গ্রাম বাংলার বহু বনেদি বাড়িতে আজও ঐতিহ্য মেনে দুর্গাপুজো পালন করা হয়। বর্ধমান জেলা এই বিষয়ে রীতিমতো এগিয়ে আছে। এই জেলার রয়েছে সমৃদ্ধ ইতিহাস, সেখানেও বহু পুরনো রাজবাড়ি ও জমিদার বাড়ির পুজো আজও একই ভাবে হয়ে আসছে। যাঁরা পুজোয় বর্ধমানের এই বনেদি বাড়ির পুজো দেখতে আগ্রহী, তাঁদের জন্য রইল কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানের তালিকা।
১. গঙ্গাটিকুরি বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ি: পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের কাছে অবস্থিত গঙ্গাটিকুরি বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির পুজো খুবই বিখ্যাত। এই বাড়ির দেবীকে কন্যারূপে পুজো করা হয়। জনশ্রুতি আছে, এই বাড়ির দেবী খুবই জাগ্রত এবং মন থেকে ডাকলে সাড়া দেন। এই জমিদার বাড়ির দালান এবং পুজোর পুরনো রীতি আজও একই ভাবে অনুসরণ করা হয়।
২. কাঞ্চননগরের দাস বাড়ি: বর্ধমানের কাঞ্চননগরের দাস বাড়ির দুর্গাপুজো তার নিজস্ব ঐতিহ্যের জন্য পরিচিত। এই পুজোতে এখনও আদি প্রথা মেনে প্রতিমা তৈরি করা হয় এবং পুজো করা হয়। যাঁরা বর্ধমান শহরের ভিতরে পুরনো বাড়ির পুজো দেখতে চান, তাঁদের জন্য এটি একটি দারুণ জায়গা।
৩. আমদপুর রাজবাড়ি: বর্ধমান জেলার আমদপুর রাজবাড়ির দুর্গাপুজো প্রায় ৩৬৫ বছরের প্রাচীন। এই পুজো তার পুরনো রীতি এবং আভিজাত্যের জন্য সুপরিচিত। এটি গ্রাম বাংলার প্রাচীন পুজো হিসেবে অনেক দর্শনার্থীকে আকর্ষণ করে। এখানে এখন হোমস্টের ব্যবস্থাও হয়েছে। ফলে পুজো দেখার পাশাপাশি গিয়ে থাকাও সম্ভব।
৪. পাটুলির সাহা বাড়ি: পূর্বস্থলীর পাটুলিতে অবস্থিত সাহা বাড়ির পুজোও বর্ধমানের অন্যতম প্রাচীন ও আকর্ষণীয় পুজো। এই বাড়িতে একসময় ঝাড়বাতির সজ্জা এবং শোভাযাত্রা করে দেবীমূর্তির জন্য জল আনা হত। এখানে চালকুমড়ো, আখ এবং কলা বলি দেওয়া হয়।
বর্ধমান জেলার এই পুজোগুলি শুধুমাত্র ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং ইতিহাসের এক জীবন্ত দলিল। এগুলি ঘুরে দেখলে বাংলার প্রাচীন সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারবেন আপনি।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।