন রাজবাড়ির নিজস্ব সরোবরেই দেবী ফিরে যান। এ ভাবেই ৩৫০ বছর ধরে সাড়ম্বরে পালিত হয়ে আসছে ঝাড়খণ্ডের ঝরিয়া রাজবাড়ির এই দুর্গা পুজো।

তথ্যসূত্র - বাংলার দেবদেবী, পূজাপার্বণ, উৎসব ও রীতিনীতি

দ্য টেলিগ্রাফ

আশীষ সিংহ

আবীর মুখার্জি

Goddess Durga
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy