ডেলফিক সংস্কৃতি শীর্ষ সম্মেলন
তিলোত্তমা কলকাতা। প্রাণের এই শহর সমগ্র দেশেই তাঁর সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের জন্য বিখ্যাত। সেই কলকাতাতেই পুজোর আগে হয়ে গেল ডেলফিক সংস্কৃতি শীর্ষ সম্মেলন। আর্ন্তজাতিক ডেলফিক কাউন্সিল এবং ডেলফিক কাউন্সিল পশ্চিমবঙ্গের উদ্যোগেই গত ১২ থেকে ১৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় এই সম্মেলন। মাস আর্ট, রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল ইন্ডিয়া যৌথভাবে উপস্থাপিত করে এই অনুষ্ঠান। উপস্থিত ছিল মাই কলকাতাও।
দুর্গা পুজোর এই সময়কে ব্যবহার করে বাংলা এবং বাঙালির সংস্কৃতিকে বিশ্বের দরবারে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছে দেওয়াই এই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য। বঙ্গ ডেলফিক বা ডেলফিক কাউন্সিল পশ্চিমবঙ্গের সভাপতি মেঘদূত রায় চৌধুরী জানিয়েছেন, “মানুষকে এক করতে এবং পরিবর্তন আনতে শিল্পের একটি বড় প্রভাব রয়েছে। আর দুর্গা পুজো হল সব থেকে বড় গণতান্ত্রিক শিল্প স্থাপন যা মানুষকে তাঁর আর্থ সামাজিক বৈষম্য থেকে বাইরে এনে এক করেছে। আমরা এখানে একতা, শিল্প এবং সংস্কৃতির এই শক্তিকেই উদযাপন করছি।”
তিন দিনের এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ৪৫টি দেশের প্রায় ২০০ জন প্রতিনিধি। কেবল সম্মেলন নয় তাঁরা সম্মেলনের পাশাপাশি ঘুরে দেখেন কলকাতার নাম করা কিছু পুজো প্যান্ডেলও। বাঙালি খানাপিনা থেকে রাজকুটির এবং ভবানীপুর হাউসের মতো আরও নানা জায়গাও ঘুরে দেখেন তাঁরা।
১১ তারিখে টেকনো ইন্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয় সেক্টর ৫ ক্যাম্পাসের ছাত্র ছাত্রীদের তৈরি পরিবেশ বান্ধব ফেব্রিকের মা দুর্গার মূর্তির উন্মোচনের মাধ্যমে শুভ সূচনা হয় সম্মেলনের। প্রথম দিনে টেকনো ইন্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা কিছু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনা করেন। তারপর মাননীয় অতিথিরা এই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা করেন। সেই আলোচনায় উঠে আসে সম্মেলনের উদ্দেশ্যকে বাস্তব রূপায়ণের দিকটিও। এবং তা কতটা কার্যকরি করা সম্ভব সেই নিয়েও আলোচনা হয়। শেষে অতিথিদের দুর্গা পুজো প্যান্ডেল ভ্রমণের মাধ্যমে শেষ হয় দিনটি।
দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় উঠে আসে উৎসবের আর্থিক দিকটি। এরই সঙ্গে বঙ্গ ডেলফিক এবং মাইন্ড্রুটের যৌথ উদ্যোগে আয়োজন করা মুখোশ তৈরির কর্মশালায় যোগদান করেন অতিথিরা। প্রখ্যাত ছৌ শিল্পী জগন্নাথ চৌধুরীর উপস্থিতিতে পরিবেশিত হয় পুরুলিয়ার ছৌ নাচ। এরপর আরেকটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন কুমোরটুলির মৃৎ শিল্পী চায়না পাল। দিনের শেষ হয় আবারও ঠাকুর দেখা দিয়েও। তবে এই বার উত্তর কলকাতা।
শেষ দিনে ডেলফিকের দৃষ্টিভঙ্গী সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া নিয়ে আলোচনা হয়। সব শেষে আর্ন্তজাতিক ডেলফিক কাউন্সিলের সম্পাদক রমেশ প্রসন্ন বলেন, “ডেলফিক আন্দোলন থেকে আপনি কী পেতে পারেন তা নয়, বরং আপনি কীভাবে এতে যোগ করতে পারেন সেটাই আসল। যখন সবাই একটি অভিন্ন লক্ষ্যের দিকে কাজ করে, আমরা সকলেই সুফল তার পেতে পারি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy