Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls 2021: যুবদের উপরে আরও ভরসার দাবি বামেদের

অভিমান ভুলে দলীয় প্রার্থীর জয় ছিনিয়ে আনতে তাই দেওয়াল লিখন থেকে প্রার্থীর হয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচার করতে  দিনরাত এক করেছেন সেই ডিওয়াইএফে এসএফআইয়ের ছেলেরাই।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বিদ্যুৎ মৈত্র
বহরমপুর শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২১ ০৬:০৩
Share: Save:

সংযুক্ত মোর্চার শর্ত অনুযায়ীই নওদার কংগ্রেস প্রার্থীকে মেনে নিয়েছে জেলা সিপিএম। মন থেকে না চাইলেও ওই বিধানসভার নেতা বিক্ষুব্ধ শমীক মণ্ডলকে তাঁদের বহিষ্কারও করতে হয়েছে পার্টি লাইন মেনে। জেলা কার্যালয়ে এক ঘরোয়া আলোচনায় সে কথা জানিয়ে এক প্রবীণ বাম নেতা শমীককে বহিষ্কারের পরমুহুর্তে বলেছিলেন “শমীকের এক ডাকে পাঁচ-সাতশো তরুণ ছেলেমেয়ে হাজির হয়ে যায়। নেতা হিসাবে শমীকের সে ক্ষমতা অস্বীকার করার উপায় নেই।” নির্দল প্রার্থী হিসাবে নওদার শ্যামনগরের প্রচারের ছবি তাঁর ফেসবুকে পেজে আপলোড করে সেই শমীকের দাবি “আমাদের প্রচারে পা মেলালো অসংখ্য নতুন ছেলে। এই জয়ের কাছে নির্বাচনে জয়-পরাজয় তুচ্ছ। নতুন ভোরের স্বপ্ন দেখানোই তো আমাদের ব্রত।” এই নতুন ছেলে মেয়ে যাঁরা একুশের রণক্ষেত্রে বাম প্রার্থী হিসাবে লড়াইয়ে নেমেছে তাঁদের ‘চোখা কথা’ নজর কেড়েছে রাজ্যবাসীর। প্রার্থী হিসাবে লড়াইয়ের সুযোগ না পেয়েও একইভাবে মুর্শিদাবাদ জেলার যুব নেতারা ঝড় তুলেছেন সংযুক্ত মোর্চার প্রচারে। যা এক ধাক্কায় পেছনে ফেলেছে জেলার পক্বকেশ কমরেডদের। যাদের সঙ্গে নীতির প্রশ্নে যুবদের ঠান্ডা লড়াই অব্যাহত একুশের ভোট উত্তাপেও।

তাই প্রার্থী তালিকায় কোনও ‘কমরেড’ এর নাম দেখতে না পেয়ে ‘এটাই স্বাভাবিক’ বলে মেনে নিয়েছিল জেলায় বামেদের ‘ইয়ং বিগ্রেড’। ভাগের ছয় আসনের মধ্যে আরএসপিকে বাদ দিলে পাঁচ আসনের একটি আসন শমসেরগঞ্জে শেষবেলায় শিকে ছিঁড়েছে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফের জেলা কমিটির সদস্য মোদাসের হোসেনের। সংযুক্ত মোর্চার জোটে তিনি আবার ওই রণক্ষেত্রে একা। তবুও ওটাই যুবদের সান্ত্বনা। অভিমান ভুলে দলীয় প্রার্থীর জয় ছিনিয়ে আনতে তাই দেওয়াল লিখন থেকে প্রার্থীর হয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচার করতে দিনরাত এক করেছেন সেই ডিওয়াইএফে এসএফআইয়ের ছেলেরাই। শুধু তাই নয় গোঁড়ামি কাটিয়ে দলের স্বার্থে যেখানে সংযুক্ত মোর্চার সঙ্গী কংগ্রেস, প্রার্থী দিয়েছে সেখানেও সাদা পতাকার অংশগ্রহণ নজর কেড়েছে বিরোধীদেরও।

এক প্রাক্তন সিপিএম নেতা ধরিয়ে দিচ্ছেন অন্যকথা। তিনি বলছেন, “ডিওয়াইএফ মুর্শিদাবাদ জেলা কমিটির কর্মীরা একুশের ভোট যুদ্ধে মাঠে নেমে লড়াইয়ের প্রস্তুতি শুরু করেছিল দেশজোড়া সেই লকডাউনের ছায়ায়।” তখন সংগঠনের কর্মীরা নিজেরাই রান্নার ভার নিয়ে তৈরি করেছিল “কমিউনিটি কিচেন” বা জনগণের রান্নাঘর। ভিন রাজ্য থেকে কাজ হারিয়ে লকডাউনে জেলায় ফিরে আসা পরিযায়ীদের পাশেও নিয়ম করে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁরা, প্রচার ছাড়াই।

এমনকি আনলক পর্ব শুরু হতেই নিয়ম মেনে ছোট ছোট করে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে তাঁরাই সচল রেখেছিল জেলার ব্লাড ব্যাঙ্ক। সেই সময় প্রায় নিশ্চুপ জেলায় তাদের এই কাজকর্মের প্রশংসা করেছিলেন বিরোধী তৃণমূল কিংবা জোট সঙ্গী কংগ্রেসের নেতারাও, দাবিও করলেন তিনি। তবে যুবদের এই কর্মসূচি মেনে নিতে না পেরে যুবদের সঙ্গে তর্কযুদ্ধে নেমেছিলেন সিপিএমের জেলা নেতারা সে খবরও আজ আর সত্যভবনের চার দেওয়ালে আটকে নেই। তেমনি যুবদেরকেই আবার একুশের ভোটে প্রার্থী হওয়ার উসকানিও দিয়েছিলেন কোনও কোনও পক্বকেশ নেতা, দাবি দু’একজন যুব নেতার।

সে কথায় বিশ্বাস করে ‘৩৪ বছরের দুর্নাম’ ঘুচিয়ে ফিরে আসবার অঙ্গীকারেও বুক বেঁধেছিলেন তাঁদেরই কেউ কেউ। কিন্তু সে পথে এবার হাঁটার সুযোগ মেলেনি তাঁদের। আমাদের মাঝখানে “আমরা ওরা” নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ করে বাম যুব সংগঠনের জেলা সম্পাদক ধ্রুবজ্যোতি সাহা বলেন, “আমাদের সামনে একটাই লক্ষ্য নির্বাচনে জিতে আসা। আর জিতে গেলে মুর্শিদাবাদ জেলার যুবকদের কাজ আমরাই তৈরি করবো। শূন্য পদেও নিয়োগ হবে, মিলিয়ে নেবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CPM West Bengal Assembly Election 2021
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE